বাংলাদেশ পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে: কৃষিমন্ত্রী
পাটের বীজের জন্য অন্য কোনো দেশের উপর নির্ভরশীল না থেকে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে এবং ৩ বছর পরে ভারত থেকে পাটবীজ আর আমদানি করতে হবে না। সে লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে।’
রবিবার (৬ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাট দিবসের আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। সভাপতিত্ব করেন বস্ত্র ও পাট সচিব মো.আব্দুর রউফ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আতাউর রহমান।
এ অনুষ্ঠানে পাট উৎপাদন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন অংশীজনের প্রতিনিধিরা পাট ও পাটশিল্পের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১১জনকে জাতীয় পাট পুরস্কার প্রদান করা হয়।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারত তাদের অনুর্বর জমিতে পাটবীজ চাষ করে কম দামে আমাদের দেশে রপ্তানি করে থাকে। আমাদের কৃষকেরা অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাটবীজ চাষে খুব বেশি আগ্রহী নয়। তবে ইতোমধ্যে আমাদের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা পাটের উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে, যা ভারতের জাতের চেয়ে অনেক ভালো। কৃষকদের মাঝে এর চাষ জনপ্রিয় করতে কাজ চলছে।
আব্দুর রাজ্জাক ভারতকে পাটের ক্ষেত্রে এন্টি-ডাম্পিং না করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকবার ভারতকে বলেছি এন্টি ডাম্পিং না করতে কিন্তু তারা কথা শুনে না। তবে বর্তমান সরকার অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পাটের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে কাজ করছে। যাতে করে ভারতের সাথে প্রতিযোগিতা করে আমরা টিকে থাকতে পারি। সোনালী আঁশের সুদিন আবার ফিরিয়ে আনতে পারি।’
ড. রাজ্জাক আরও বলেন, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাটপণ্যের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। পাটের সম্ভাবনার সাথে শাকসবজি ও ফলমূল রপ্তানির সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারলে, বছরে কৃষিপণ্যের রপ্তানি আয় শিগগির ১০ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে দেশের পাট ও পাটশিল্প ধ্বংসের মুখে ছিল।বিএনপি ও জোট সরকারের আমলে দেশের পাটশিল্প ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে পাটের হারানো সুদিন প্রায় ফিরিয়ে এনেছে। ২০০৫-০৬ সালে পাটের উৎপাদন ছিল মাত্র ১০ লক্ষ টন। বর্তমানে পাটের উৎপাদন প্রায় ১৭ লক্ষ টন, ১২ বছরে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
এনএইচবি/এমএমএ/