সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

‘বাংলা বানানকে নতুন যুগের উপযোগী করে সংস্কার করার সময় এসেছে’

একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই বাংলা ভাষা নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। অথচ বছরজুড়ে এ নিয়ে আর কোন উচ্চবাচ্য নেই। ফলে সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন কতটা হয়েছে? বিকৃত বা ভুল বাংলা শব্দ ব্যবহার করা থেকে মানুষকে নিবৃত্ত করতে কী করছে বাংলা একাডেমি? অনলাইনে কেন পুরো বাংলা অভিধান এখনও দেওয়া যায়নি? এসব বিষয় নিয়ে জার্মানির সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহাম্মদ নূরুল হুদা।

সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন কতটা হয়েছে?

মুহাম্মদ নূরুল হুদা: কতটা হয়েছে তার কোন সমীক্ষা বাংলাদেশে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে, আমাদের সরকারি অফিস আদালতের নথিতে শতভাগ হয়েছে। কিন্তু বেসরকারি পর্যায়ে, যেখানে পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ হয় সেখানে বাংলার বাইরে সম্পূরক একটা ভাষা আছে, যেটাকে আমরা বলি কর্মের ভাষা ইংরেজি সেটাও ব্যবহার হচ্ছে এটাও ঠিক। আবার বিভিন্ন সাইবোর্ডে দেখা যাবে বাংলা আছে, কোথাও কোথাও ইংরেজি আছে। কিন্তু এটা খুব বেশি নয়। গত ৫০ বছরে ইংরেজি ব্যবহারের বিষয়টি খুবই কমে এসেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেটা এই-পরিভাষার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না, বাংলা চালু করতে হবে৷ আমরা কিছু বানানে ভুল করব, লেখায় ভুল করব, এই ভুল করতে করতে আমাদের প্রমিত বাংলায় আসতে হবে। এই যাত্রায় আমরা বহুদুর এগিয়েছি।

একুশে ফেব্রুয়ারি এলেই নানা ধরনের তৎপরতা দেখা যায়৷ এটা বছরব্যাপী করা যায় না?

মুহাম্মদ নূরুল হুদা: এখন তো বছরব্যাপী হচ্ছে বলা যায়। আগে বরং শুধু একুশে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রিক ছিল। এখন সারা বছরে হচ্ছে, তারপরও একুশে ফেব্রুয়ারি আসলে যে আলোচনাটা হয়, তার রেশ সারা বছরই থাকে। মঙ্গলবার মেলার উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি সম্ভব হয় সবগুলো জেলাতেই সহিত্য সম্মেলন করতে হবে। এর সঙ্গে আমরা বইমেলা জুড়ে দেব। এতে সৃষ্টিশীলতার বিষয়টা সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়বে৷ শুষ্ক মৌসুমের ছয় মাস যদি জেলাগুলোতে এটা করা যায় তাহলে মানুষের মনে বাংলা প্রচলনের বিষয়টি স্থায়ী রূপ পাবে।

বাংলা বিকৃত করা দুই ধরনের। একটি জেনে বিকৃত করা, আরেকটি না জেনে বিকৃত করা। আপনি তো শুধু নাটক-সিনেমার কথা বলছেন, কিন্তু রেডিওর যে জকি আছে তারা দ্রুততার সঙ্গে যে বাংলা বলে তাতে বিকৃত হচ্ছে। এটা বন্ধে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। সব মানুষের মনোযোগ যদি শুদ্ধ বাংলার দিকে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

বাংলা একাডেমি যে বইগুলো প্রকাশ করে, সেখানে কি অভিধান অনুযায়ী সব শব্দ ব্যবহার হয়?

মুহাম্মদ নূরুল হুদা: অবশ্যই অভিধান অনুযায়ী সব শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ তবে ডিকশনারির বাইরে কখনও কখনও নতুন শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ তৈরি করে কবি, ভাষাবিদ এবং পণ্ডিতেরা। তাদের কাছ থেকে কোন শব্দ পাওয়া গেলে সেগুলো ডিকশনারিতে আনা হয়। যেমন ধরা যাক, ঘেরাও। এই শব্দটি আগে বাংলাতে খুব একটা প্রচলিত ছিল না। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ঘেরাও যখন শুরু হল, মাওলানা ভাসানীর মুখ থেকে আমরা অনেকবার এই শব্দটি শুনেছি। পরে এটা ডিকশনারিতে চলে এসেছে। ফলে অভিধানের বাইরের কোন শব্দ সাধারণত মানুষ ব্যবহার করে না।

অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ ডিকশনারির অনলাইন সংস্করণ আছে। বাংলা একাডেমির নেই কেন?

