সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

নির্মূল কমিটির আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার

‘সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতার মূল উৎপাটন করতে হবে’

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ সোমবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় ‘আমাদের ভাষা আন্দোলন সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের মৃত্যুবার্তা’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।

সম্মানিত আলোচক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী মানবাধিকার নেত্রী আরমা দত্ত এমপি, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কলাম লেখক মমতাজ লতিফ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক সুজিত সরকার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আলা উদ্দিন, প্রজন্ম ’৭১-এর সভাপতি শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদ সুরকার আলতাফ মাহমুদের কন্যা শহীদসন্তান শাওন মাহমুদ, সুইডেনে অবস্থানকারী নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিক সাব্বির খান এবং নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকার নেতা কাজী মুকুল।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘এই উপমহাদেশে ১৮৬৭ সালে উত্তর ভারতের হিন্দি-উর্দু বিরোধ জন্ম দিয়েছিল সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের। ১৯৪৮-এর বাংলা-উর্দু বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটেছে এই সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের সমাধি রচনার মাধ্যমে। পাকিস্তানে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির অভিব্যক্তি ছিল রাজনৈতিক ইসলাম। পাকিস্তানের ২৪ বছরের উপনিবেশসুলভ শাসনামলে দেখেছি- ইসলামের নামে জাতিগত নিপীড়ন, শোষণ, হত্যা ও সন্ত্রাস সহ যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধ এমনকি গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধকেও কীভাবে জায়েজ করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় ঘটলেও স্বাধীন বাংলাদেশে পরাজিত রাজনৈতিক ইসলাম আবার ব্রাম স্টোকারের পিশাচ কাহিনী ড্রাকুলার মতো কবর থেকে উঠে এসেছে। রক্তপানের জন্য বেছে নিয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক মানবতার বোধকে। বাঙালিত্বের যে অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ১৯৪৮-এ ভয় পেয়েছিলেন জিন্নাহ ও লিয়াকত আলী, ১৯৭১-এ ভয় পেয়েছেন, ইয়াহিয়া ও গোলাম আযমরা- সেই চেতনার আলোই বধ করবে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারকারী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে।’

আরমা দত্ত এমপি বলেন, ‘৭১-এ ভাষার উপর ভিত্তি করে যে জাতিরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে তা পৃথিবীতে অনন্য। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বাংলা ভাষার জন্য তৎকালীন পাকিস্তানের সংসদে দাঁড়িয়ে একা যে অসামান্য লড়াই চালিয়েছিলেন তা তিনি শুধুমাত্র মাতৃভাষা ও বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের চিহ্নকে রক্ষা করার জন্য, তা খ্যাতির জন্য নয়। আমরা যেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সেই স্বপ্ন ও প্রত্যাশাকে জাগরুক রাখতে পারি।’

মানবাধিকারনেত্রী আরমা দত্ত এমপি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভাষা আন্দোলনের পুরোগামী নেতা ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতিচারণ করে তরুণ প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করার আহ্বন জানিয়ে বলেন, ‘আজকের দিনে শুধুমাত্র ফুল দিয়ে ছবি তুলে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে সেখান থেকে তরুণদের নিবৃত হতে হবে।’

শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের আত্মদানের কারণে শুধু ভাষার অধিকার ফিরে পেয়েছি তাই নয়, প্রকৃতপক্ষে আমরা ফিরে পেয়েছি একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গৌরব এবং মর্যাদা। তাদের ঋণ অপরিশোধ্য। দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রবক্তা মুসলিম লীগের নেতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাকিস্তান আন্দোলনের সময় বলেছিলেন, হিন্দু ও মুসলমান সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধর্ম, দর্শন, সামাজিক সংস্কার ও সাহিত্য থেকে উদ্ভূত। এমনকি হিন্দু ও মুসলমানগণ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ইতিহাসের ধারা থেকে তাদের অনুপ্রেরণা লাভ করে থাকেন। প্রতিক্রিয়াশীল নেতা খাজা নাজিমুদ্দিন ঘোষণা করেছিলেন, আমাদের সংগ্রাম ভারত সরকারের বিরুদ্ধে নয়, হিন্দুদের বিরুদ্ধে। তাদের এই ভাবাদর্শের পরিণাম দেশবাসী দেখেছে। দেশভাগের ফলে পাকিস্তান ও ভারতে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা চরম রূপ ধারণ করেছিল। জীবন বাঁচাতে পৃথিবীর বৃহত্তম দেশান্তর তখন সংঘটিত হয়। ব্রিটিশদের বিভাজন ও শাসন নীতির ফলে সৃষ্টি এই ভয়াবহতায় প্রায় দেড় কোটি লোক বাস্তুচ্যুত হন।’

অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের অসাম্প্রদায়িক চেতনা একদিকে জাতিগত বৈষম্য ও ধর্মকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনার উপর এক ধরনের চপেটাঘাত, অন্যদিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্য দিয়ে বাঙালি সকল প্রকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে উদ্ভুদ্ধ হয়; যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে শরীফ শিক্ষা কমিশন, যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ছয় দফা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, এবং অবশেষে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। এই ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য এখানে যে, এই আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবীর কাছে একটি সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ যদি কোন অভিন্ন সূত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে যে কোনো পরাশক্তিকে প্রতিহত করা, তথা সর্বাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করা সম্ভব।’

শহীদসন্তান শাওন মাহমুদ বলেন, ‘ভাষা রক্ষার লড়াইয়ে তৈরী হয়েছিল অসাম্প্রদায়িক ছাত্র সংগঠন, যুব সংগঠন, রাজনৈতিক দল। এ সময়ে জাতীয় ছাত্র সংগঠন হিসেবে তৈরী হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন। দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তার শাখার বিস্তার ঘটায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ধীরে ধীরে অসাম্প্রদায়িক চেতনার ছড়িয়ে গিয়েছিল। এমনকি বিভিন্ন সংগঠন তাদের সাম্প্রদায়িক নাম বাদ দিয়ে অসাম্প্রদায়িক মতাদর্শে, সংগঠনের নামে পরিবর্তন এনেছিল। সকলে নিজের ধর্ম, রাজনৈতিক মতাদর্শকে তুলে রেখে একসাথে পথ হাঁটবার সেতু বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে উঠেছিল আপনাআপনি। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দৃঢ় সম্মিলনে এক স্বাধীন ভূমির স্বপ্ন সূচিত হয়েছিল। দল, মত, ধর্ম, শ্রেণী নির্বিশেষে আমরা সবাই বাঙালির ভাবনায় পথ হয়েছিল প্রসারিত। আমরা এই অনন্য, অসাধারণ অর্জনটিকে উগ্রবাদের কলূষিত বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে খুব ধীরে ধীরে হত্যা করেছি। এর থেকে আমাদের দ্রুত উত্তরণ করতে হবে।’

নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক মানবাধিকার নেতা কাজী মুকুল সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা যেভাবে আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে- তরুণ প্রজন্মকে এর অশুভ প্রভাব থেকে দূরে রাখতে হলে অসাম্প্রদায়িক মানবিকতার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।’

এপি/

Header Ad

জানুয়ারিতে আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-ঘোষিত এক দফায় ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি তোলা হয়েছিল। গণ-অভ্যুত্থানের সফলতার পর নিজেরাই এ দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে আরও একধাপ এগিয়ে এবার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধীরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলামকে নেতৃত্বে রেখে দল গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতেই আলোচিত নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসতে পারে।

এখনও দলের নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দলটি তারুণ্যনির্ভর হচ্ছে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিভিন্ন জেলা সফর করেছেন। ওই সময় নতুন দল গঠনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিচালনার জন্য গঠিত এই প্ল্যাটফর্মকে সাংগঠনিক রূপ দিতে গঠন করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। একই সঙ্গে গঠন করা হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কাজ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি। দল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েও কিছুদিন ধরে কাজ করছেন। তারা মনে করেন, বিপ্লব-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে মানুষ নতুন রাজনৈতিক শক্তিকে দেখতে চায়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি দায়িত্বশীল সূত্র সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত জানিয়েছে, জানুয়ারিকে সামনে রেখেই তাদের প্রস্তুতি চলছে। জানুয়ারিতে তারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করতে পারেন। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নেতৃত্বে রেখেই তারা দল গঠনের চিন্তা করছেন।

