আগস্টটা যাইতে দেন টের পাবেন, ফখরুলকে নানক
বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আমাদেরকে রাজপথের ভয় দেখান, রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটুন, নির্বাচনকে মোকাবিলা করেন। আগস্ট মাসটা যাইতে দেন তারপর টের পাবেন কত ধানে কত চাল।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে ‘ইতিহাস কথা কয়’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নানক বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামরিকতন্ত্রকে পদাঘাত করার জন্য এই আওয়ামী লীগ লড়াই করেছে, ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
সরকার পতনে বিএনপি নেতাদের হুমকি-ধামকির প্রসঙ্গে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই মির্জা ফখরুল সাহেব নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দেন, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে শব্দ বোমা ব্যবহার করে হুমকি-ধামকি দিয়ে এই আওয়ামী লীগকে ভয় দেখানো যাবে না। এই আওয়ামী লীগ আপনাদের প্রতিরোধ করেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঘাড় ধরে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে নিয়েছে। আর এই আওয়ামী লীগকে ভয় দেখান? নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দেন, নির্বাচনের পথে হাঁটুন। নির্বাচনকে মোকাবিলা করেন।
‘সেই নির্বাচন সংবিধান সম্মতভাবে হবে, সেই নির্বাচনে যদি আপনারা জয়লাভ করতে পারেন তাহলে আপনাদেরকে ফুলের মালা দিয়ে আমরা বরণ করে নেব। আপনাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করব, তাই তো ইতিহাস বলে মনে করেন তিনি।
নানক বলেন, শেখ হাসিনা যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, তিনিই একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি ৫ বছর পূর্ণ ক্ষমতায় থেকে শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ধারক-বাহক। আমাদের নেত্রী সত্যের ধারক-বাহক। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের ধারক-বাহক।
’কাজেই মির্জা ফখরুল সাহেব রাজপথের ভয় দেখান, রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। আগস্ট মাসটা যাইতে দেন তারপর টের পাবেন কত ধানে কত চাল বলে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের বিচার করেছেন, আর যারা এই হত্যাকাণ্ডে এই ষড়যন্ত্রের পিছনে কলকাঠি নেড়েছে, প্লট তৈরি করেছে, পূর্বের পরিস্থিতি করেছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে বাংলার মানুষের কাছে তাদেরকে চিহ্নিত করা এখন আমাদের নৈতিক এবং পবিত্র দায়িত্ব।
এই বাংলাদেশে আবার ওই হায়েনারা যে হায়েনারা ২১ শে আগস্ট, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। সেই হায়েনাদের আর বাংলাদেশের মানুষ চায় না। তাদের প্রত্যাখান করেছে। তাই রাজপথে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
একইসঙ্গে দেশের সকল প্রগতিশীল শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলার উদাত্ত আহ্বান জানান সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীদের আগামী দিনে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, তোমরা যদি মনে করে থাকো আমরা তোমাদের নেতাদের মতো পালিয়ে যাব তাহলে ভুল করবে। আমরা বীর সন্তান, আমরা জাতির পিতার আদর্শের সন্তান, আমরা আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে আছি, আমরা থাকব। আমরা আমৃত্যু যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে যেকোনো সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যেকোনো অপকর্ম, অগ্নিসন্ত্রাসী, বোমাবাজদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষের শান্তি সমৃদ্ধি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লড়াই করে যাব।
তিনি আরও বলেন, কোনো অপশক্তি যদি ভেবে থাকে গ্রেপ্তার করবে অন্যায়ভাবে, নিশ্চয়ই আমরা রাজপথে থেকে ওই অপশক্তিকে মোকাবিলা করে প্রমাণ করব জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশে কোনো অশুভ অগণতান্ত্রিক শক্তি বা যারাই স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করার জন্য কোনো ষড়যন্ত্র করবে তাদের সেই ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আমরা ভেঙে দেব।
তাদের বিষ দাঁত ভেঙে দিয়ে প্রমাণ করব জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাব, এটাই হবে আমাদের প্রত্যয় বলে জানান নাছিম।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
এসএম/এমএমএ/