মুহাম্মদ নূরুল হুদা: আমার মনে হয়, বাংলা অভিধানের সব শব্দ নিয়ে অনলাইনে ডিকশনারি করার মতো কোন সফটওয়্যার এখনও দেশে নেই। এর মূল কারণ হল, বাংলায় যে ৪৯টি অক্ষর আছে, এর সঙ্গে আকার-একার সব মিলিয়ে বিষয়টা একটু জটিল। তবে প্রচেষ্টা চলছে৷ আমাদের ডিকশনারিটা অনলাইনে আছে, তবে মুদ্রিত ডিকশনারির মত ততটা বিস্তৃত নয়। শব্দার্থ হিসেবে আছে। ফলে জটিলতাটা কাটেনি। আমার মনে হয়, দু'এক বছরের মধ্যে এই জটিলতাও কেটে যাবে।

বাংলা একাডেমির বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রন বিভাগের পরিচালক ড. জালাল আহমেদ জানান, অমর একুশে বইমেলার স্টল বন্টনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে অনিয়মের যে অভিযোগ ছিল, সেটি সম্পূর্ণ দূর হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলছি। সেখানে এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় কেন ডিজিটাইজেশনের বাইরে থেকে গেল?

মুহাম্মদ নূরুল হুদা: এর অনেকগুলো কারণ আছে। ডিজিটাইজেশন বলতে আমরা বুঝি টেলিফোনে কথা বলা, বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ করা, ফেসবুকে লেখা এসব। পৃথিবীর বাইরের সঙ্গে যে যোগাযোগ সেটা তো ইংরেজিতে করলেই হয়। বাংলাদেশে এটা করতে হলে যে মনোযোগটা দরকার সেটা আমাদের সব মহলেই একটু কম আছে বলে আমার মনে হয়। এটা বাড়াতে হবে৷ পাশাপাশি অনুশীলনটাও বাড়াতে হবে। তার সঙ্গে বাংলা বানানকে নতুন যুগের উপযোগী করে আবার সংস্কার করার দিন আসছে। এর আগেও বারবার সংস্কার হয়েছে। এখন ডিজিটাল যুগে সহজে যাতে এটাকে ধারণ করা যায় সেই কাজটি করার সময় এসেছে।

মাঝে মধ্যেই ডিকশনারিতে পরিবর্তন আসে, কিন্তু দেশের বাইরে থাকা বিপুল সংখ্যক বাংলা ভাষাভাষী মানুষ এটা জানতে পারেন না। তাদের পক্ষে সব সময় এটা কেনাও সম্ভব হয় না। ফলে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিকৃত শব্দ চলে যাচ্ছে না?

আমি মনে করি, শব্দ কখনই বিকৃত হয় না, ভুল শব্দ হয়। বিকৃত হলেই এটা ভুল হয়ে যাবে? শব্দ বানান যদি আমি ‘স’ দিয়ে লিখি এটা ভুল হবে। এই ভুলটা ব্যক্তি চেতনার উপর নির্ভর করে। কে কতটা মনোযোগী সেটার উপর নির্ভর করে৷ আরেকটা বিষয় আমি দেখেছি, ফেসবুক যারা ব্যবহার করেন তারা মুখের ভাষা ব্যবহার করেন। অথবা ব্যকরণ অনুযায়ী একটা গ্রামার যেভাবে লিখতে হয়, তারা সেভাবে লেখেন না। তারা একটু মনোযোগী হলেই শুদ্ধ করে লিখতে পারেন। দেশের বাইরে যারা আছেন তারা কিন্তু অনলাইনে বাংলা একাডেমির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এখন অনলাইনে যে ডিকশনারিটা আছে সেটা ফলো করলেও ভুল হওয়ার কথা না। যেমন ধরেন এখন ‘বাড়ি’ বানান এটা, কিন্তু কেউ যদি ‘বাড়ী’ বানান এটা লেখে সেটাও ভুল না। এটা হল আগের প্রচলন, পরের প্রচলন। এটা বলা যেতে পারে প্রমিত বাংলা বানান না। ফলে শুদ্ধ একটা ব্যাপার, প্রমিত একটা ব্যাপার আর না জেনে লেখা আরেকটা ব্যাপার৷ আমি মনে করি, আমাদের যে বিশাল ডিকশনারি এটা অনলাইনে দিলে জটিলতা বাড়বে। বরং মুদ্রিত ডিকশনারি সঙ্গে রাখা দরকার। লন্ডন, জার্মানি, নিউইয়র্ক যেখানেই বলেন সেখানে বাংলা ডিকশনারি পাওয়া যায়৷ ফলে এটা সংগ্রহ করা খুব কঠিন কাজ না। হয়ত অনলাইনে আরো বিশুদ্ধভাবে করা যায়। সেটা এখন সময়ের ব্যাপার।