সূত্রটি আরও বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের উদ্যোগেই নতুন এই দল হবে। নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা এবং বাইরের বিভিন্ন দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন হতে পারে এই দল। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও চলছে বলে জানা গেছে।

নতুন দল গঠন করলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকবে। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে এই দুটি সংগঠন।

নাম প্রকাশ না করে জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষপর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘নাহিদ ইসলামকে সামনে রেখে আমরা জানুয়ারিতে দল গঠনের বিষয়ে ভাবছি। সে ক্ষেত্রে তাকে দল গঠনের আগে উপদেষ্টার পদ ছাড়তে হবে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে আমরা আশা করি, সেটি তিনি করবেন। নাগরিক কমিটি ঢাকাসহ দেশের সব থানাপর্যায়ে কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলাপর্যায়ে কমিটি করার কাজ করছে। জানুয়ারির মধ্যেই সেটি সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষপর্যায়ের আরেক নেতা প্রায় একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করতে চাই। দেশের জনগণ তরুণ নেতৃত্বকেই বেছে নেবেন। তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে নাহিদ ইসলামকেই আমাদের যোগ্য মনে হয়েছে।’

জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা শুরু হয় গত সেপ্টেম্বরে। ৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও ‘নতুন বাংলাদেশের’ রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির ৫৬ সদস্যের একটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করে।

প্রায় একই সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় সফর শুরু করেন। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫টি জেলায় তারা কমিটি ঘোষণা করেছেন। বাকি জেলাগুলোও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটি ঢাকায় ২০টির বেশি থানাপর্যায়ের কমিটি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলার কমিটিও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গেছে। এই কমিটিগুলো নতুন দল গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘জানুয়ারির আগে আগে আমরা সব জেলার কমিটি ঘোষণা করব।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, রাজনৈতিক দলগুলোর গতানুগতিক ধারার যে রাজনীতি, সেটা থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য এবং বাংলাদেশের জনগণের অধিকার রক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন, শক্তিশালী করা একই সঙ্গে মানুষের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলাম রাইজিং কর্মসূচির অংশ হিসেবে। ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার ২০টি জেলায় কমিটি ঘোষণা করেছি এবং অন্য জেলাগুলোর অনেক থানাপর্যায়ের কমিটি প্রস্তুত আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, সে আহ্বানে সাড়া দিয়েই অভ্যুত্থানে যারা সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত সদস্য, নারী, সামাজিক, সংখ্যালঘু, কৃষক, শ্রমিকশ্রেণি এবং এলাকাভিত্তিক সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব কমিটিতে রাখা হচ্ছে।

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ এবং উভয়ের কাছে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাব পৌঁছে দিতে গত ৮ আগস্ট গঠন করা হয় লিয়াজোঁ কমিটি।

সেদিন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার আগ মুহূর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ছয় সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি ঘোষণা করেন। লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ঠিক এক মাস পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৮ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সেখানে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যদের প্রায় সবাই রয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘নতুন ধরনের রাজনৈতিক শক্তি, রাজনৈতিক দল অবশ্যই প্রয়োজন আছে। পুরনো দলগুলোর নির্ধারিত রাজনৈতিক আদর্শ আছে।

২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক ভাব, রাজনৈতিক ভাষা জনগণের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। এই নতুন ভাবভঙ্গি, ভাষা ধারণ করবেন তারা। এটা ধারণ করার জন্য নতুন রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রয়োজন আছে এবং সেটা আমরা দেখতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে তরুণরাই ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি, সে স্পিরিট ধারণ করার যোগ্যতম দাবিদার তারাই। ফলে তারুণ্যনির্ভর নতুন রাজনৈতিক দল অবশ্যই গঠন হবে। তারা যে যেখানেই থাকুক না কেন, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একত্র হয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তি বা দলে রূপান্তরিত হবেন এবং সেটা নির্বাচনের আগেই। সে ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেকেই যুক্ত হবেন।’

