বিএনপির আন্দোলন দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি যেভাবে ঢাকা শহরে ২ কোটি মানুষের মধ্যে দুইশ’ মানুষের বিক্ষোভ করে এতেই বোঝা যায় তারা আসলে কতটুকু আন্দোলন করতে পারবে।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে ঈদের পরে বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্য মন্ত্রী একথা বলেন।
কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন।
এ ছাড়া প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. মাহফুজুল হক, ডিইউজের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ, কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সেবিকা রাণী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ড. হাছান বলেন, ‘আমরা চাই সরকারের যদি ভুলত্রুটি থাকে, সেগুলো বিএনপি তুলে ধরুক। তাদের আন্দোলন শুধুমাত্র তারেক রহমানের শাস্তি আর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে এটিই আমাদের কামনা। তারা জনগণের বিষয় নিয়ে কথা বলবে, সরকারের ভুলত্রুটি থাকলে সেগুলো তুলে ধরবে, সেটিই আমরা চাই।’
তিনি বলেন, ‘এই ঈদের পরে, আগামী ঈদের পরে, আন্দোলনের এ রকম দিনক্ষণ তারা আগেও দিয়েছে। এর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে বিএনপি আসলে আন্দোলন করতে পারবে কি না।’
নিউমার্কেটের ঘটনা নিয়ে বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ঘটনায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা যে ঘি ঢেলেছে, পুলিশের কাছে সেই তথ্য আছে। যে দুই দোকান কর্মচারী মধ্যে বচসা, সেই দুই দোকানের মালিক কিন্তু বিএনপি নেতা। সুতরাং এই বচসা ঘটানোর পেছনে দুরভিসন্ধি আছে কি না সেটি তো অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে। তবে নিউমার্কেটের ঘটনায় যারাই যুক্ত, তারা যে দলের বা যে মতেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
দৈনিক পত্রিকার প্রচার সংখ্যা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ইংরেজি পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা হালনাগাদ করে বাস্তবতার কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়েছে। বাংলা পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রেও আমরা সেটা খুব সহসা করে দেব। অনেক পত্রিকা যেগুলো আসলে ঠিকভাবে প্রকাশিত হয় না, সেগুলোর বিপুল প্রচার সংখ্যা দেখানো হয়েছে, এ সব অসংগতি দূর করে আমরা এগুলো ঠিক করছি।
মন্ত্রী জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, অষ্টম ওয়েজবোর্ড যারা বাস্তবায়ন করে নাই তাদেরকে আমরা সরকারের কোনো ক্রোড়পত্র দেব না এবং ভবিষ্যতে নবম ওয়েজবোর্ড যারা বাস্তবায়ন করবে না, সে ক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি নিয়েও ভাবছি।
এর আগে সাংবাদিক সহায়তা চেক বিতরণ পর্বে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহেই এই কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়েছে এবং আজকে এই ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি ভরসার জায়গা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট অত্যন্ত সুচারু এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে। ট্রাস্ট পরিচালনার সঙ্গে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ যুক্ত আছেন, যা উপকারভোগী নির্বাচনে সহায়ক হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ট্রাস্টের আওতায় অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষা সহায়তা নীতিমালাও চূড়ান্ত হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের পর থেকে আজকের এই আয়োজনসহ মোট ২২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ৮ হাজার ১৫৬ জন সাংবাদিক ও তার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০১২ সাল থেকে সাংবাদিক সহায়তা নীতির আওতায় ট্রাস্ট গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ৬২৩ জন সাংবাদিক ও তাদের পরিবারকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর করোনা সাহায্যের ১০ কোটি টাকা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৬ কোটি টাকা দেশব্যাপী সাংবাদিকদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে তথ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সভায় মিলিত হন এবং বাসসের বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা করেন। পর্ষদের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ. আ. ম. স. আরেফিন সিদ্দিক ও পরিচালকদের মধ্যে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এস এম মাহফুজুল হক, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব আবু হেনা মোস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক হারুন আল রশিদ, আইসিটি বিভাগের মহাপরিচালক ড. মুহাম্মদ মেহেদী হাসান, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু, দৈনিক সংবাদের সম্পাদক আলতামাশ কবীর, বাসসের নগর সম্পাদক মধু সূদন মন্ডল সভায় অংশ নেন।
এনএইচবি/এমএমএ/