ফুটপাত দখলমুক্ত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

রাজধানীর ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেয়রদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত রাখতে এবং পথচারীদের চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি কূটনৈতিক এলাকা বনানী, বারিধারার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার জন্য নির্দেশ দেন মেয়রকে।
রবিবার (০৬ মার্চ) ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১)’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন সরকার প্রধান।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিএনসিসির ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডস্থ কাঁচকুড়া হাইস্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা ইঞ্জিনিয়ার বা আর্কিটেক্ট, যখন তারা কোনো প্ল্যান করবেন অন্তত ফুটপাতটা যেন মানুষের হাঁটার যোগ্য থাকে এবং সেটা যেন দখল না হয় যেদিকে দৃষ্টি দিয়েই করতে হবে।
তিনি বলেন, আর কাউকে দোষ দেব না, আমাদের প্ল্যান করা সময়ই এই সর্বনাশটা করা হয়ে যায়। যেটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’।
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরটাকে সীমিত শক্তি দিয়েই যতদূর সম্ভব আধুনিকায়ন করা, সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করার আমরা চেষ্টা করছি। নতুন ইউনিয়নগুলো যুক্ত করার মাধ্যমে ১৮টি ওয়ার্ড করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে খেলার মাঠ, পাবলিক টয়লেটসহ নানা নাগরিক সুবিধা সৃষ্টির জন্য যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এই নতুন ঢাকা আরও সুন্দর হয়ে উঠবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কেননা এই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়ানও তার হাতেই সৃষ্টি এবং যখনই তাদের কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তারা তা সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন করছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় তারা জনগণের পাশে থেকে সেবা করে যাচ্ছেন।
তার সরকারের প্রচেষ্টায় দেশের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আজকে একটা সম্মানজনক জায়গায় আমরা আসতে পেরেছি। যেটা ধরে রেখেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। সঙ্গে আমাদের নাগরিক সুবিধাটাও বাড়াতে হবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম জাকারিয়া হোসেন প্রকল্পের ওপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
সাধারণ জনগণকে অধিকতর সেবা প্রদানের জন্য গত ৪ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুইটি অংশে বিভক্ত করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পরিণত করা হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত হরিরামপুর ইউনিয়ন এবং পূর্বাঞ্চলে উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, বেরাইদ, ডুমনি, সাঁতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়নের এলাকা সমূহের ১৮টি ওয়ার্ডকে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলমান প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে এই ১৮টি ওয়ার্ডে বসবাসরত জনসাধারণের নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। সেইসঙ্গে বিদ্যমান জলাবদ্ধতা দূরীভূত হবে এবং নাগরিক সেবার মান বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
ডিএনসিসির নতুন এই ওয়ার্ডগুলোর জন্য ২০২০ সালের ১৪ জুলাই ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রকল্প ‘একনেক’ অনুমোদন করে। তবে, করোনার কারণে কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছিল।
এসএম/আরএ/
