হ্যাকারদের সহায়তায় ইভিএমের ত্রুটি উন্মোচনের সুপারিশ!
ইভিএম বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি)। বৈঠকে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে একটি সুপারিশ হচ্ছে 'ইভিএমগুলো হ্যাকারদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আয়োজন করতে হবে। এই আয়োজন করতে পারলে হ্যাকাররা ইভিএমের অনেক ত্রুটি বের করে আনতে পারবে।'
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। এসময় ইসি’র যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান ও যুগ্মসচিব ফরহাদ আহম্মদ খান উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘ইভিএমের ধীরগতির বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হয়েছে আজ। ইভিএমের কারিগরি বিষয়ের সাথে যারা প্রথম থেকে এটার সাথে জাড়িত ছিলেন, তারা মতামত দিয়েছে। তারা বলেছেন, ইভিএমে ভোট দিতে প্রথম ধাপে ফিঙ্গার না মিললে ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড সময় নেয়। তারপর আবার ফিঙ্গার দিতে হয়। এজন্য ইভিএমে ভোটগ্রহণে দেরি হচ্ছে। আমাদের ভোটার ইকোজেশন কম থাকাতে ইভিএমে ভোট দিতে দেরি হচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে মেশিনের কারণে কোন ধীরগতি হচ্ছে না।’
অতিরিক্ত সচিব জানান, ‘কমিটির সভায় বেশ কিছু সুপারিশ এসেছে। সুপারিশগুলো কম্পাইল করে পরবর্তী কমিশনে এগুলো অনুমোদন করলে প্রকাশ করা হবে। যেই সুপারিশগুলো এসেছে সেগুলো আরও বেশি ব্যবহারযোগ্য কিভাবে করা যায় সেই বিষয়গুলো দেখা হবে। উল্লেখযোগ্য সুপারিশ হচ্ছে, ইভিএমের জন্য গবেষণাগারগার নির্মাণ করে প্রতিনিয়ত এগুলো আরও যুগপোযোগী করতে কাজ করতে হবে। আরেকটি সুপারিশ হচ্ছে, আমাদের ইভিএমগুলো হ্যাকারদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আয়োজন করতে হবে। এই আয়োজন করতে পারলে হ্যাকাররা ইভিএমের অনেক ত্রুটি বের করে আনতে পারবে। এই আয়োজনটা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।’
২০১১ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণ চালু করে। সে সময় তারা বুয়েটের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকায় মেশিন তৈরি করে নেয়। কিন্তু সেই মেশিনে ২০১৫ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিকল হয়ে পড়ে। ফলে বুয়েটের কাছ থেকে নেওয়া সকল মেশিন বাদ দিয়ে নতুন করে আরও উন্নতমানের ইভিএম প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেয় কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন। আর সেই সিদ্ধান্তের আলোকেই কে এম নূরুল হুদার বর্তমান কমিশন ২ লাখ টাকার দামের অধিক উন্নত মেশিন বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাজ থেকে তৈরি করে নিয়েছে।
বর্তমানে ইসির কাছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম রয়েছে। বর্তমানে ইভিএমের দুটি ইউনিট। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, আরেকটি ব্যালট ইউনিট। কন্ট্রোল ইউনিটে আঙুলের ছাপ মিললেই ব্যালট ইউনিটে সংশ্লিষ্ট ভোটারের ব্যালট পেপার ওপেন হয়। তারপর সেখানে পছন্দের প্রতীকে পাশে রাখা বোতামে চাপ দিয়ে ভোট দেওয়া সম্পন্ন করা হয়। যাদের আঙুলের ছাপ মেলে না, তারা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সহায়তা নিয়ে ব্যালট ইউনিট ওপেন করে ভোট দিয়ে থাকেন।
/এএস