কথাবার্তায় সতর্ক হতে বললেন কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের আমি বলবো, প্রত্যেককে কথাবার্তায়, আচার আচরণে দায়িত্বশীল হতে হবে। এই সময়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন কোনো কথা বলা সমীচীন নয়, এ সময় ক্ষমতার দাপট দেখানো সমীচীন নয়। ঠাণ্ডা মাথায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে, এটাই আজকে আমাদের সবচেয়ে বড় মেসেজ।’
শনিবার (১৩ আগস্ট) ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহিলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সুরাইয়া আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী রহিমা আক্তার সাথী, কার্যকরী সভাপতি সামসুন্নাহার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারা বিশ্বে সংকটে, একটা নেতিবাচক প্রভাব আজকে বাংলাদেশ মোকাবেলা করছে। আমরা জানি, অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কস্ট অব লিভিং যেভাবে বেড়ে গেছে, মানুষ কষ্ট করছে এটা ঠিক। কিন্তু আমাদের সামনে কোনো উপায় ছিল না। সারা দুনিয়ায় যেভাবে জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ার পেছনে আন্তর্জাতিক সঙ্কট প্রভাব রেখেছে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিবেশগত সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য...আজকে রাইন নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, সেখানে জাহাজ চলতে পারছে না। ইতালির ১৫ লেকের অধিকাংশ শুকিয়ে গেছে। ফ্রান্সের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এখনো আগুন জ্বলছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, আমাদের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের কথার বাদ দিয়ে কেউ তো আজ আরামে নেই। বাংলাদেশের জনগণের কষ্ট হচ্ছে। চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। শেখ হাসিনার আজকে ঘুম নেই, আন্তরিকভাবে তিনি আপনাদের এই সংকট উত্তোরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।...মানুষকে স্বস্তি দিতে।’
বিএনপি মহাসচিব বেপরোয়া চালক
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশ আজকে সমস্যায় জর্জরিত। আর এটাকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেনি, আমেরিকার বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেন...এই দুনিয়ায় সংকট অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, আর বাংলাদেশে তারা (বিএনপি) সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে।’
এ সময় তিনি বিএনপির সমাবেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’তাহলে এখন স্বীকার করলেন যে পুলিশ বাধা দিচ্ছে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেপরোয়া ড্রাইভার এখন ফখরুল সাহেব, বেপরোয়া রাজনীতির চালক কখন যে কোথায় এক্সিডেন্ট ঘটায়!
ফখরুলকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘আগুন নিয়ে আসবেন না, বলে দিচ্ছি, সতর্ক করে দিচ্ছি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আপনাদের কেউ বাধা দিচ্ছে না। কিন্তু আগুন সন্ত্রাস নিয়ে যদি নামতে চান, মোকাবিলা করতে চান, তাহলে বলব, সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাকে প্রাইম টার্গেট করে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এরপরও যিনি কোকোর মৃত্যুর পর বেগম জিয়ার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন। শোকাহত মাকে সান্ত্বনা দিতে। তার পরেও ঘরের দরজা বন্ধ বাইরের দরজা বন্ধ, শেখ হাসিনার মুখের উপরে।’
তাহলে প্রতিপক্ষের মতো আচরণ আমরা করতে চেয়েছি? গণভবনে সংলাপ করেছি। কিন্তু তারা আমাদের শত্রুই ভেবেছে। শত্রুতাই করেছে বার বার, তারা শত্রুতা করছে।’
বঙ্গবন্ধুর হতাকাণ্ড নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনের বিশ্বাসঘাতক যে রাজনৈতিক শক্তি, সবার নাম আমরা জানি না। সবার ভূমিকা এখনো পরিষ্কার নয়। খুনিরা যখন বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আক্রমণ করে, তখন অনেককেই তিনি টেলিফোন করেছিলেন। তার ডাকে ছুটে এসেছিলেন শুধু কর্নেল জামিল। এই কর্নেল জামিলকেও সোবহানবাগ মসজিদের পাশে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পলিয়ে গেছে কীভাবে? কে পাঠিয়েছে থাইল্যান্ড, জেনারেল জিয়াউর রহমান। খুনিদের পুরস্কৃত করেছে জিয়াউর রহমান।’
এনএইচবি/এমএমএ/