বাংলাদেশের প্রশংসা করলেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভাপতি
জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ, তাৎপর্যপূর্ণ অবদান ও ফলপ্রসূ নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি (পিজিএ) আব্দুল্লা শাহিদ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক সভায় আলোচনাকালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের নেতৃত্বে বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এ প্রশংসা করেন তিনি।
পিজিএ বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ ইউএন উইমেন নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি, পিসবিল্ডিং কমিশনের চেয়ার, আইএমআরএফ-এর কো-ফ্যাসিলেটেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। যা এর সামর্থ্য ও নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ।
সভার শুরুতে ‘এসডিজি বাস্তবায়ন রিভিউ’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট আয়োজন ও সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের আওতাধীন উন্নয়নশীল দেশসমূহের অর্থ, পররাষ্ট্র ও উন্নয়ন মন্ত্রীদের সমন্বয়ে একটি ফোরাম প্রতিষ্ঠা- এ দুটি প্রস্তাব সাধারণ পরিষদের সভাপতির নিকট পেশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এসডিজির বাস্তবায়ন, বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তহবিল ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। অধিকাংশ তহবিল কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবহৃত হচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন তিনি। প্রস্তাবিত উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টটির আয়োজন করা হলে তা এসডিজির বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা এবং তহবিল ঘাটতি মোকাবিলায় ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে মর্মে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনের (এসএসসি) আওতায় মন্ত্রী পর্যায়ের উক্ত ফোরাম এসএসসির বিষয়ভিত্তিক আলোচনাকে আরও এগিয়ে নিতে একটি চমৎকার প্লাটফর্ম তৈরি করবে মর্মে মন্তব্য করেন তিনি। সাধারণ পরিষদের সভাপতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রস্তাব দুটিকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে কোভিড-এর মধ্যেও বাংলাদেশের জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মর্মে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া তিনি কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন এবং কোভিড-এর টিকাকে ‘সর্বজনীন বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসাবে ঘোষণার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতির কথাও উল্লেখ করেন। সাধারণ পরিষদের সভাপতি জিডিপির প্রবৃদ্ধি, কোভিড মোকাবিলাসহ বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
রোহিঙ্গা সঙ্কট বিষয়ক আলোচনাকালে রোহিঙ্গা শিশুদের নিজ ভাষায় শিক্ষাদান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোভিড ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার যেসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে তা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন পর্যন্ত কোনো রোহিঙ্গা নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত যায়নি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাধারণ পরিষদের সভাপতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তাতে সম্মতি প্রদান করেন।
উল্লেখ্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী বর্তমানে সরকারি সফরে নিউইয়র্ক অবস্থান করছেন। তার জাতিসংঘে ‘গ্যালভানাইজিং মোমেন্টাম ফর ইউনিভার্সাল ভ্যাকসিনেশন’ বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ এবং মহীসোপান সীমা বিষয়ক কমিশনে (সিএলসিএস) বাংলাদেশের এ সংক্রান্ত সংশোধিত তথ্যাদি উপস্থাপন করার কথা রয়েছে।
টিটি/