সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই নীলক্ষেতে সব পুড়ে শেষ

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, চোখের সামনে আগুনের সূত্রপাত হয় কিন্তু এ আগুন নিভাতে তারা অক্ষম ছিল। পরে ফায়ার সার্ভিসকে জানালে ২০ মিনিট পর সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, মঙ্গলবার নীলক্ষেত বন্ধ থাকে কিন্তু রাস্তার পাশের দোকান থাকায় কিছুটা যানজট লাগতে পারে, তবে তুলনামূলক সেটি অনেক কম। ফায়ার সার্ভিস যদি সঠিক সময়ে নীলক্ষেতে অবস্থান করতে পারত তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হতো। তারা মনে করছেন এ আগুনের দৃশ্য ছিল ভয়াবহ। চোখের সামনে পুড়ে গিয়েছে অনেকের স্বপ্ন।

ব্যবসায়ীদের দাবি, সামান্য পরিমাণ আগুন দেখে আমরা ফায়ার সার্ভিসকে জানাই, ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কাছাকাছি থাকার পরও ২০ মিনিট দেরিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এর মধ্যেই এ আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করে ছড়িয়ে পড়ে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, ফায়ার সার্ভিস সঠিক সময়ে আসলে তাহলে আর্থিকভাবে একটু কম ক্ষতিগ্রস্ত হতো।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রথমে আগুন ছোট ছিল এরপর ভয়াবহভাবে মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রতিটা ব্যবসায়ী। কম করে হলেও ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের দাবি।

ব্যবসায়ীরা বলছে, এ ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় নীলক্ষেতে ইসলামিয়া মার্কেটের ২৮ টা দোকান ও শাহজালাল মার্কেটের ৪১ টি দোকান মোট ৬৯ টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস বলছে, কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয় সে ব্যাপারে এখন পুরোপুরিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত না করলেও একাধিক বই ব্যবসায়ী বলছে, বিদ্যুতের তার মেরামত করতে গিয়ে শর্ট সার্কিট থেকে এ আগুন লাগে।

মার্কেটের সামনে অস্থায়ী ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে তারা আগুন ছোট মনে করে নিজেরা নেভাতে যায় পরে নিভাতে অক্ষম হয়। এরপর তারা ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করে। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস আগুন লাগার ২০ মিনিট পরে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।

ফায়ার সার্ভিসের দাবি, পলাশী মোড়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি স্টেশন ও আশেপাশে কয়েকটি স্টেশন থাকলেও যানজটের কারণে তারা সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারেনি। যার কারণে এ আগুনের ভয়াবহতার শিকার হয় বই ব্যবসায়ীরা।

গতকাল মঙ্গলবার ৭ টা ৪৩ মিনিটে বইয়ের মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সর্বশেষ ১০টি ইউনিট কাজ করে। ফায়ার সার্ভিসের এক ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ৮ টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয় এমন প্রশ্নের জবাবে চারুকলা স্টেশনারি বই কর্নার এর বিক্রেতা শুভ আহমেদ বলেন, আমাদের দোকান থেকে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে এরপর মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

একই মার্কেটে পাশের দোকানের বই বিক্রেতা নাইম হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখতে পেলাম হঠাৎ বিদ্যুতের তারে দাও দাও করে আগুন এরপর দৌড় ঘটনাস্থল থেকে রাস্তার পাশে চলে যাই। ৫ থেকে ১০ মিনিটের ভিতরে পুরো মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে অনেক সময় কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।

এদিকে বই বিক্রেতা জাহিদ আলম অভিযোগ করে বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে অনেক পরে পৌঁছায়। যদি সঠিক সময়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে পারত তাহলে চোখের সামনে ৬৯ টি দোকান পুড়ে ছারখার হতো না।

তপন বুক হাউজ ও মেডিকেল এন্ড স্টেশনারির বই বিক্রেতা আলভী মোস্তফা বলেন, আমাদের দোকান মালিকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হলো। দোকান না করলে হয়তো আমাদের এ মাসের বেতন বন্ধ থাকবে।

