মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
আজ মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী । ছবি: সংগৃহীত
আজ ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে দাফন করা হয়। মহান এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার পরিবার, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ তার ভক্ত ও মুরিদানবৃন্দ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।
মাওলানা ভাসানী ছিলেন শোষিত, অবহেলিত ও মেহনতি মানুষের অবিচল অধিকার রক্ষাকারী। জাতীয় সংকটের মুহূর্তে জনগণের পাশে থেকে তাদের আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতেন। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে তিনি জাতীয় স্বার্থকে সর্বদা প্রাধান্য দিয়েছেন। ক্ষমতার কেন্দ্রে অবস্থান করেও কখনো ক্ষমতার মোহে আবিষ্ট হননি। সাধারণ জীবনযাপন এবং সাদাসিধে ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি এ দেশের মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং আত্মত্যাগের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
শোষণমুক্ত, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তার অবদান বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশ এবং মুক্তির সংগ্রামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া মাওলানা ভাসানী তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। কৈশোর-যৌবন থেকেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গঠনে তিনি প্রধান নেতাদের একজন ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতিও ছিলেন তিনি।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল থেকে তার মাজারে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। ইতোমধ্যেই তার ভক্ত ও মুরিদানবৃন্দ সন্তোষে এসে জড়ো হয়েছেন। এ উপলক্ষে মাওলানা ভাসানী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী ‘ভাসানী মেলা’ চলছে, যা স্থানীয় বাসিন্দা এবং ভক্তদের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দিয়েছে।
মাওলানা ভাসানীর মতো নেতার জীবন ও কর্ম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অনুপ্রেরণা জোগাবে। শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে তার আদর্শ আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।