‘ভারত সফরে সার্বভৌমত্ব কতটুকু বিক্রি করছেন দেখার বিষয়’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ক্ষমতায় থাকার জন্য সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফরে যা বলে এসেছেন সেই দেন-দরবার করতেই অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীও সফরে গিয়েছেন। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কতটুকু বিক্রি করছেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। জনগণ চেয়ে আছে ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী কী করছেন এবং কতটুকু দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে নিজের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন সেটা দেখতে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকার সমর্থন আদায় নাকি অন্য কিছু সেটা উনার সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তবে এতটুকু বলতে পারি- ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের প্রত্যাশিত কোনো বিষয় সুরাহা করতে পারেননি।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।
দেশে প্রতিটি খাদ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হচ্ছে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা কী অন্যায়- এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটা দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা হচ্ছে প্রতিবাদ করা, এর বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করা। বিএনপি এখন সেই কাজ করছে। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলে সরকার চণ্ডিমূর্তি নিয়ে আবির্ভূত হচ্ছে। দেশের মানুষকে ক্ষুধা, অনাহারের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে রেখে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে গেছেন। এখনো তিনি তিস্তা চুক্তি করতে পারেননি, পারেনি আমাদের অভিন্ন নদীর ন্যায্য পাওয়া আদায় করতে।’
তিনি বলেন, ‘যখন চারদিকে অন্ধকার। কথা বলার সুযোগ নেই। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে নেমে আসে নির্মম নিপীড়ন। গণতন্ত্রের ন্যূনতম পরিবেশ যদি কোথাও থাকে সেখানে সভা সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। অথচ বর্তমান অনির্বাচিত সরকার সেই গণতান্ত্রিক অধিকারকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। প্রতিদিন শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে, রক্ত ঝরানো হচ্ছে। হামলায় কারো হাত চলে যাচ্ছে, কারো চোখ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কেউ পঙ্গুত্ব বরণ করছে। গুলিতে জীবন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে অথচ হামলায় নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে আবার মামলা দেওয়া হচ্ছে। শত শত নেতা-কর্মী আজ বাড়িঘর ছাড়া, গ্রাম ছাড়া এলাকা ছাড়া। ঘটনা তারা ঘটাচ্ছে আর উল্টো তারাই বিবৃতি দিচ্ছেন, যুগে যুগে কর্তৃত্ববাদী সরকার এটাই করেছে। সরকারি প্রেস নোটের সঙ্গে প্রকৃত অবস্থার মিল থাকত না এখনো সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা তাই দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের সীমানায় মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল ছুড়ে ফেলা প্রসঙ্গে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার নয় বলেই এদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত দুর্বল ও নতজানু। না হলে সরকার কিংবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী একটা শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ করতে পারছে না। কারণ অন্যান্য দেশের সমর্থনে তাদের টিকে থাকতে হয়। সতিক্যার অর্থে নির্বাচিত সরকার থাকলে জোরালো ভাষায় বলা হতো আমার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরীন খানসহ মহিলাদলের নেতৃবৃন্দ।
এসএন