দেওয়ান বুক লাইব্রেরির কর্মচারী বেলাল বলেন, হঠাৎ দাও দাও করে আগুনে সব শেষ হয়ে গেল। কম করে হলেও দোকানের ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার বই পুড়ে গেছে।

চারুকলা বই কর্নারের স্বপন বলেন, আগুন লাগতে দেরি হলো কিন্তু পুড়তে দেরি হলো না চোখের সামনে সব পুড়ে গেল।

ইভা বুক হাউজের শক্তি বলেন, ‘বিদ্যুৎ এর তারে থেকে আগুন লাগে। তখন আমি মার্কেটের মধ্যে। তাড়াতাড়ি সবাই দৌড়ে রাস্তার পাশে চলে গেলাম। এ এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

ফেসবুক কর্নার ও ফ্রেন্ডস বুক কর্নারের পাটনার ব্যবসায়ী সৌরভ বলেন, এবার আগুনে শেষ হয়ে গেলাম। বাড়ি থেকে জমি বন্ধক রেখে ব্যবসা শুরু করেছি অবশেষে আগুনে পুড়ে সব ছারখার হলো।

বই ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রথমে চারুকলা স্টেশনারিতে আগুন লাগে মুহূর্তের মধ্যে সমস্ত বৈদ্যুতিক তারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

ফারহান বুকসের একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, নিচতলা থেকে দোতলা একটা দোকানে ওয়েল্ডিং এর কাজ চলছিল। সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। তিনি আরও বলেন, আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসের মাত্র একটা ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। ৫ মিনিটেই তাদের পানি শেষ হয়ে যায়। এরপর বাকি ইউনিটগুলো আসতে ২০-৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগে। তারা যদি আরেকটু আগে আসতো তাহলে হয়তো ক্ষতির পরিমান কম হতো।

নিউ বুকস গার্ডেনের মালিকের মা জাহানারা বেগম বলেন, দুই দোকানে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার বই ছিল। পরশু দিন ও ৫ লাখ টাকার বই তুলেছে। কিস্তির টাকা নিয়ে বইগুলো উঠানো হয়। আগুনে সব শেষ করে দিল আমার পোলাটার সর্বনাশ হলো।

এ ছাড়াও একাধিক বইয়ের দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের সবচেয়ে পুরনো বইয়ের দোকান এটি। মঙ্গলবার ছুটির দিন থাকায় ভেতরে কেউ ছিলনা। ভেতরে থাকলে হয়তোবা দোকানের কর্মচারীরা মারাও যেত।

দেখা যায়, গতকাল রাতে নীলক্ষেত বই মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ও ৯৬ ফায়ার কর্মী কাজ করেছে। এ ছাড়াও নিউমার্কেট থানার পুলিশ, র‍্যাব ও স্কাউট কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় কথা হয় নীলক্ষেত থানার এ এস আই জিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, বই ব্যবসায়ীরা এক একজন এক এক রকমের কথা বলছেন। আমরা তদন্ত করছি। এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি তারা বলছে, শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় এরপর মার্কেটের সব জায়গায় ছড়িয়ে যায়।

এদিকে নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেটের আগুন লাগার সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, এখনও আগুনের ক্ষতিগ্রস্তের পরিমাণ জানা যায়নি এবং কোনো হতাহতের খবর ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যথাযথ সময়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি সূত্র জানায়, আগুন লাগার খবর পেয়ে তারা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে জানতে পারে আগুন লাগার ১০ মিনিট পরে স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। এ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে ফায়ার সার্ভিস, তদন্ত শেষে তারা আরও ভালোভাবে বলতে পারবে বলে জানান।

নীলক্ষেত বই মার্কেটে কীভাবে আগুনের ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন এন্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান জানান, গতকাল বই মার্কেটে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটা ইউনিট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

বই ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ফায়ার সার্ভিস একটু দেরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকে। এ ঘটনাটি ও ফায়ার সার্ভিস যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে, তবে হয়তো রাস্তায় যানজট থাকার কারণে এমনটি হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আগুনে দ্বিতীয় তলার দোকান গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও নিচতলা তেমন কোন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। দ্বিতীয় তলায় মার্কেটটির কোনো একটি দোকানে কেউ ইলেকট্রিক লাইন অন করে চলে গিয়েছিল। ‌সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত বলা যাবে।

