মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২৮ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির

সুখরঞ্জন বালি। ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে নিখোঁজ হন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার উমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা সুখরঞ্জন বালি।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে তিনি নিজের ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তার এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গুম, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক মর্মস্পর্শী উদাহরণ।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে ঢাকার আদালতে যাওয়ার সময় সুখরঞ্জন বালিকে অপহরণ করা হয়। তিনি জানান, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি অচেনা স্থানে নিয়ে যায়। চোখ বেঁধে তাকে অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে মাঝে মাঝে খাবার দেওয়া হলেও কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারত না।

এরপর তাকে আরেকটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে জোরপূর্বক সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে শারীরিক নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক এবং ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া হয়।

অপহরণের কয়েকদিন পর তাকে বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফ তাকে প্রচণ্ড মারধর করে এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে বশিরহাট ও পরবর্তীতে দমদম কারাগারে পাঠানো হয়।

দমদম কারাগারে পাঁচ বছর কারাবাসের সময় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তার সাক্ষাৎকার নেয়। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালে তিনি মুক্তি পান এবং দেশে ফিরে আসেন।

সুখরঞ্জন বালির অভিযোগ অনুযায়ী, বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে অপহরণ করে এবং বিজিবি’র সহায়তায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিভাবে অন্য একটি দেশের বাহিনীর হাতে তুলে দেয়?"

বিএসএফের হাতে নির্যাতনের দাগ এখনো তার শরীরে দৃশ্যমান। তিনি জানান, দমদম কারাগারে থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

দেশে ফিরে আসার পর তিনি পিরোজপুরে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে সাহস পাননি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয়দের আশ্রয়ে দিন কাটিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, গুম এবং পাঁচ বছরের কারাবাসের কারণে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয়েছেন।

২০১৮ সালে মুক্তির পর তিনি রাষ্ট্রের কাছে বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১,৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অভিযোগে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ভাষণে বলেন, "গুম কমিশনের প্রতিবেদন মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে তার দলিল।" তিনি আরও বলেন, "গুমের শিকার ব্যক্তিদের ভয় আজও কাটেনি।"

 

 

Header Ad
Header Ad

ফিক্সিংয়ে জড়িত বাংলাদেশি স্পিনার সোহেলি আক্তার ৫ বছর নিষিদ্ধ

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের অফস্পিনার সোহেলি আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের অফস্পিনার সোহেলি আক্তারকে ফিক্সিংয়ের অভিযোগে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও তিনি মাত্র দুটি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন।

সর্বশেষ ২০২২ সালে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামলেও এরপর তাকে দলে দেখা যায়নি। তবে ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন তিনি ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে প্রমাণিত হয়েছে।

বিশ্বকাপ চলাকালীন সোহেলি আক্তার তার সাবেক সতীর্থ লতা মণ্ডলকে মুঠোফোনে বড় অঙ্কের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন। তবে লতা সেই প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে বিষয়টি দলের কোচ ও ম্যানেজারকে জানান। বিসিবির মাধ্যমে আইসিসির অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে।

তদন্ত শেষে আজ (মঙ্গলবার) আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানায়, সোহেলি তাদের অ্যান্টি-করাপশন নীতিমালার পাঁচটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি নিজেও সকল অভিযোগ স্বীকার করেছেন। ফলে তার ৫ বছর মেয়াদী শাস্তি কার্যকর হয়েছে গতকাল ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আগামী পাঁচ বছর সব ধরনের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম থেকে দূরে থাকতে হবে সোহেলিকে। আইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্রিকেটের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে তারা।

Header Ad
Header Ad

তালিকা থেকে প্রায় ১৬ লাখ মৃত ভোটার বাদ পড়ছে: ইসি আনোয়ারুল

বক্তব্য রাখছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে জাতীয় নির্বাচন হয় সে লক্ষ্যেই প্রস্ততি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের কাছে ভালো নির্বাচন না করার কোনো বিকল্প নেই। এবার প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ছে প্রায় ১৬ লাখ মৃত ভোটার।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনে কক্ষে আয়োজিত ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচন কমিশনার একথা বলেন।