সবাইকে বাংলা একাডেমির অভিধান অনুযায়ী বাংলা শব্দ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে কি উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে না?

মুহাম্মদ নূরুল হুদা: সেটা তো আমরা বলেছি, অভিধান অনুযায়ী ভাষা ব্যবহার করতে গেলে দু'টি কাজ করতে হবে, একটা অর্থ জানা এবং আরেকটা হল বানানটা ঠিক রাখা। বানান ঠিক রাখা আর বানান প্রমিত রাখা কিন্তু এক কথা নয়। প্রথম যে ডিকশনারিটা ছিল এখন কিন্তু সেটার বানান অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। সর্বশেষ যে অভিধানটা এসেছে এটা কিন্তু সব বানানই আগের বানান থেকে আলাদা। আমাদের উচিত হবে বাংলা একাডেমির অভিধান ফলো করা। কেউ যদি প্রমিত বানান না লিখে আগের কোন বানান লেখে এটাকে ভুল বলা যাবে না। এটা গ্রহণ করতেও কোন অসুবিধা নেই। সর্বশেষ বানান গ্রহণ করতে একটু সময়ের দরকার হয়।

 

 

Header Ad

জানুয়ারিতে আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-ঘোষিত এক দফায় ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি তোলা হয়েছিল। গণ-অভ্যুত্থানের সফলতার পর নিজেরাই এ দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে আরও একধাপ এগিয়ে এবার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের দিকে যাচ্ছে বৈষম্যবিরোধীরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা নাহিদ ইসলামকে নেতৃত্বে রেখে দল গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতেই আলোচিত নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসতে পারে।

এখনও দলের নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দলটি তারুণ্যনির্ভর হচ্ছে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বিভিন্ন জেলা সফর করেছেন। ওই সময় নতুন দল গঠনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিচালনার জন্য গঠিত এই প্ল্যাটফর্মকে সাংগঠনিক রূপ দিতে গঠন করা হয় আহ্বায়ক কমিটি। একই সঙ্গে গঠন করা হয় জাতীয় নাগরিক কমিটি।

গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনে কাজ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি। দল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়েও কিছুদিন ধরে কাজ করছেন। তারা মনে করেন, বিপ্লব-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে মানুষ নতুন রাজনৈতিক শক্তিকে দেখতে চায়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি দায়িত্বশীল সূত্র সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত জানিয়েছে, জানুয়ারিকে সামনে রেখেই তাদের প্রস্তুতি চলছে। জানুয়ারিতে তারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল ঘোষণা করতে পারেন। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নেতৃত্বে রেখেই তারা দল গঠনের চিন্তা করছেন।

সূত্রটি আরও বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের উদ্যোগেই নতুন এই দল হবে। নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতা এবং বাইরের বিভিন্ন দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন হতে পারে এই দল। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও চলছে বলে জানা গেছে।

নতুন দল গঠন করলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকবে। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে এই দুটি সংগঠন।