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে যে তরুণ সমাজ এবং নাগরিকরা এসেছেন, ওইসময় তাদের মধ্যে একটা উদ্যোগের আকাক্সক্ষা দেখেছি। তারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে দেশ পুনর্গঠন চান।

সেই পুনর্গঠন ও উদ্যোগকে ফ্যাসিলিটেট করার জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। আমরা এর মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে বিভিন্ন জায়গায় কমিটি গোছাচ্ছি। ঢাকায় আমাদের ৫০ শতাংশ কমিটি গোছানো শেষ। সারা দেশেই কমিটি ঘোষণার কাজ চলমান।’

রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি জনগণের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের আকাক্সক্ষা ছিল, সেটি তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা আশা করি, আগামী এক দুই মাস পরই বাংলাদেশের মানুষের সামনে সুন্দরভাবে কোনো দলের বাস্তব রূপ আমরা দেখতে পাব।

এটি জাতীয় নাগরিক কমিটির একক কোনো উদ্যোগ নয়, এটা তরুণদের উদ্যোগ। জাতীয় নাগরিক কমিটি সে উদ্যোগকে ফ্যাসিলিটেট করবে। আমাদের একটা আকাক্সক্ষা, নতুন রাজনৈতিক দল শহীদ ও আহতদের যে আকাঙ্ক্ষা সে স্পিরিটটা তাদের ধারণ করতে হবে।’

সূত্র: দেশ রূপান্তর

Header Ad

বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না চিকিৎসকরা

ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে কর্মরত চিকিৎসকরা সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় অংশ নিতে বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাদের এই নতুন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবদুল হাই স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন দপ্তর কিংবা সংস্থায় কর্মরত চিকিৎসকদের বৈদেশিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বছরে (সর্বশেষ ১২ মাস) সর্বোচ্চ দুইবার বৈদেশিক সেমিনার, সভা, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ কিংবা কর্মশালা ইত্যাদিতে যেতে পারবেন। প্রার্থী যে বিষয়ে অভিজ্ঞ বা যে বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত (দায়িত্ব পালনরত), কেবল সেই বিষয়ে আমন্ত্রিত হতে পারবেন। প্রার্থী যে বিষয়ে অধ্যয়নরত সেই বিষয়ে আমন্ত্রিত হয়ে গমন করতে পারবেন।

আমন্ত্রণকারী সংস্থার নিজস্ব ডোমেইনভুক্ত ওয়েবমেইল থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওয়েবমেইলে (secretary@hsd.gov.bd, cc: admin1@hsd.gov.bd) আমন্ত্রণপত্রের অনুলিপি বা কপি পাঠাতে হবে। আমন্ত্রণকারী সংস্থা যাবতীয় খরচ (ভিসা ফি, উভয় পথের বিমানভাড়া, আবাসন ব্যবস্থা বা খরচ ইত্যাদি) বহন করবেন বলে সংস্থা থেকে প্রত্যয়নপত্র প্রমাণক হিসেবে দাখিল করতে হবে।

এ ছাড়া বৈদেশিক প্রমাণস্বরূপ প্রোগ্রামে যোগদানের ও সমাপ্তি দিনের ছবি দাখিল করতে হবে। যথাযথ মাধ্যমে অগ্রায়নকৃত আবেদনে প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ থাকতে হবে। অগ্রায়নের আগে প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর প্রধান প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্র ১ নম্বর থেকে থেকে ৯ নম্বর শর্ত যাচাই করে সঠিক পাওয়া গেলো (ভেরিফায়েড অ্যান্ড ফাউন্ড ওকে) লিখে প্রত্যয়ন করতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয়, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিবেচ্য মনে করেন।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, উপরিউক্ত নির্দেশনাসমূহ আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ থেকে চিকিৎসকদের আমন্ত্রণের ভিত্তিতে বিদেশে সেমিনার, সভা, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ বা কর্মশালা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো।

