বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রস্তুত শহিদ মিনার

শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রস্তুত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। ভাষা আন্দোলনের নানা অনুষঙ্গ দিয়ে আলপনায় সাজানো হয়েছে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ।

রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাত থেকে শুরু হবে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব। রাষ্ট্রীয় রীতি অনুসারে একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এরপর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। রাত পোহালেই সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শহিদ মিনারে ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে ভিড় করবে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় সিক্ত হবেন মাতৃভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী শহিদরা।

বিকালে শহিদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চারিদিকে ঝাড়ু দেওয়া ও পানি দিয়ে ধোয়া-মোছার কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। রং-তুলির আঁচড়ে রঙিন হয়ে উঠেছে পুরো প্রাঙ্গণ।

একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে রোদ উপেক্ষা করে আলপনা এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা।

শহিদ মিনারের পাশের দেওয়ালে আলপনা আঁকছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক্স ডিজাইন বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থী ইমরান মাহমুদ ইমু।

শহিদদের স্মরণে আলপনা আঁকার অনুভূতি জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর আমরা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে এই আলপনা আঁকি। অনেক ভালো লাগা কাজ করে৷ এই দেশের মানুষের জন্য, বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবন বিলিয়ে দিয়ে গেছেন তাদের স্মরণ করে অঙ্কন করা প্রতিটা রঙের আঁচড়ই অন্যরকম অনুভূতি জাগায়। মনে হয় যে দেশের জন্য আমিও কিছু করতে পারছি।

কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্রীর তিন্নির সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে এসেই আলপনার কাজ ধরি কিন্তু রাস্তা বন্ধ না থাকায় কাজের একটু সমস্যা হয় এরপর দুপুরের দিকে আলপনার কাজ সম্পন্ন করেছি। আলপনা আঁকতে আমার বেশ ভালো লাগে।’

কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র ফরহাদ হাসানের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি দশ বছর ধরে একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আলপনার কাজ করি। দেখতে পারছেন শহীদ মিনার প্রস্তুত আমাদের আলপনার কাজও শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ঢাবির প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র মিলে আলপনা আঁকার কাজ করে থাকি। এটা আমাদের বেশ ভালো লাগে।’

শহিদ মিনারের আশেপাশের দেওয়ালে বাহারি রঙে লেখা হয়েছে ভাষাশহিদের প্রতি উৎসর্গ করা কবিতার লাইন ও স্লোগান দিয়ে। আঁকা হয়েছে লোকজ মোটিফের রং-বেরঙের আলপনা। উক্তিগুলো হলো-‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি’, ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা’, ‘মাতৃভাষায় যাহার শ্রদ্ধা নাই সে মানুষ নহে’, ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!’, ‘তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালোবাসা’ ইত্যাদি।

শহিদ মিনার এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য শহিদ মিনার এলাকা বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। যানজট এড়াতে শহিদ মিনারের আশপাশ এলাকায় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে গত বছরের ন্যায় এবারও শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব সীমিত পরিসরে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পলাশী মোড় থেকে শহিদ মিনার পর্যন্ত রাস্তায় ৩ ফুট পর পর চিহ্ন থাকবে। এই চিহ্ন অনুসরণ করে সবাই পর্যায়ক্রমে শহিদ মিনারে যাবেন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পালিত হবে অমর একুশে। শ্রদ্ধা জানাতে সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫ জন এবং ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২ জন একসঙ্গে শহিদ মিনারের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারবেন। এ ছাড়া, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের উদ্দেশ্যে আসা সবাইকে করোনা টিকা সনদ সঙ্গে রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে আগেই।

শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শহিদদের উদ্দেশ্যে কাজ করার আনন্দটাই অন্যরকম। বাংলা ভাষার জন্য যারা শহিদ হয়েছেন তাদের জন্য প্রতিবছরই চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে ছাত্র এবং শিক্ষক একসঙ্গে কাজ করে। এটি একটি মিলনমেলার মতো। ক্লাসের সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক হয়, কাজের ক্ষেত্রে সে সম্পর্ক একটু আলাদা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন প্রথম বর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই তখন থেকেই আমি এই কাজ করি। অনেক ধরনের কাজ হয়, দেওয়ালে লেখা, আলপনা আঁকা, বিভিন্ন কবি বা বিশিষ্ট-জনের বাণী, কবিতা লেখা হয়, শহিদ মিনার বেদীতে বড় বড় ৯টি আলপনা হয়, রাস্তায় আলপনা হয়। এই কাজগুলো করতে পেরে গর্ববোধ হয়। বছরের এই সময়ে শহিদ মিনারে কাজের জন্য আমি অন্য কোনো কাজ রাখি না বা কোনো কাজে ব্যস্ত থাকি না। পুরো কাজে সশরীরে উপস্থিত হয়ে কাজ করি, এটা আমার অনেক ভালো লাগে।

শহিদ মিনার এলাকার আশপাশের হোটেল-মেসে তল্লাশি

যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলার জন্য। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনকে ঘিরে পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দেওয়া হয়েছে রোডম্যাপও। একই সঙ্গে ওই এলাকা ও আশপাশের হোটেল-মেসে চালানো হচ্ছে তল্লাশি। কাউকে মিনারের আঙিনায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চারদিকে সিসিটিভি স্থাপন করা হচ্ছে।

ছয়স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে (কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার) নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনো ঘটতি থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখানে ইউনিফর্মে পুলিশ থাকবে। পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডিবি, র‍্যাব, ও সোয়াটের টিম থাকবে। ছয় স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলতে পারেন।’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল বলেন, ‘আমাদের যারা গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেন, তাদের সঙ্গে আমরা আলাদা আলাদাভাবে বসেছি। তারা থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট করে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন। কোনো সংস্থা থেকে এখন পর্যন্ত ঝুঁকির কথা পাওয়া যায়নি।’

র‌্যাবের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহিদ মিনার এলাকাসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহিদ মিনারে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ ডগ স্কোয়াড কাজ করবে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, সাধারণ নিরাপত্তার পাশাপাশি ভার্চ্যুয়াল জগতেও রাখা হবে কড়া নজরদারি। নারীরা শ্রদ্ধা নিবেদনে এসে যাতে কোনো রকম হেনস্তার শিকার না হন সেটিও নিশ্চিত করা হবে।

শহিদ মিনারে প্রবেশের রাস্তা

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবাইকে পলাশী মোড় ও জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্য কোনো রাস্তা ব্যবহার করে শহিদ মিনারে প্রবেশ করা যাবে না।

শহিদ মিনার থেকে বের হওয়ার রাস্তা

শহিদ মিনার থেকে বের হওয়ার ক্ষেত্রে দোয়েল চত্বরের রাস্তা রোমানা চত্বরের রাস্তা দিয়ে বের হতে পারবেন। কোনোক্রমেই প্রবেশের রাস্তা দিয়ে বের হওয়া যাবে না।
যেসব রাস্তা বন্ধ থাকবে
১. বকশিবাজার-জগন্নাথ হল ক্রসিং সড়ক।
২. চাঁনখারপুল-রোমানা চত্বর ক্রসিং সড়ক।
৩. টিএসসি-শিববাড়ি মোড় ক্রসিং।
৪. উপাচার্য ভবন-ভাস্কর্য ক্রসিং।

ডাইভারশন ব্যবস্থা

ক. ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যত্রতত্র অনুপ্রবেশ বন্ধের লক্ষ্যে নীলক্ষেত, পলাশী মোড়, ফুলার রোড, বকশীবাজার, চাঁনখারপুল, শহিদুল্লাহ হল, দোয়েল চত্বর, জিমনেশিয়াম, রোমানা চত্বর, হাইকোর্ট, টিএসসি, শাহবাগ ইন্টারসেকশন রোড ব্লক দিয়ে গাড়ি ডাইভারশন দেওয়া হবে।

খ. ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টায় সায়েন্সল্যাব থেকে নিউমার্কেট ক্রসিং,কাঁটাবন ক্রসিং থেকে নীলক্ষেত ক্রসিং এবং ফুলবাড়িয়া ক্রসিং থেকে চাঁনখারপুল ক্রসিং পর্যন্ত প্রভাতফেরি উপলক্ষে সব ধরনের যাত্রীবাহী গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

সাধারণ নির্দেশনাবলী

ক. বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কবরস্থান ও শহিদ মিনারে যারা শ্রদ্ধার্ঘ্য ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন, তারা অনুগ্রহ করে মাস্ক পরিধান করবেন।

