‘বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না অথচ তারা ভীত’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এই সরকার ও আওয়ামী লীগ জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক শক্তি। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান বাকশাল থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছেন, নেত্রী খালেদা জিয়া স্বৈরাচার সরকার ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। ১৫ বছর ধরে নানাভাবে বিএনপিকে দমন করতে পারেননি। এমন কোনো নেতা-কর্মী নাই যার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়নি। খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে তেমনিভাবে তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দেশে আসতে দিচ্ছে না। আমাদের স্পষ্ট কথা, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও দল ছেড়ে কেউ যায়নি, আওয়ামী লীগে যোগদান করেনি। তাই আপনাদের (আওয়ামী লীগ) বুঝতে হবে এত কিছু করেও যদি বিএনপিকে দুর্বল করতে না পারেন তাহলে আর চেষ্টা করবেন না।’
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী।
তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা প্রতিবাদ করতে এসেছি জ্বালানি তেল, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে। কারণ অনির্বাচিত এই সরকার কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। অথচ অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা লোডশেডিংকে মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বাস্তবতা হলো রাজধানীতেও লোডশেডিং, গ্রামাঞ্চলে তো ৮ ঘণ্টার অধিক সময় লোডশেডিং থাকছে। আর আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থকরা এসব অপকর্ম সমর্থন দিচ্ছেন। একই সঙ্গে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামী লীগ তাদের পেটুয়া বাহিনীকে লেলিয়ে দিচ্ছে, আক্রমণ করছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আপনারা কোনো দলের কর্মকর্তা-কর্মচারী নন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আপনাদের বেতন হয়। অনির্বাচিত সরকারকে অন্যায় সমর্থন করে আপনারা আপনাদের শপথ ভঙ্গ করছেন। অনেক হয়েছে আর নয়। আর একজন নেতা-কর্মীর উপর হামলা করবেন না। আপনারাও চিহ্নিত হচ্ছেন। আমরা এবং জনগণ আপনাদের চিহ্নিত করে রাখছি। জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। বিচার করা হবে।’
রাজপথে আন্দোলনে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি তাতে আপনারা এত ভীত হয়ে পুলিশ দিয়ে বাধা দিচ্ছেন কেন? কথায় কথায় বলেন আমরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করব? এখানে প্রশাসনের যারা আছেন তারাই বলেন আমরা সন্ত্রাস করছি কিনা?’
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে, রিজার্ভ কমে গেছে, দেশে ডলার সংকট, আমদানি-রপ্তানি কমে গেছে, শেয়ার বাজার ও ব্যাংক লুটপাট হয়েছে। দেশের এই দূর অবস্থা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। কারণ আমরা গণতন্ত্র চাই, দেশের মানুষ শান্তি চায়। গণতন্ত্র ও দেশকে রক্ষা করতে হবে। জনগণ ও দেশপ্রেমিক সব রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে এই সরকারকে হটাতে হবে। আগামীতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, আগে সংসদ বাতিল করতে হবে, নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। প্রশাসনকে সমান ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে হবে। অন্যথায় ধ্বংসের হাত থেকে দেশ রক্ষা করা যাবে না।’
ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা-কর্মীরা জেগে উঠেছে, এই সরকারের পতন অনিবার্য বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
এমএইচ/এসজি