জয়-লেখকের কাজে অসন্তুষ্ট কাদের
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে অনুপ্রবেশ ঘটানো, কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন না করে প্রেস রিলিজ ভিত্তিক কমিটি গঠন এবং বিভিন্ন জেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারি ও নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়িয়ে পড়ায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এ জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে সতর্ক করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের যৌথ সভার আগে সাততলায় প্রথমে ছাত্রলীগের সভাপতিকে এবং পরে সভা শেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কড়া হুশিয়ারি দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এ সময় উপস্থিত, আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উপস্থিত একাধিক নেতা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জেলায় জেলায় কমিটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ ঘটেছে, প্রেস রিলিজে কমিটি দেওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। যেখানেই ঝামেলা সৃষ্টি হচ্ছে সেখানেই তোমরা (জয়-লেখক) কথা বলে ঠিক কর। ছাত্রলীগকে আর বিতর্কিত করা যাবে না। ছাত্রলীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
একাধিক ছাত্রলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে তার অফিস-রুম (সাততলায়-সাধারণ সম্পাদকের জন্য নির্ধারিত) বসেন। এ সময় কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সেখানে উপস্থিত হন।
রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ, বিভিন্ন জেলায় প্রেস রিলিজ কমিটি গঠন নিয়ে কেন বিতর্ক উঠছে, কেন ছাত্রলীগের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না কেন্দ্র তা জানতে চান ওবায়দুল কাদের।
এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। কেন্দ্রের কিছু নেতাও ঝামেলা করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিটিতে কেন বিতর্কিত লোক আসবে? দেখে শুনে কমিটি দিবে না? জেলায় জেলায় কোন্দল কেন তোমরা সামাল দিতে পারছ না? কথা বলে এসব ঠিক করতে পারো না? তোমার সেক্রেটারি (লেখক-তখন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌছাননি) কোথায়? দুজন মিলে জেলায় জেলায় কথা বলো। প্রয়োজনে ঢাকায় ডেকে আনো। বিষয়গুলো সমাধান করতে হবে। কারও বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তাদেরকে বাদ দাও। সংগঠন এভাবে চলতে পারে না।
ছাত্রলীগকে এক থাকার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেখানেই অভিযোগ উঠছে সেখানেই ব্যবস্থা নাও। যারা ঝামেলা করছে তাদেরকেও ছাড় দেওয়া যাবে না। ছাত্রলীগকে এই মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোেনা ঝামেলায় জড়ানোর যাবে না।
সম্মেলন নিয়ে তিনি বলেন, নেত্রী এসে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করবেন।
সূত্রটি আরও জানায়, আওয়ামী লীগের যৌথ সভা শেষে আবারও ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে ডাকেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এসময় তিনি সংগঠনে অনুপ্রবেশ নিয়ে চরম বিরক্তি প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। যেসব অভিযোগ উঠছে সেগুলো সঠিক তদন্ত, সংগঠন ঠিকঠাক মতো চালানোসহ নানা দিকনির্দেশনা দেন তিনি।
জানা যায়, ছাত্রলীগে কমিটি বাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। সে কারণে বিভিন্ন জায়গায় অনুপ্রবেশ ঘটছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ জেলায় কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে না দিয়ে কমিটি গঠন চলছে। ছাত্রলীগের লাগাম টানতে চায় আওয়ামী লীগ। সে জন্যই সংগঠনের দুই শীষ নেতাকে কড়া হুশিয়ারি দিলেন ওবায়দুল কাদের।
এসএম/এমএমএ/