সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর ডাকাতদের আত্মসমর্পণ, ভল্ট ও জিম্মিরা অক্ষত
র্যাব-১০ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার কেরাণীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকে হানা দেওয়া ডাকাতরা সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর আত্মসমর্পণ করেছে; জিম্মিদশা থেকে অক্ষত অবস্থায় মুক্ত হয়েছে গ্রাহক-কর্মীদের সবাই। ব্যাংকের ভল্টও সুরক্ষিত আছে।
র্যাব-১০ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার বলেন, “রূপালী ব্যাংকে ঢুকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা তিন ডাকাত ৩টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তাদেরকে কেরাণীগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে কেরাণীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় হানা দেয় একদল সশস্ত্র ডাকাত। তাতে ব্যাংকের গ্রাহক ও কর্মী মিলে ১৬ জন ভেতরে জিম্মি দশায় পড়েন।
বিকাল সাড়ে ৫টায় তিন ডাকাত আত্মসমর্পণ করে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা তাপস কর্মকার বলেন, “ভেতরে ১৬ জন জিম্মি ছিলেন, যাদের মধ্যে চারজন ব্যাংক কর্মকর্তা আর বাকি ১২ জন গ্রাহক। প্রত্যেকেই অক্ষত রয়েছেন। বিনা রক্তপাতে তিন ডাকাতকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
ডাকাতদের আত্মসমর্পণের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আমরা তাদের সঙ্গে আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তাব দেই। আলোচনায় এক পর্যায়ে তারা আমাদের কাছে আত্মসমর্পণের জন্য রাজি হন।
তবে বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে নিরাপদে তাদেরকে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। একটি বন্দুক জানালা দিয়ে ফেলা হয় তারা আত্মসমর্পন করেন। বাকি অস্ত্র ব্যাগে ভরে বাইরে ফেলে দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে একে একে ডাকাত দলের সদস্যরা বেড়িয়ে আসে। তখন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তিন ডাকাত সদস্যকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
কেরাণীগঞ্জ মডেল থানার ওসি সোহরাব আল হোসাইন বলেন, “তিন ডাকাত আমাদের হেফাজতে রয়েছে। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।”
পুলিশের কেরাণীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডাকাত পড়ার খবর পেয়ে প্রথমে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে ব্যাংকের গেইটে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে ব্যাংকের ওই শাখার চারপাশে অবস্থান নেয়। তারা আলোচনার মাধ্যমে ডাকাতদের আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা চালান।
ব্যাংকে ডাকাত দলের হানা দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। ব্যাংকের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশ, র্যাব ও সেনা সদস্যরা তাদের বার বার দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাকাত দলের সদস্যরা চিরকূটের মাধ্যমে নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়েছিল। সেই মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে ডাকাত দলের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তিন ডাকাত সদস্যেরই বয়স ১৮ থেকে ২২ বছরের মধ্যে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকাত সদস্যদের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ডাকাতরা ব্যাংকে ঢোকে। এ সময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাতির খবর জানানো হলে স্থানীয় কয়েকশ লোক ব্যাংকের ওই শাখা ঘিরে ফেলেন ও বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যাংকটি ঘেরাও করে রাখে।