তিনি বলেন, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ ভোটার তালিকা করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, এই সময়ে অনেকে বাদ পড়েছেন বা বাড়িতে ছিলেন না। যারা ভোটার তালিকা হালনাগাদ থেকে বাদ পড়েছেন তাদের জন্য সামনে সুযোগ থাকছে। এবার প্রথমবারের মতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় থেকে প্রায় ১৬ লাখ মৃত ভোটার বের হয়েছে, যা হালনাগাদ ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে।

তিনি বলেন, আমাদের ভালো একটা নির্বাচন এবং অতীতের গ্লানি মুছে ফেলতে কি কি করণীয় তা আমরা পর্যালোচনা করে রেখেছি। সংস্কার প্রতিবেদন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন সংস্কারের বিষয়ে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে তা আমরা পেতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন পেয়েছি, সেখানে ভালো ভালো প্রস্তাব এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে যে বিষয়গুলো আসবে সেগুলো দেখা হবে। সবার চাহিদা অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন করতেই হবে, পেছনে ফেরার সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন শতভাগ এবং কমিশনের ওপর চাপ নেই তবে একটি সুষ্ঠু ও ভালো নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে জাতীয় নির্বাচন হয় সে লক্ষ্যই প্রস্ততি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের কাছে ভালো নির্বাচন না করার কোনো বিকল্প নেই। দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন মহলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে সভায় নির্বাচন কমিশনের একান্ত সচিব মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলী, পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াসমিন খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলী,‌ জেলা নির্বাচন অফিসার মো. নাজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ওয়াজ মাহফিলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোশারফ হোসেন (৪২) নামের একজন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে হরিণাকুণ্ডুর হাকিমপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ হয়। নিহত মোশারফ হোসেন ওই গ্রামের খবির মণ্ডলের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দবির মণ্ডল ও তার ভাই খবির মণ্ডলের সঙ্গে একই গ্রামের মহিন, বকুল ও সাঈদের সমর্থকদের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন নিয়ে বৈঠকের সময় দুই পক্ষের মধ্যে তর্ক হয়। এর জেরে মঙ্গলবার সকালে দবির ও মোশারফ গ্রামের মাঠে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া দুই পক্ষই স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ৮ থেকে ১০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মোশারফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এম এ রউফ খান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় মোশারফ হোসেনকে কুপিয়ে আহত করা হয়, পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। ইতোমধ্যে মাহিন নামের একজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ফিক্সিংয়ে জড়িত বাংলাদেশি স্পিনার সোহেলি আক্তার ৫ বছর নিষিদ্ধ
তালিকা থেকে প্রায় ১৬ লাখ মৃত ভোটার বাদ পড়ছে: ইসি আনোয়ারুল
মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১
কুড়িগ্রাম সীমান্তে লাগানো সিসি ক্যামেরা খুলে নিতে রাজি হলো বিএসএফ
আমাদের এখানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান আছে, থাকবে: মমতা
টেকনাফে নৌকাসহ ৪ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি
ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ'র ওপর নম্বর কমালো কুবি প্রশাসন
চাঁদাবাজির অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ থানার ১৩ পুলিশ সদস্য ক্লোজড
আমির খানের লুকে পলক, নেট দুনিয়ায় ট্রল
৭ বছর পর চুরির মামলায় কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের দুই সাংবাদিক আসামি
আদানিকে চুক্তির ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পুরোটাই দিতে বলেছে বাংলাদেশ
সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৬ ডিসেম্বর
অবশেষে সাক্ষাৎ হচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস-নরেন্দ্র মোদির
৭ম হোস্টিং সামিট অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ফেব্রুয়ারি
চাকরি ফিরে পেতে রাজপথে বিডিআর সদস্যরা, সরকারকে আলটিমেটাম দিলেন মাহিন
ধ্বংসস্তুপের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমরা কাজ করছি: আসিফ নজরুল
প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর সুপারিশ
বাংলা একাডেমির নামে প্রতারণা: হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে লক্ষাধিক টাকা
কোনো ‘শয়তান’ যেন পালাতে না পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিদ্রোহী ১৮ জনকে বাদ দিয়েই ৩৭ নারী ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফের চুক্তি