কেএম/এমএমএ/এএস

Header Ad

রাজধানীর মোল্লা কলেজে হামলা-ভাঙচুর, শিক্ষার্থীদের দখলে সড়ক

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) হামলা, ভাঙচুর করছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় সৃষ্ট পরিস্থিতির জেরে এ ঘটনা ঘটে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে লাঠিসোঁটা নিয়ে জড়ো হতে থাকে। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজারের দিকে অগ্রসর হয় সাত কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জড়ো হতে থাকে।

পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কিছু শিক্ষার্থী ওই কলেজে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে হামলা, ভাঙচুর এবং ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় রাস্তার বিপরীত পাশে মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (বেলা সাড়ে ১২টা) দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলছে।

এদিকে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে তেমন কোনো ভূমিকায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষজনের।

সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকালকে ডিএমআরসির নেতৃত্ব ঢাকার বেশকয়েকটি কলেজ একত্রিত হয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় সোহরাওয়ার্দী কলেজের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে। গতকাল রাত থেকে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম এ ঘটনার সুষ্ঠু একটা সমাধান করার জন্য। কিন্তু আমাদের দেওয়া সময়ের ভেতর তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। তাই আমরা আজ একত্রিত হয়েছি। আমরা শুনেছি মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হচ্ছে আমরা এখন সেখানে যাবো। আমাদের সঙ্গে রায়সাহেব বাজারে ও যাত্রাবাড়ী সাত কলেজের অন্য শিক্ষার্থীরা যুক্ত হবে।

এদিকে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার জন্য বারবার মাইকিং করে নিষেধ করেন।

এসময় তিনি বলেন, তোমরা শান্ত হও, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি। গতকালকের ঘটনায় অনুপ্রবেশকারীরা ছিল, আজও এখানে অনুপ্রবেশকারী আছে বলে মনে হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমিটি আসবে, সোহরাওয়ার্দী কলেজকে বলতে চাই গতকালকের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার হবে।

Header Ad

ওয়ানডে সিরিজেও অনিশ্চিত মুশফিক

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম আঙুলের চোটে পড়ে ইতোমধ্যেই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে পরেছেন। টেস্ট সিরিজে না থাকলেও আশা ছিল ওয়ানডে সিরিজে ফিরবেন মুশফিক। তবে সেই আশাতেও এবার দেখা দিয়েছে শঙ্কা। বিসিবির নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে যে চোট পুরোপুরি না সারায় মুশফিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন ওয়ানডে সিরিজে মাঠে নামতে না পারার সম্ভাবনাই বেশি।

আঙুলের ইনজুরির কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ থেকেই বাইরে ছিলেন মুশফিক। তখনই ধারণা করা হয়েছিল যে তার মাঠে ফেরা কিছুটা সময় লাগবে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে এনসিএল টি-টোয়েন্টি দিয়ে মুশফিক মাঠে ফিরতে পারেন বলে জানা গেছে।

এদিকে কুঁচকির চোটের কারণে টেস্ট সিরিজ মিস করা নাজমুল হোসেন শান্তর অবস্থা অনেকটাই উন্নতির দিকে। বিসিবি সূত্র বলছে, তার চোট নিয়ে করা এমআরআই রিপোর্ট সন্তোষজনক হলে ওয়ানডে সিরিজে ফিরতে পারেন তিনি।

এছাড়া গুঞ্জন রয়েছে, আবুধাবি টি-টেন লিগ শেষ করে ওয়ানডে দলে যোগ দিতে পারেন সাকিব আল হাসান। তবে বিসিবি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেওয়ায় এটি এখনো অনিশ্চিত।

