পদত্যাগ করেছেন মুরাদ
ছবি : সংগৃহীত
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিবে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন সচিবের পক্ষে তার একান্ত সচিব মাহমুদ ইবনে কাসেম।
গতকাল সোমবার (৬ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার বাসভবনে প্রতিমন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন বলে সাংবাদিকদের জানান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান সম্প্রতি দেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাহাত্তরের সংবিধান পুনপ্রবর্তন ও সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাদ দেওয়ার পক্ষে জোরালো বক্তব্য দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায় আসেন। এরপর তার ‘নারীবিদ্বেষী’ বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয় চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও চিত্রনায়ক ইমনের সঙ্গে ফোনালাপ। ফাঁস হওয়া ওই কথোপকথনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে হোটেলে তার কক্ষে যাওয়ার কথা বলেন। তিনি ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনারও হুমকি দেন। তার কণ্ঠে ‘অশ্রাব্য’ কিছু শব্দ উচ্চারিত হয়।
ফোনালাপে থাকা চিত্রনায়ক ইমন ইতিমধ্যে সেটি স্বীকারও করেছেন।
ডা. মুরাদ হাসান শনিবার (৪ ডিসেম্বর) একটি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে অপর আলোচক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়াকে ‘মানসিক রোগে আক্রান্ত’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি নিজে একজন ‘চিকিৎসক হিসেবে’ পাপিয়ার 'চিকিৎসা দরকার' বলেও মন্তব্য করেন।
এর দুদিন আগে অনলাইনে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার পরিবারের এক নারী সদস্যকে উদ্দেশ্য করে অশালীন বক্তব্য দেন ডা. মুরাদ হাসান। এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়েও ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন।
এই দুই ঘটনার পর ডা. মুরাদ হাসানের বহিস্কার চেয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে।
ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য। পেশায় চিকিৎসক এই রাজনীতিক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। পরে ২০১৯ সালের মে মাসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।
এনএইচ/টিটি/