খ. কবরস্থান ও শহিদ মিনারে যারা শ্রদ্ধার্ঘ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে যাবেন, তারা অনুগ্রহ করে অন্যদের অসুবিধার কথা ভেবে রাস্তায় বসা বা দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকবেন।

গ. সর্বসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য ওপরে বর্ণিত রাস্তায় কোনো প্রকার প্যান্ডেল তৈরি না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ঘ. শহিদ মিনারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আর্চওয়ের মাধ্যমে তল্লাশি করে সবাইকে প্রবেশ করতে হবে। এক্ষেত্রে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ঙ. শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে প্রচার করা নির্দেশনা নাগরিকদের মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

চ. কোনো ধরনের ব্যাগ সঙ্গে বহন না করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

ছ. যেকোনো পুলিশি সহযোগিতার প্রয়োজনে শহিদ মিনার এলাকায় স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা

ক. একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেশিয়াম মাঠে ভিআইপি গাড়িগুলো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

খ. অন্যরা নীলক্ষেত-পলাশী, পলাশী-ঢাকেশ্বরী সড়কে তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন।

সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ১২টি পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কেউ পাস ছাড়া ঢুকতে পারবে না। সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রক্টরিয়াল টিম টহল দেবে।

 

কেএম/এপি/এমএমএমএ/

Header Ad
Header Ad

নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ, নাম ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’

নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে নতুন ছাত্রসংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ নামে আত্মপ্রকাশ করে সংগঠনটি।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন ছাত্র সংগঠনটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন ছাত্র সংগঠন আনার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের আবু বাকের মজুমদার, সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরসহ আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা একদল শিক্ষার্থী।

তারা ‘স্টুডেন্ট ফার্স্ট, বাংলাদেশ ফার্স্ট’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র নতুন সংগঠন গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

বৈষম্যবিরোধীদের আন্দোলনের এই অংশ যখন নতুন ছাত্র সংগঠনের ঘোষণা দিলেন, তখন আরেকটি অংশ জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে মিলে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করার কাজ প্রায় গুছিয়ে এনেছেন।

আগামী শুক্রবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন এ দলের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের সামনের সারিতে থাকা অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

নতুন দলটিতে যোগ দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেওয়া নাহিদ ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংক রক্ষা করা সম্ভব নয়: গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, দেশের ব্যাংক খাতের সমস্যা সবারই জানা। সুশাসন ফিরিয়ে আনতে এবং ব্যাংকগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে জোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংককে বাঁচানো সম্ভব হবে না। কারণ, কিছু ব্যাংক থেকে একটি মাত্র পরিবার বিপুল পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করেছে, যার ৮৭ শতাংশই ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ টাস্কফোর্স’ সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন আয়োজনে সহযোগিতা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ বিষয়ক টাস্কফোর্স।

গভর্নর বলেন, যেসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে সুশাসনের অভাব ছিল, সেগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ও ইউসিবি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে, তাদের ওপর আরোপিত কিছু বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। আকার বিবেচনায় এ দুটি ব্যাংকের উত্তরণ মানে দেশের সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর ৬০ শতাংশ সমস্যার সমাধান।

তিনি আরও বলেন, সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণগত মান যাচাই করা হচ্ছে। আগামী এপ্রিলের মাঝামাঝি এ সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়া যাবে, তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় আমানত বীমা স্কিমের আওতায় প্রতিটি আমানতকারীর জন্য অর্থ ফেরতের পরিমাণ ১ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর জন্য সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নতুন আইনের মাধ্যমে ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে বলে জানান গভর্নর। এর ফলে ঋণখেলাপি কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ক্ষমতা পাবে ব্যাংকগুলো, যা ঋণগ্রহীতাদের সতর্ক করবে। এছাড়া অর্থঋণ আদালতের সংখ্যা বাড়ানো এবং রিট কমানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন গভর্নর। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অপ্রয়োজনীয় কিছু বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং আপাতত ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হবে না।

ব্যাংক খাতের সংকট নিয়ে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ী নেতারাও মতামত দেন। ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “গভর্নর যখনই বলেন যে কিছু ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে বা দুর্বল অবস্থায় আছে, তখনই আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এটি বন্ধ করতে হবে।”

ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি’র চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বলেন, “যেকোনো নীতি প্রণয়নের আগে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত, কিন্তু সেটি হচ্ছে না।”

অধ্যাপক আবু আহমেদ দাবি করেন, “আইএমএফের শর্ত মেনে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করা হয়েছে। ৪.৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণের জন্য এত কঠোর শর্ত মানার প্রয়োজন ছিল না, কারণ এটি মাত্র দুই মাসের রেমিট্যান্সের সমান।”

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান মনে করেন, ব্যাংক খাতের সংকট ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের পর থেকেই শুরু হয়েছে। তার মতে, সরকার ঘোষিত খেলাপি ঋণের হার ৩০ শতাংশ বলা হলেও বাস্তবে তা ৫০ শতাংশেরও বেশি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, “২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছয় গুণ বেড়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আইন শিথিল করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে ব্যাংক খাতের সংকট আরও বাড়বে।”

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসেন বলেন, “অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি, তবে এ খাতে অতিরিক্ত ব্যয় ও দুর্নীতির কারণে সামাজিক সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ হচ্ছে না।”

ব্যাংক খাতের সংকট কাটিয়ে তুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, কাঠামোগত সংস্কার এবং রাজনৈতিক প্রভাব কমানো ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে ব্যাংক খাতে আরও বড় বিপর্যয় আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

বিরামপুরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

বিরামপুরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শামসুল আলম ওরফে আলমকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শামসুল আলম ওরফে আলম (৫২) বিরামপুর উপজেলা হরিকৃষ্ণপুর (বাধনসখা) গ্রামের মৃত ইসমাইল মোল্লার ছেলে।

থানা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিরামপুর উপজেলা হরিকৃষ্ণপুর (বাধনসখা) গ্রামে বিরামপুর থানার এএসআই লিটন মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি ফোর্স সাজাপ্রাপ্ত আসামি শামসুল আলম ওরফে আলমের বাড়িতে অভিযান চালান। এসময় স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল মামলা ৬৮/৯৪ এর ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শামসুল আলম ওরফে আলমকে গ্রেফতার করেন।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমতাজুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতারকৃত সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আলমকে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ, নাম ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’
চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যাংক রক্ষা করা সম্ভব নয়: গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর
বিরামপুরে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার
কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
রমজানে ঢাবির ক্যান্টিনে খাবারের মান বৃদ্ধিতে মনিটরিং সেল গঠনে ছাত্রদলের আবেদন
৬০ কোটি টাকায় মার্কিন নাগরিকত্ব বিক্রি করবেন ট্রাম্প
পরকীয়ার জেরে ভাঙতে যাচ্ছে ৩৭ বছরের সংসার, যা বললেন গোবিন্দ
ছাত্রদের নতুন দল থেকে সরে দাঁড়ালেন নাগরিক কমিটির জুনায়েদ ও রিফাত
‘শুধু রণাঙ্গণের যোদ্ধারাই হবেন মুক্তিযোদ্ধা, বাকিরা মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির আয়োজনে আন্তর্জাতিক ছাত্র সম্মেলন
৬ মাসে যেভাবে অর্থনীতি কামব্যাক করেছে সেটা মিরাকল: প্রেস সচিব
নতুন তথ্য উপদেষ্টা হচ্ছেন মাহফুজ আলম
টাঙ্গাইলে শিক্ষা সফরের ৪ বাসে ডাকাতি, বাঁধা দেওয়ায় শিক্ষকসহ দুইজনকে মারধর
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তিতে সম্মত ইউক্রেন  
ছোট অপরাধ বাড়লেও কমেছে বড় অপরাধ: আসিফ মাহমুদ  
নায়িকার মামলায় জাজের আজিজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা  
মধুর ক্যান্টিনে বিকেলে যাত্রা শুরু করবে সমন্বয়কদের নতুন ছাত্রসংগঠন
১৩ মার্চ ঢাকায় আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব  
গোল উৎসবে নিষ্প্রাণ বার্সার রক্ষণ, সেমিফাইনালের প্রথম লেগ ড্র
ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ৫৯ ফিলিস্তিনি বন্দির মৃত্যু