৭৫ বছরে পা দিল ছাত্রলীগ
দেশের ইতিহাসের নানা বাঁকবদলে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগ। আজ ৪ জানুয়ারি সংগঠনটির ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৪৮ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ছাত্রলীগ।
বাঙালির স্বাধিকারের বিভিন্ন আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ–সর্বত্রই বিশেষ ভূমিকা ছিল ছাত্রলীগের। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সংগ্রামে যেমন ছাত্রলীগ নেতৃত্ব দিয়েছে, তেমনই সাম্প্রতিক কয়েক বছরে ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধও হয়েছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার দীর্ঘ রাজনৈতিক পরিক্রমায় ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিজয়, ৫৮’র আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬ দফার পক্ষে গণঅংশগ্রহণের মাধ্যমে মুক্তির সনদ হিসেবে এই দাবিকে প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে কারাগার থেকে মুক্ত করে আনা, ৭০’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভ এবং ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পরাধীন বাংলায় লাল-সবুজের পতাকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অংশ নেয় ছাত্রলীগ। ৯০-এর দশকে গণতান্ত্রিক ধারা পুনরুদ্ধারেও অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে।
৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনে পাঁচ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাতটায় ধানমন্ডিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং আটটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটবে ছাত্রলীগ। বেলা দুইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সেখান থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে।
এরপর বুধবার (৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা করবে ছাত্রলীগ। ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকার স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে পথশিশুদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ ও বেলা তিনটায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করবে ছাত্রলীগ। ৭ জানুয়ারি বেলা তিনটায় স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। সর্বশেষ ৮ জানুয়ারি বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে ছাত্রলীগ।
এদিকে, আজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ছাত্রসংগঠন জাসদ ছাত্রলীগেরও ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সমাবেশ ও শোভাযাত্রা করবে সংগঠনটি। জাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশিদুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে স্বাধীনতাপূর্ব ও স্বাধীনতা–উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন।
বাংলাদেশ জাসদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ-বিসিএলেরও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলা ১১টায় টিএসসির সড়ক দ্বীপে ছাত্র সমাবেশ করবে বিসিএল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক সংসদ ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান। সভাপতিত্ব করবেন বিসিএলের কেন্দ্রীয় সভাপতি গৌতম চন্দ্র শীল।
এসএ/