বিএনপির ষড়যন্ত্র পুড়িয়ে ছারখার করা হবে: নানক
পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার বিএনপি নেতাদের এমন স্লোগানে পাল্টা আক্রমণ করে কথা বলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলেছেন, বাংলাদেশে আর পঁচাত্তর ফিরে আসবে না। দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপির ষড়যন্ত্রের আস্তানা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। শনিবার (৪ জুন) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা টি. আলী কলেজ মাঠে আয়োজিত কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতারা ষড়যন্ত্র করছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ওরা বলে-পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। কিন্তু বাংলাদেশে আর পঁচাত্তর ফিরে আসবে না। পনের আগস্ট ঘটতে দেওয়া হবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ষড়যন্ত্রের বিষ দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ষড়যন্তকারীরা ভেবেছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে, বন্দুকের জোরে সংবিধান পরিবর্তন করে দেশকে পাকিস্তান বানাবে। তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। আজও তারা সেই একই স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বাংলার মাটিতে তাদের সে সড়যন্ত্রের স্বপ্ন কখনই সফল হবে না। ষড়যন্ত্রের সকল আস্তানা জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, খুনি জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া এদেশের জনগণের উপর জগদ্দল পাথরের মত বসেছিল। বিএনপি বিদেশীদের সাথে প্রভুর সম্পর্ক করেছিল কিন্তু শেখ হাসিনা বিদেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আওয়ামী লীগৈর জৈষ্ঠ এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু ছয়দফা দাবী তুলে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিল। কিন্তু বিএনপি যুদ্ধোপরাধি জামাত নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদকে মন্ত্রী বানিয়ে রক্ত দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতার পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়ে স্বাধীনতা ও দেশকে কলঙ্কিত করেছিল।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সারাদেশে ঈদ উৎসব চলছে উল্লেখ্য করে নানক বলেন, পদ্মা সেতু উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঘরবাড়িগুলোতে সাজ-সজ্জা চলছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন মেহমানরা আসবে, ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করবে। এ উপলক্ষে ওই অঞ্চলের মানুষের মাঝে ঈদ উৎসব চলছে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টি হবে। সেতুটি নির্মাণের ফলে তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে।
সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মুখে লাগাম দেওয়ার কথা বললেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আপনারা রাজনীতি করেন আপত্তি নেই। কিন্তু যদি আবার ১৫ আগস্ট করবেন-এইসব কথা বলেন, আমরা আইনের মাধ্যমে আপনাদের দাঁত ভেঙে দেব। আইনের মাধ্যমে যে শাস্তি দেওয়া উচিত, সেই শাস্তি দেব। আমরা চাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণতন্ত্র রক্ষা করে সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড হোক। আপনারা ষড়যন্ত্র করে এখানে কিছু করতে পারবেন না।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আইনমন্ত্রী ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সংসদের হুইপ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য বি. এম. ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
এসএম/এএজেড