নাম প্রকাশ না করে জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষপর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘নাহিদ ইসলামকে সামনে রেখে আমরা জানুয়ারিতে দল গঠনের বিষয়ে ভাবছি। সে ক্ষেত্রে তাকে দল গঠনের আগে উপদেষ্টার পদ ছাড়তে হবে। সবকিছু চূড়ান্ত হলে আমরা আশা করি, সেটি তিনি করবেন। নাগরিক কমিটি ঢাকাসহ দেশের সব থানাপর্যায়ে কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলাপর্যায়ে কমিটি করার কাজ করছে। জানুয়ারির মধ্যেই সেটি সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’

অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষপর্যায়ের আরেক নেতা প্রায় একই কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তারুণ্যনির্ভর দল গঠন করতে চাই। দেশের জনগণ তরুণ নেতৃত্বকেই বেছে নেবেন। তরুণ নেতৃত্বের মধ্যে নাহিদ ইসলামকেই আমাদের যোগ্য মনে হয়েছে।’

জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা শুরু হয় গত সেপ্টেম্বরে। ৮ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র পুনর্গঠন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও ‘নতুন বাংলাদেশের’ রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির ৫৬ সদস্যের একটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করে।

প্রায় একই সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় সফর শুরু করেন। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫টি জেলায় তারা কমিটি ঘোষণা করেছেন। বাকি জেলাগুলোও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক কমিটি ঢাকায় ২০টির বেশি থানাপর্যায়ের কমিটি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া সিলেট, চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলার কমিটিও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানা গেছে। এই কমিটিগুলো নতুন দল গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘জানুয়ারির আগে আগে আমরা সব জেলার কমিটি ঘোষণা করব।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, রাজনৈতিক দলগুলোর গতানুগতিক ধারার যে রাজনীতি, সেটা থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ পুনর্গঠনের জন্য এবং বাংলাদেশের জনগণের অধিকার রক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বাধীন, শক্তিশালী করা একই সঙ্গে মানুষের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলাম রাইজিং কর্মসূচির অংশ হিসেবে। ইতোমধ্যে আমরা ঢাকার ২০টি জেলায় কমিটি ঘোষণা করেছি এবং অন্য জেলাগুলোর অনেক থানাপর্যায়ের কমিটি প্রস্তুত আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, সে আহ্বানে সাড়া দিয়েই অভ্যুত্থানে যারা সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত সদস্য, নারী, সামাজিক, সংখ্যালঘু, কৃষক, শ্রমিকশ্রেণি এবং এলাকাভিত্তিক সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব কমিটিতে রাখা হচ্ছে।

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ এবং উভয়ের কাছে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাব পৌঁছে দিতে গত ৮ আগস্ট গঠন করা হয় লিয়াজোঁ কমিটি।

সেদিন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার আগ মুহূর্তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ছয় সদস্যের লিয়াজোঁ কমিটি ঘোষণা করেন। লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের ঠিক এক মাস পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৮ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সেখানে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যদের প্রায় সবাই রয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘নতুন ধরনের রাজনৈতিক শক্তি, রাজনৈতিক দল অবশ্যই প্রয়োজন আছে। পুরনো দলগুলোর নির্ধারিত রাজনৈতিক আদর্শ আছে।

২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক ভাব, রাজনৈতিক ভাষা জনগণের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। এই নতুন ভাবভঙ্গি, ভাষা ধারণ করবেন তারা। এটা ধারণ করার জন্য নতুন রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রয়োজন আছে এবং সেটা আমরা দেখতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে তরুণরাই ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি, সে স্পিরিট ধারণ করার যোগ্যতম দাবিদার তারাই। ফলে তারুণ্যনির্ভর নতুন রাজনৈতিক দল অবশ্যই গঠন হবে। তারা যে যেখানেই থাকুক না কেন, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একত্র হয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তি বা দলে রূপান্তরিত হবেন এবং সেটা নির্বাচনের আগেই। সে ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেকেই যুক্ত হবেন।’

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে যে তরুণ সমাজ এবং নাগরিকরা এসেছেন, ওইসময় তাদের মধ্যে একটা উদ্যোগের আকাক্সক্ষা দেখেছি। তারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে দেশ পুনর্গঠন চান।

