গ্রাফিতি, সব দেয়াল লিখন শাবিপ্রবি প্রশাসন মুছে দিয়েছে
সিলেট প্রতিনিধি
টানা ৩৬ দিন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবীতে সর্বশেষ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সাস্ট)’র ছাত্র, ছাত্রীরা আমরণ অনশনে গিয়েছিলেন। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা এই সময়ের মধ্যে ভিসি স্যারের পদত্যাগ দাবী করে সাস্টের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, রাস্তায়, প্রাচীরে ও দেওয়ালে দেয়াল লিখন, দেয়ালিকা টাঙানো, রোড পেইনটিংস, গ্রাফিতি তৈরি করেছিলেন।
তাদের আমরণ অনশন ভাঙাতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে কথা বলে গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটে এসেছিলেন বিখ্যাত অধ্যাপক দম্পতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক।
তখন ড. জাফর ইকবাল প্রিয় ছাত্র, ছাত্রীদের বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি স্যারকে চিঠিতে বলেছিলাম, এই সাংস্কৃতিক কাযক্রমগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ ও চলমান থাকতে হবে।’
তবে আজ মঙ্গলবার ২২ ফেব্রুয়ারি একুশের শহীদ দিবসের পর সাস্টে ক্লাস করতে এসে ছাত্র, ছাত্রীরা বিস্ময় ও গভীর বেদনার সঙ্গে দেখলেন, তাদের আঁকা সবগুলো শিল্প প্রতিবাদকর্মগুলো মুছে দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কমগুলো করেছে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণির নিদেশে-জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।
তবে এই কাজে বিশেষত দেয়ালিকা ও রোড পেইটিংসগুলো মুছে ফেলায় আন্দোলনকারী ছাত্র, ছাত্রী ও তাদের বন্ধু এবং সাধারণ ছাত্র, ছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম হয়েছে।
সাস্টের আন্দোলনের অন্যতম ছাত্র শাহরিয়ার আবেদীন এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘দেয়ালিকা ও রোড পেইন্টিংগুলো যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদের আন্দোলনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই শিল্পময় কাজগুলোর মাধ্যমে সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অন্যায়ের প্রতিবাদ করে চলেন। আমরা এখানে ভালো মনে আমাদের ভিসি স্যারকে নিয়ে যেসব দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে, সেগুলো মুছে ফেলার জন্য বলেছিলাম।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব দেয়ালিকা ও গ্রাফিতি মুছে দিয়েছেন। এই আচরণ ও কাজ খুব দুঃখজনক।’
সিলেট সার্কিট হাউজে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলকে নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র, ছাত্রীদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর সাংবাদিক ও তাদের জানিয়েছেন, ‘উপাচায অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ।’
সেই সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
ছবি : ছাত্র, ছাত্রীদের অনশন ভাঙাচ্ছেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক।
আলোকচিত্র : তানভীর হাসান।
ওএস/