Header Ad

বুবলীকে টয়লেট দিবসের শুভেচ্ছা অপুর

ছবি: সংগৃহীত

শাকিব খানকে কেন্দ্র করে তাঁর দুই সাবেক স্ত্রী অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর দ্বন্দ্বটা নতুন কিছু নয়। ঢালিউড সিনেমার দুই নায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর সম্পর্কটা কেমন, সেটা একেবারেই অজানা নয় ভক্তদের। বর্তমানে যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বৈরিতায় রূপ নিয়েছে।

সবশেষ শবনম বুবলীর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে এই দুই নায়িকার কোন্দলের চিত্র আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে। গত ২০ নভেম্বর ছিল বুবলীর জন্মদিন। দিনটিতে পরিবারের মানুষদের নিয়েই ঘরোয়া পরিবেশে কেক কেটেছেন তিনি। সেই মুহূর্ত তুলে ধরেছেন ফেসবুকে। যেখানে ভালোবাসা জানিয়েছেন ভক্তরা।

তবে বুবলীর জন্মদিনের তিনদিন পর রোববার (২৪ নভেম্বর) অপু বিশ্বাস ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘লেট পোস্ট। হ্যাপি টয়লেট ডে, ২০ নভেম্বর।’ সঙ্গে একটি অট্টোহাসির ইমোজি জুড়ে দেন তিনি।

সরাসরি কিছু না বললেও পরোক্ষভাবে বুবলীর জন্মদিন নিয়েই ঠাট্টা করেছেন এই নায়িকা। যেটা বুঝতে কষ্ট হয়নি ভক্তদের। কারণ ২০২২ সালেও বুবলীর জন্মদিনে খোঁচা দিয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। ওই বছর বুবলী গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, জন্মদিন উপলক্ষ্যে শাকিব খানের কাছ থেকে ডায়মন্ডের নাকফুল উপহার পেয়েছেন তিনি।

সেই খবর ফেসবুকে শেয়ার করে অনেকগুলো হাসির ইমোজি দিয়ে অপু লিখেছিলেন, ‘কী যে মজা’! চুপ থাকেননি বুবলীও। দুজনে জড়িয়ে পড়েন ভার্চুয়াল যুদ্ধে। একজন অন্যজনকে নিয়ে নানা রকম কটু মন্তব্যও করেন।

সেই ঘটনার দুই বছর পর আবারও বুবলীর জন্মদিনে তাকে খোঁচা দিতে গেল অপু বিশ্বাসকে। যা মোটেও ভালোভাবে নেননি নায়িকার ভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার শিকার হচ্ছেন তিনি।

অপুকে উদ্দেশ্য করে কেউ লিখেছেন, বুবলীকে নিয়ে আপনার হিংসা কমছে না। কারো মন্তব্য, আপনাদের কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন। কেউ আবার অপুর মানসিকতার ধরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে গোপনে বিয়ে করেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। এরপর ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান আব্রাম খান জয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে ডিভোর্সের পর একই বছরের ২০ জুলাই বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব খান। সেই সংসারে ২০২০ সালের ২১ মার্চ সন্তান শেহজাদ খান বীরের জন্ম হয়। এর কয়েক বছরের মাথায় তাদের বিচ্ছেদের খবর শোনা যায়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জানুয়ারিতে আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল
বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না চিকিৎসকরা
বুবলীকে টয়লেট দিবসের শুভেচ্ছা অপুর
কেজি দরে বিক্রি হওয়া ভাস্কর্যটি মুক্তিযোদ্ধার নয়, আওয়ামী লীগের অপপ্রচার
ফলোঅন এড়িয়ে ১৮১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
অটোরিকশা চলাচলে আপিল করবে সরকার
পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি
ভারতে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণীদের
ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেল আর্জেন্টিনা
আওয়ামী লীগের ২ সাবেক সংসদ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন
পলাশবাড়ীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ যুবক গ্রেফতার
আইপিএল মেগা নিলাম সর্বশেষ: কোন দলে কোন ক্রিকেটার?
রেকর্ড এডিট দাবি, দশ লাখ টাকার চেক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা
পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮২
হত্যা মামলায় গ্রেফতার ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৭৯
আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত
আরও এক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান
সৌদি আরবে এক সপ্তাহে ২০ হাজার অবৈধ প্রবাসী গ্রেপ্তার