ঢাকায় ইউক্রেনের নাগরিকদের মানববন্ধন
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশে বাস করা ইউক্রেনিয়ান নাগরিকেরা।
তারা বলছেন, যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তারা ইউক্রেনে ফিরতে পারছেন না। ইউক্রেনে থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বিপদে আছেন। কাউকে কাউকে লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (২ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের পশ্চিমগেট সংলগ্ন পুলিশবক্সের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এসব দাবি বলেন।
‘নো ওয়ার, পিস ইন ইউক্রেন’ নামক ব্যানার নিয়ে এ মানববন্ধন করেন বাংলাদেশে বাস করা ইউক্রেনের নাগরিক ও ইউক্রেনে থাকা বাংলাদেশিদের স্বজনেরা।
মানববন্ধনে কথা হয় ৪৩ বছর বয়সী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, তিনি গত ২৪ বছর ধরে ইউক্রেনে থাকেন। তিনি এখন ইউক্রেনের নাগরিক। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে বেড়াতে আসেন। তার ২ মার্চে ইউক্রেনে ফেরার ফ্লাইট ছিল।
ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে সাইফুল ইসলাম যেতে পারেননি জানিয়ে বলেন,
‘আমার স্ত্রী ও বাচ্চা ইউক্রেনে আছেন। ইউক্রেনের অবস্থা খুবই খারাপ। পরিবারের সদস্যরা বাসা থেকে বের হতে পারছেন না।’
গত ৩০ বছর ধরে ইউক্রেনে থাকছেন ইসলাম গাউছুল শাহেদ। তিনি সেখানে ব্যবসা করেন। ১৯ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশের আসেন। ১০ মার্চে তার ইউক্রেনে ফেরার কথা, টিকিটও কাটা ছিলো। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে তিনি যেতে পারবেন না। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই ইউক্রেনিয়ান নাগরিকের স্ত্রী ও মেয়ে ইউক্রেনেই আছেন।
গাউছুল বলেন,আমার পরিবার নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তাঁরা খুব ভয়ে দিন কাটাচ্ছে।'
গাউছুল জানান, ‘তার পরিবার বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। ইউক্রেনের রাজধানীতে রাস্তা-ঘাটে বোমা বর্ষণ হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান ইউক্রেনের যুদ্ধ থামাতে তারা যেন দ্রুত পদক্ষেপ নেন।’
মানবন্ধনে কথা হয় আকসানা লাপিকবার সঙ্গে। ইউক্রেনিয়ান এ নাগরিক বৈবাহিক সূত্রে গত ২০ বছর ধরে ঢাকাতে বাস করছেন। ইউক্রেনে তার মা, ছোটবোন ও ছোট বোনের সন্তান থাকে।
লাপিকবা বলেন, ‘আমার মা ও বোনের সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা বলি। তবে তারা অনেক কষ্টের মধ্যে আছেন। আমার মায়ের বয়স ৭২ বছর। তিনি বাসা থেকে বের হতে ভয় পান। সুপারমার্কেটে কেনা-কাটা করতে যেতে পারেন না। খাওয়ার ব্যবস্থা কম হচ্ছে, অভাব আছে।’
আকসানা লাপিকবা বলেন, ‘ইউক্রেনে যা হচ্ছে, কোনো সুস্থ মানুষ এটা মেনে নিতে পারবে না। ইউক্রেনিয়ান নাগরিক, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমার নাগরিকের জন্য নিরাপত্তা চাই। যে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় যুদ্ধ ছাড়াই।’
আরইউ/এমএমএ/