বিসিবি চলতি সপ্তাহেই ওয়ানডে দল ঘোষণা করতে পারে বলে জানা গেছে। একদিকে মুশফিকের অনুপস্থিতি, অন্যদিকে সাকিব ও শান্তর সম্ভাব্য ফেরা—এসব মিলিয়ে দলের গঠন নিয়ে আলোচনা চলছে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে কিপিং করার সময় চোট পান মুশফিক। এরপর থেকেই তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হচ্ছে। টেস্ট সিরিজে ফেরার আশাও ব্যর্থ হওয়ার পর ওয়ানডে সিরিজ দিয়েও ফেরা সম্ভব হলো না। এখন অপেক্ষা মুশফিককে চোটমুক্ত হয়ে ফের মাঠে দেখার।

Header Ad

জানুয়ারিতে আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-ঘোষিত এক দফায় ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি তোলা হয়েছিল। গণ-অভ্যুত্থানের সফলতার পর নিজেরাই এ দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে আরও একধাপ এগিয়ে এবার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধীরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলামকে নেতৃত্বে রেখে দল গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতেই আলোচিত নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসতে পারে।

এখনও দলের নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দলটি তারুণ্যনির্ভর হচ্ছে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিভিন্ন জেলা সফর করেছেন। ওই সময় নতুন দল গঠনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিচালনার জন্য গঠিত এই প্ল্যাটফর্মকে সাংগঠনিক রূপ দিতে গঠন করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। একই সঙ্গে গঠন করা হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কাজ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি। দল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েও কিছুদিন ধরে কাজ করছেন। তারা মনে করেন, বিপ্লব-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে মানুষ নতুন রাজনৈতিক শক্তিকে দেখতে চায়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি দায়িত্বশীল সূত্র সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত জানিয়েছে, জানুয়ারিকে সামনে রেখেই তাদের প্রস্তুতি চলছে। জানুয়ারিতে তারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করতে পারেন। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নেতৃত্বে রেখেই তারা দল গঠনের চিন্তা করছেন।

সূত্রটি আরও বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের উদ্যোগেই নতুন এই দল হবে। নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা এবং বাইরের বিভিন্ন দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন হতে পারে এই দল। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও চলছে বলে জানা গেছে।

নতুন দল গঠন করলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকবে। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে এই দুটি সংগঠন।

নাম প্রকাশ না করে জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষপর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘নাহিদ ইসলামকে সামনে রেখে আমরা জানুয়ারিতে দল গঠনের বিষয়ে ভাবছি। সে ক্ষেত্রে তাকে দল গঠনের আগে উপদেষ্টার পদ ছাড়তে হবে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে আমরা আশা করি, সেটি তিনি করবেন। নাগরিক কমিটি ঢাকাসহ দেশের সব থানাপর্যায়ে কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলাপর্যায়ে কমিটি করার কাজ করছে। জানুয়ারির মধ্যেই সেটি সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষপর্যায়ের আরেক নেতা প্রায় একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করতে চাই। দেশের জনগণ তরুণ নেতৃত্বকেই বেছে নেবেন। তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে নাহিদ ইসলামকেই আমাদের যোগ্য মনে হয়েছে।’

জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা শুরু হয় গত সেপ্টেম্বরে। ৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও ‘নতুন বাংলাদেশের’ রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির ৫৬ সদস্যের একটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করে।

প্রায় একই সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় সফর শুরু করেন। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫টি জেলায় তারা কমিটি ঘোষণা করেছেন। বাকি জেলাগুলোও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটি ঢাকায় ২০টির বেশি থানাপর্যায়ের কমিটি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলার কমিটিও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গেছে। এই কমিটিগুলো নতুন দল গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘জানুয়ারির আগে আগে আমরা সব জেলার কমিটি ঘোষণা করব।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, রাজনৈতিক দলগুলোর গতানুগতিক ধারার যে রাজনীতি, সেটা থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য এবং বাংলাদেশের জনগণের অধিকার রক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন, শক্তিশালী করা একই সঙ্গে মানুষের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলাম রাইজিং কর্মসূচির অংশ হিসেবে। ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার ২০টি জেলায় কমিটি ঘোষণা করেছি এবং অন্য জেলাগুলোর অনেক থানাপর্যায়ের কমিটি প্রস্তুত আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, সে আহ্বানে সাড়া দিয়েই অভ্যুত্থানে যারা সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত সদস্য, নারী, সামাজিক, সংখ্যালঘু, কৃষক, শ্রমিকশ্রেণি এবং এলাকাভিত্তিক সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব কমিটিতে রাখা হচ্ছে।