সেই পুনর্গঠন ও উদ্যোগকে ফ্যাসিলিটেট করার জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। আমরা এর মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে বিভিন্ন জায়গায় কমিটি গোছাচ্ছি। ঢাকায় আমাদের ৫০ শতাংশ কমিটি গোছানো শেষ। সারা দেশেই কমিটি ঘোষণার কাজ চলমান।’

রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি জনগণের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের আকাক্সক্ষা ছিল, সেটি তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমরা আশা করি, আগামী এক দুই মাস পরই বাংলাদেশের মানুষের সামনে সুন্দরভাবে কোনো দলের বাস্তব রূপ আমরা দেখতে পাব।

এটি জাতীয় নাগরিক কমিটির একক কোনো উদ্যোগ নয়, এটা তরুণদের উদ্যোগ। জাতীয় নাগরিক কমিটি সে উদ্যোগকে ফ্যাসিলিটেট করবে। আমাদের একটা আকাক্সক্ষা, নতুন রাজনৈতিক দল শহীদ ও আহতদের যে আকাঙ্ক্ষা সে স্পিরিটটা তাদের ধারণ করতে হবে।’

সূত্র: দেশ রূপান্তর

Header Ad

বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না চিকিৎসকরা

ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে কর্মরত চিকিৎসকরা সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় অংশ নিতে বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাদের এই নতুন নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবদুল হাই স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন দপ্তর কিংবা সংস্থায় কর্মরত চিকিৎসকদের বৈদেশিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বছরে (সর্বশেষ ১২ মাস) সর্বোচ্চ দুইবার বৈদেশিক সেমিনার, সভা, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ কিংবা কর্মশালা ইত্যাদিতে যেতে পারবেন। প্রার্থী যে বিষয়ে অভিজ্ঞ বা যে বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত (দায়িত্ব পালনরত), কেবল সেই বিষয়ে আমন্ত্রিত হতে পারবেন। প্রার্থী যে বিষয়ে অধ্যয়নরত সেই বিষয়ে আমন্ত্রিত হয়ে গমন করতে পারবেন।

আমন্ত্রণকারী সংস্থার নিজস্ব ডোমেইনভুক্ত ওয়েবমেইল থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ওয়েবমেইলে (secretary@hsd.gov.bd, cc: admin1@hsd.gov.bd) আমন্ত্রণপত্রের অনুলিপি বা কপি পাঠাতে হবে। আমন্ত্রণকারী সংস্থা যাবতীয় খরচ (ভিসা ফি, উভয় পথের বিমানভাড়া, আবাসন ব্যবস্থা বা খরচ ইত্যাদি) বহন করবেন বলে সংস্থা থেকে প্রত্যয়নপত্র প্রমাণক হিসেবে দাখিল করতে হবে।

এ ছাড়া বৈদেশিক প্রমাণস্বরূপ প্রোগ্রামে যোগদানের ও সমাপ্তি দিনের ছবি দাখিল করতে হবে। যথাযথ মাধ্যমে অগ্রায়নকৃত আবেদনে প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর প্রধান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ থাকতে হবে। অগ্রায়নের আগে প্রতিষ্ঠান বা দপ্তর প্রধান প্রাপ্ত আমন্ত্রণপত্র ১ নম্বর থেকে থেকে ৯ নম্বর শর্ত যাচাই করে সঠিক পাওয়া গেলো (ভেরিফায়েড অ্যান্ড ফাউন্ড ওকে) লিখে প্রত্যয়ন করতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয়, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিবেচ্য মনে করেন।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, উপরিউক্ত নির্দেশনাসমূহ আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ থেকে চিকিৎসকদের আমন্ত্রণের ভিত্তিতে বিদেশে সেমিনার, সভা, সিম্পোজিয়াম, প্রশিক্ষণ বা কর্মশালা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো।

Header Ad

বুবলীকে টয়লেট দিবসের শুভেচ্ছা অপুর

ছবি: সংগৃহীত

শাকিব খানকে কেন্দ্র করে তাঁর দুই সাবেক স্ত্রী অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর দ্বন্দ্বটা নতুন কিছু নয়। ঢালিউড সিনেমার দুই নায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর সম্পর্কটা কেমন, সেটা একেবারেই অজানা নয় ভক্তদের। বর্তমানে যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বৈরিতায় রূপ নিয়েছে।

