সন্ত্রাস করে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করে রাজনীতিতে আছে এবং জন্মের পর থেকেই সন্ত্রাসের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতা টিকে থাকতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্বাচিত কার্যকরি কমিটির সদস্যরা উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে দেখা করার অনুমতি চাইলে উপাচার্য সময় দেন। সেই মোতাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা ফুলের তোড়া নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকার সঙ্গেই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে, এবং তাদেরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করে। প্রায় ১৫ জন আহত হয়। এর মধ্যে ৭ জন গতকালই ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। অন্যান্যরাও মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে, তাদের চিকিৎসা এখানে চলছে।’
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) কাকরাইল ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে আহত ছাত্রদলের নেতাদেরেক দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর মুন্সিগঞ্জ সমাবেশে আহত জাহাঙ্গীরকে ধানমন্ডি পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালে দেখতে যান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডাক্তার হারুন আল রশীদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ধরনের আক্রমণ এবং ছাত্রদলের নেতাদের আহত করার মধ্যে দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী দল। ছাত্রলীগ হচ্ছে তাদের পেটোয়া বাহিনী। জন্মের পর থেকেই আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস করে রাজনীতিতে আছে। সন্ত্রাসের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতা টিকে থাকতে চাইছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠায় জনগণের যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, এই আন্দোলনকে দমন করার জন্যই আজকে এইভাবে সবর্ত্র সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে ফেলেছে। আমরা প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখতে পাচ্ছি ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা একই কায়দায় ভিন্নমত পোষণকারীদের আক্রমণ করছে। নিজেদের মধ্যে যে বিরোধ আছে সেটা ইডেন কলেজে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে যা আমরা দেখেছি। এক কথায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। মূলত অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে, নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছি, নিন্দা জানাচ্ছি এবং এর সঙ্গে যারা জড়িত যাদের ছবি এসেছে তাদেরকে অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য এই সরকারকে দায় নিয়ে পদত্যাগ করার দাবি জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন থেকেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখন থেকেই মিথ্যা বানোয়াট প্রতারণার মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছে। তাদের প্রত্যেকটা বক্তব্যে মিথ্যাচার। প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে যে বক্তব্যে দিয়েছেন; সেখানেও তিনি বলেছেন দেশে চমৎকার নির্বাচন হয়। অথচ কী নির্বাচন এখানে হয়েছে সেটা সবাই জানে। গুম করার বিষয়ে বলেছেন এখানে গুমের কোনো কিছু নেই; গুম হয় কি না সেটা আমরা জানি। মূল বিষয়টা হচ্ছে; পুরোপুরিভাবে এই ধরনের রিপোর্টগুলোকে তারা ম্যানিপুলেট করে, যেখানে ডেথ সার্টিফিকেট বলা হয়েছে, দি ইনজুরি মেইড বাই গান শর্ট’।
এমএইচ/এমএমএ/