আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় মিডিয়া: উপদেষ্টা নাহিদ
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নতুন বাংলাদেশে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি চলবে না। যেকোনো রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। এই বাস্তবতা মেনে নিতে হবে ভারতকে। দেশটির গণমাধ্যম আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নেই মিথ্যাচার করছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় জুলাই অভ্যুত্থানের পর ভারতের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন কীভাবে দেখছেন, প্রশ্নের জবাবে এ উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তাদের জনগণকে উত্তেজিত করে জিনিসটি (দূতাবাসে হামলা) পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের যা নজর এড়ানোর কিছু নেই।
তার মতে, সহকারী হাইকমিশনে হামলা কিংবা সীমান্তে প্রাণহানির পর ভারতের দুঃখ প্রকাশ এক রকমের প্রহসন।
নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করে বলেন, আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে এক ধরনের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ছিল। ভারতের সাথে অনেক অসম চুক্তি বিগত সরকার করেছে। আমরা বলেছি, বর্তমান সরকার ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ এ ধরনের নতজানু পররাষ্ট্র নীতি রাখবে না। সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে যেকোনও রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক করবে। ভারতকে নতুন বাস্তবতা মেনে নিতে হবে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি ভারতীয় মিডিয়া একরকম চাপিয়ে দিচ্ছে বলেও মত তার
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় মিডিয়া এটা তৈরির চেষ্টা করছে, আমার দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে এই অনাস্থা তৈরির চেষ্টা করছে। আমরা এটাই বলবো যে, খারাপ হোক, ভালো হোক, এই দেশ আমাদের, মিলেমিশে আমাদের থাকতে হবে। আমাদের বিপদে রক্ষা করতে কেউ বাহির থেকে আসবে না। আমরা কোনও সংকটকে উড়িয়ে দিচ্ছি না। আমরা জানি, আমাদের দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ধরনের অনিরাপত্তাবোধ আছে এবং সেটা আসলে বিগত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক সরকার, বিশেষত আওয়ামী লীগ তাদেরকে তাদের ওপর যে ধরনের দমন-পীড়ন করেছে তার কারণে। অথচ আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে সংখ্যালঘুবান্ধব সরকার হিসেবে বারবার বহির্বিশ্বে দেখাতে চেয়েছে।
তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ বাস্তবায়ন করতে চায় বলেই ভারতীয় মিডিয়া এতটা আগ্রাসী। ভারতীয় মিডিয়া এখন যা প্রচার করছে, তা আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ। ভারতকে আমরা বারবার বলেছি, আনুষ্ঠানিকভাবেও বলেছি যে, এই ধরনের অপপ্রচার না করতে, বাংলাদেশ যখন শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে, তখন যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরত দেয়া হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগ করেছে সব মত-ধর্মের মানুষ। কিন্তু সেসময় ভারতের গণমাধ্যম কেন সরব ছিল না- সে প্রশ্নও তোলেন তথ্য উপদেষ্টা।
নাহিদ ইসলাম বলেন, যখন আমরা রাস্তায় নেমেছি, তখন দেখি নাই আমরা কে হিন্দু, কে মুসলমান। যখন আমাদের বিরুদ্ধে গুলি চালানো হয়েছে, হিন্দু-মুসলমান দেখে গুলি চালানো হয়নি। ফলে তখনও যে এত সংখ্যালঘু মারা গেলো, সেটা নিয়ে ভারত কোনো বার্তা দেয়নি।
কূটনৈতিক স্থাপনার নিরাপত্তা আর সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত সরকার আরও সচেষ্ট হবে বলে আশাবাদী অন্তর্বর্তী সরকারের তরুণ এই উপদেষ্টা।