সবশেষ শবনম বুবলীর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে এই দুই নায়িকার কোন্দলের চিত্র আরও একবার প্রকাশ্যে এসেছে। গত ২০ নভেম্বর ছিল বুবলীর জন্মদিন। দিনটিতে পরিবারের মানুষদের নিয়েই ঘরোয়া পরিবেশে কেক কেটেছেন তিনি। সেই মুহূর্ত তুলে ধরেছেন ফেসবুকে। যেখানে ভালোবাসা জানিয়েছেন ভক্তরা।

তবে বুবলীর জন্মদিনের তিনদিন পর রোববার (২৪ নভেম্বর) অপু বিশ্বাস ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘লেট পোস্ট। হ্যাপি টয়লেট ডে, ২০ নভেম্বর।’ সঙ্গে একটি অট্টোহাসির ইমোজি জুড়ে দেন তিনি।

সরাসরি কিছু না বললেও পরোক্ষভাবে বুবলীর জন্মদিন নিয়েই ঠাট্টা করেছেন এই নায়িকা। যেটা বুঝতে কষ্ট হয়নি ভক্তদের। কারণ ২০২২ সালেও বুবলীর জন্মদিনে খোঁচা দিয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। ওই বছর বুবলী গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, জন্মদিন উপলক্ষ্যে শাকিব খানের কাছ থেকে ডায়মন্ডের নাকফুল উপহার পেয়েছেন তিনি।

সেই খবর ফেসবুকে শেয়ার করে অনেকগুলো হাসির ইমোজি দিয়ে অপু লিখেছিলেন, ‘কী যে মজা’! চুপ থাকেননি বুবলীও। দুজনে জড়িয়ে পড়েন ভার্চুয়াল যুদ্ধে। একজন অন্যজনকে নিয়ে নানা রকম কটু মন্তব্যও করেন।

সেই ঘটনার দুই বছর পর আবারও বুবলীর জন্মদিনে তাকে খোঁচা দিতে গেল অপু বিশ্বাসকে। যা মোটেও ভালোভাবে নেননি নায়িকার ভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার শিকার হচ্ছেন তিনি।

অপুকে উদ্দেশ্য করে কেউ লিখেছেন, বুবলীকে নিয়ে আপনার হিংসা কমছে না। কারো মন্তব্য, আপনাদের কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন। কেউ আবার অপুর মানসিকতার ধরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে গোপনে বিয়ে করেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। এরপর ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান আব্রাম খান জয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে ডিভোর্সের পর একই বছরের ২০ জুলাই বুবলীকে বিয়ে করেন শাকিব খান। সেই সংসারে ২০২০ সালের ২১ মার্চ সন্তান শেহজাদ খান বীরের জন্ম হয়। এর কয়েক বছরের মাথায় তাদের বিচ্ছেদের খবর শোনা যায়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জানুয়ারিতে আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল
বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না চিকিৎসকরা
বুবলীকে টয়লেট দিবসের শুভেচ্ছা অপুর
কেজি দরে বিক্রি হওয়া ভাস্কর্যটি মুক্তিযোদ্ধার নয়, আওয়ামী লীগের অপপ্রচার
ফলোঅন এড়িয়ে ১৮১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ
অটোরিকশা চলাচলে আপিল করবে সরকার
পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি
ভারতে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে বাংলাদেশি তরুণীদের
ব্রাজিলকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পেল আর্জেন্টিনা
আওয়ামী লীগের ২ সাবেক সংসদ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন
পলাশবাড়ীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্র-গুলিসহ যুবক গ্রেফতার
আইপিএল মেগা নিলাম সর্বশেষ: কোন দলে কোন ক্রিকেটার?
রেকর্ড এডিট দাবি, দশ লাখ টাকার চেক নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা
পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮২
হত্যা মামলায় গ্রেফতার ডিসি মশিউর ও এডিসি জুয়েল বরখাস্ত
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে রেকর্ড মৃত্যু, শনাক্ত আরও ১০৭৯
আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার পান্ত
আরও এক মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান
সৌদি আরবে এক সপ্তাহে ২০ হাজার অবৈধ প্রবাসী গ্রেপ্তার