শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের বই পাওয়া যাচ্ছে খোলাবাজারে!
শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের বই পাওয়া যাচ্ছে খোলাবাজারে। ছবি: সংগৃহীত
দেশে বিনামূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহের শুরু থেকে প্রত্যেকবার বছরের প্রথম দিন বই উৎসবে নতুন বই পেয়ে উৎফুল্ল হয়ে উঠতো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মন। এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে উৎসব করেই বই তুলে দেওয়া হলেও সকল বই এখনো হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা।
কিন্তু এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে কতিপয় অসাধু চক্র। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের বই খোলাবাজারে বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।
খোলাবাজারে বিক্রয় করছে এরকম তথ্য পাওয়ার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং এই চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নিরলসভাবে কাজ শুরু করে।
এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের বই খোলাবাজারে বিক্রয় ও মজুতদারি চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে আটকসহ দুই ট্রাক পুস্তক জব্দ করেছে ডিবি। আটককৃতরা হলো- সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫) ও মো: দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে সূত্রাপুরের বাংলা বাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে আটক করে ডিবি-লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম। এ সময় তাদের হেফাজত হতে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ১০ হাজার সরকারি বই জব্দ করা হয়।
ডিবি-লালবাগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ জানতে পারে একটি অসাধু চক্র বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলিতে বিভিন্ন গোডাউনে প্রথম হতে দশম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই বিক্রয়ের উদ্দেশে মজুদ করেছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে সেখানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ডিবি লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম। অভিযানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তুক বোর্ড, বাংলাদেশ এর ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম, ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম ও ৯ম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই জব্দ করা হয় এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিরাজুল ও দেলোয়ার নামের দুইজনকে আটক করা হয়। জব্দকৃত বইয়ের আনুমানিক মূল্য আট লক্ষ টাকা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কে ডিবি সূত্রে আরো জানা যায়, আটককৃতরাসহ অন্যান্য অবৈধ মজুতদারিরা বছরের শুরুতে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করা এবং অবৈধ উপায়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশে এসব বই মজুত করে বিক্রয় করে আসছিলো।
আটককৃত সিরাজুল ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এই মজুতদারি চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্যদের আটক করতে ডিবি পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী থেকে ঢাকায় পাচারকালে শেরপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া থেকে প্রায় ৯ হাজার মাধ্যমিকের বই জব্দ করেছে শেরপুর সদর থানা পুলিশ। বইগুলো অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইদুল আলম বলেন, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া এলাকা থেকে বইগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে মাইদুল (৩২) নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।