বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য: রবার্ট ডিকসন
বাংলাদেশের বন্ধুদেশ হিসেবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাজ্য। স্বচ্ছ গনতন্ত্র বাংলাদেশে যাতে প্রতিষ্ঠিত হয় সেটাই চায় তারা।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানের এ কথা বলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন।
রবার্ট ডিকসন বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের আগে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের জন্যও। সবাই চাইবে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ। যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সব সময় একটি গনতান্ত্রিক সরকার চায়। এমনকি নির্বাচনে যাতে ভয়মুক্ত পরিবেশে হতে পারে এটাই প্রত্যাশা করে যুক্তরাজ্য।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রসঙ্গে হাই কমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা সব সময় এদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা যাতে বাংলাদেশ পায় এজন্য সব সময় যুক্তরাজ্য সরকার আন্তরিক।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রবার্ট ডিকসন বলেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে নিয়মতান্ত্রিকতাই প্রমান করে নির্বাচনের বিষয়ে সবাই আন্তরিক আছে। সার্চ কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন, ভালো দক্ষ কমিশন গঠিত হলে খুশি হবে যুক্তরাজ্য।
দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক সামনে আরও দৃঢ় হবে মন্তব্য করে রবার্ট ডিকসন বলেন, দুই দেশ নিবিড়ভাবে কাজ করে এসেছে। এই ধারা অব্যহত থাকবে।
যুক্তরাজ্য উচ্চ শিক্ষায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সব সময়ই অগ্রাধিকার দেওয়া হয় উল্লেখ করে রবার্ট ডিকসন বলেন, প্রকৃত মেধাবীরা যাতে আর্থিক সুবিধাসহ শিক্ষা অর্জনের সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করা হবে।
গুম ও মানবাধিকার প্রসঙ্গে হাই কমিশনার বলেন, মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন আছে, এটা যেমন ঠিক তেমনি, এ নিয়ে আরো আলাপ আলোচনার অবকাশ রয়েছে। ১৯৭২ সংবিধান অনুসারে মানবাধিকার রক্ষা স্পষ্ট করা হয়েছিল। এটা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এটা সব দেশের জন্যই চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতা হলো রাষ্ট্র যন্ত্রের আন্তরিকতা থাকতে হবে যাতে ন্যায় বিচার পায় সাধারণ মানুষ।
হাই কমিশনার বলেন, বিচার বহিভূত হত্যাকাণ্ড সব সময়ই উদ্বেগের বিষয়। মানুষের গণতান্ত্রিক চর্চার উন্মুক্ত পরিবেশ দরকার। এটা দিতে হবে।
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক প্রত্যাবাসন জরুরি। কিন্তু এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরো বেশি দ্বায়িত্ব রায়েছে। শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর পরিবেশ তৈরি না হওয়া হতাশাজনক। আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্য নিবিড়ভাবে কাজ করে চলছে।
মিয়ানমারে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রবার্ট ডিকসন বলেন, দেশটি বাণিজ্যের আর্কষনীয় স্থান ঠিকই। কিন্তু মানবতা তারআগে। দেশটিতে গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন দরকার।
ভারত মহাসাগরীয় কৌশল প্রসঙ্গে হাই কমিশনার বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি নৈতিকতা অনুযায়ী ভারত মহাসাগর চায় যুক্তরাজ্য।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বে শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে উল্লেখ করে হাই কমিশনার বলেন, করোনা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করেছে বিভিন্নভাবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় তহবিল গড়তেও বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা অব্যহত থাকবে বলে জানান রবার্ট ডিকসন।
ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু।
আরইউ/এমএমএ/