বর্তমান কমিশন কোনোভাবেই ব্যর্থ নয়: সিইসি
দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, আমরা আইনের মধ্যে থেকে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। দায়িত্ব পালনে কোনো রাজনৈতিক দলের চাপ ছিল না। হয়তো কোথাও কিছু ত্রুটি থাকতে পারে তবে আমরা সফল।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) শেষ কর্মদিবসে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কেএম নূরুল হুদা।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের শেষ কর্মদিবস আজ। সংবিধান অনুযায়ী পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় বিদায় নিল বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য চার কমিশনার।
সিইসি নূরুল হুদা বলেন, বর্তমান নির্বাচন কোনোভাবেই ব্যর্থ কমিশন নয়। কঠোর পরিশ্রম করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন ধরনের ৬ হাজার ৬৯০টি নির্বাচন করেছে। এই নির্বাচন করতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপ ছিল না ।
কমিশনের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে নিজের মূল্যায়ন জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য। কারও কোনো রকমের কথায় না, আইনের শাসনের মধ্যে থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কমিশন একা তো নির্বাচন করে না, কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্টেক হোল্ডারদের গাফিলতি বা দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে।
কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, পাঁচ বছরের দায়িত্বে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি, তবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের ওপর যে দায়িত্ব ছিল, কঠোর পরিশ্রম করে সে দায়িত্ব পালন করেছি।
সার্চ কমিটির বৈঠকের পর অনেকেই আপনাদের ব্যর্থ ও কোনো একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করেছেন এমন অভিযোগ তুলেন, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি? জবাবে নূরুল হুদা বলেন, বহু দল ও স্টোক হোল্ডার নিয়ে আমাদের ভোট করতে হয়। সেক্ষেত্রে অনেকের ওপর নির্ভর করতে হয়। হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে ত্রুটি হতে পারে। তবে আমরা কোনো রাজৈনতিক বা অন্য কোনো চাপে কখনও ছিলাম না। কঠোর পরিশ্রম করে এ পাঁচ বছর কাজ করে গেছি; নির্বাচন পরিচালনা করেছি। এটা ওনাদের মতামত, ওনারা বলতে পারেন।
সিইসি বলেন, ‘আমরা ৬ হাজার ৬৯০টি নির্বাচন করেছি। রুটিন কাজের বাইরেও অনেক কাজ করেছি। ইভিএমে নির্বাচন আমাদের বড় সফলতা।
তিনি বলেন, আইন সংষ্কারের বেশ কিছু কাজ করেছি। আরপিওসহ বাংলায় রূপান্তরসহ অনেকগুলো বিধিমালা করেছি।
তিনি বলেন, ২৪ হাজার ৮৮১ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। বিশেষ করে ইভিএমে। করোনার কারণে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে পারিনি। স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন সম্পন্ন করেছি। ইভিএম বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি। এনআইডি সহজীকরণ করা হয়েছে। ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের ওপর যে দায়িত্ব ছিল কঠোর পরিশ্রম করে সে দায়িত্ব পালন করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জমান উপস্থিত ছিলেন।
তবে মাহবুব তালুকদার উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি (মাহবুব তালুকদার) বরাবরই কিছু বিরোধীতা করেছেন। গণমাধ্যমের কাছে নিজস্ব বা ব্যক্তিগত মতামত তুলে ধরে ইসির ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছেন, আজও হয়তো সাংবাদিকদের ডেকে ওনার ঘরে লিখিত বক্তব্য পড়বেন।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কেএম নূরুল হুদা সিইসি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সঙ্গে ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালকুদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও সামরিক আমলা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। তাদের নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সংবিধান অনুযায়ী, ৫ বছর দায়িত্ব শেষে তাদের মেয়াদ শেষ হলো আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে কাজ চলছে। যতদিন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে না ততদিন নির্বাচন কমিশনের সচিব দায়িত্ব পালন করবেন।
এসএম/