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ এবং উভয়ের কাছে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাব পৌঁছে দিতে গত ৮ আগস্ট গঠন করা হয় লিয়াজোঁ কমিটি।

সেদিন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার আগ মুহূর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ছয় সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি ঘোষণা করেন। লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ঠিক এক মাস পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৮ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সেখানে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যদের প্রায় সবাই রয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘নতুন ধরনের রাজনৈতিক শক্তি, রাজনৈতিক দল অবশ্যই প্রয়োজন আছে। পুরনো দলগুলোর নির্ধারিত রাজনৈতিক আদর্শ আছে।

২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক ভাব, রাজনৈতিক ভাষা জনগণের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। এই নতুন ভাবভঙ্গি, ভাষা ধারণ করবেন তারা। এটা ধারণ করার জন্য নতুন রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রয়োজন আছে এবং সেটা আমরা দেখতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে তরুণরাই ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি, সে স্পিরিট ধারণ করার যোগ্যতম দাবিদার তারাই। ফলে তারুণ্যনির্ভর নতুন রাজনৈতিক দল অবশ্যই গঠন হবে। তারা যে যেখানেই থাকুক না কেন, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একত্র হয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তি বা দলে রূপান্তরিত হবেন এবং সেটা নির্বাচনের আগেই। সে ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেকেই যুক্ত হবেন।’

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে যে তরুণ সমাজ এবং নাগরিকরা এসেছেন, ওইসময় তাদের মধ্যে একটা উদ্যোগের আকাক্সক্ষা দেখেছি। তারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে দেশ পুনর্গঠন চান।

সেই পুনর্গঠন ও উদ্যোগকে ফ্যাসিলিটেট করার জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। আমরা এর মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে বিভিন্ন জায়গায় কমিটি গোছাচ্ছি। ঢাকায় আমাদের ৫০ শতাংশ কমিটি গোছানো শেষ। সারা দেশেই কমিটি ঘোষণার কাজ চলমান।’

রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি জনগণের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের আকাক্সক্ষা ছিল, সেটি তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা আশা করি, আগামী এক দুই মাস পরই বাংলাদেশের মানুষের সামনে সুন্দরভাবে কোনো দলের বাস্তব রূপ আমরা দেখতে পাব।

এটি জাতীয় নাগরিক কমিটির একক কোনো উদ্যোগ নয়, এটা তরুণদের উদ্যোগ। জাতীয় নাগরিক কমিটি সে উদ্যোগকে ফ্যাসিলিটেট করবে। আমাদের একটা আকাক্সক্ষা, নতুন রাজনৈতিক দল শহীদ ও আহতদের যে আকাঙ্ক্ষা সে স্পিরিটটা তাদের ধারণ করতে হবে।’

সূত্র: দেশ রূপান্তর

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

রাজধানীর মোল্লা কলেজে হামলা-ভাঙচুর, শিক্ষার্থীদের দখলে সড়ক
ওয়ানডে সিরিজেও অনিশ্চিত মুশফিক
জানুয়ারিতে আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল
বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না চিকিৎসকরা
বুবলীকে টয়লেট দিবসের শুভেচ্ছা অপুর
কেজি দরে বিক্রি হওয়া ভাস্কর্যটি মুক্তিযোদ্ধার নয়, আওয়ামী লীগের অপপ্রচার
ফলোঅন এড়িয়ে ১৮১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
অটোরিকশা চলাচলে আপিল করবে সরকার
পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি
ভারতে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণীদের
ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেল আর্জেন্টিনা
আওয়ামী লীগের ২ সাবেক সংসদ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন
পলাশবাড়ীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ যুবক গ্রেফতার
আইপিএল মেগা নিলাম সর্বশেষ: কোন দলে কোন ক্রিকেটার?
রেকর্ড এডিট দাবি, দশ লাখ টাকার চেক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা
পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮২
হত্যা মামলায় গ্রেফতার ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৭৯
আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত