রেলে মৌখিক ও টেলিফোনে টিকিট বিতরণ বন্ধ, সিস্টেমের স্বচ্ছতা আনতে পরিবর্তন
মৌখিক বা টেলিফোনে রেল টিকিট বিতরণ বন্ধ: রেলপথ উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ রেলওয়েতে টিকিট বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে মৌখিক ও টেলিফোনে টিকিট প্রদান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান। তিনি জানিয়েছেন, রেলের টিকিট কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের অধিকার। টিকিট ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য আরও সহজ ও স্বচ্ছ হবে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর রেলভবনে ‘রুট রেশনালাইজেশন ও ই-টিকিটিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে রেলের টিকিটিং পদ্ধতির বেশকিছু সমস্যা শনাক্ত করা হয়েছে। এই প্রেজেন্টেশনে দেখা গেছে, এক স্টেশনে টিকিট না থাকলেও অন্য স্টেশনে তা পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও, একই গন্তব্যে ভিন্ন সময়ে ট্রেনের টিকিট পাওয়া না যাওয়ার সমস্যাও উল্লেখ করা হয়।
ড. ফাওজুল জানান, অনলাইন টিকিট ব্যবস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘সহজ’ কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন যাত্রীরা সহজেই দেখতে পারেন, কোন স্টেশনে কোন ট্রেনের টিকিট কবে ও কখন পাওয়া যাবে। সহজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সমস্যাগুলো আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে সমাধান হবে। যাত্রীরা যদি এরপরে কোন সমস্যা সম্মুখীন হন, তাহলে তারা অভিযোগ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, রেলওয়ের অনেক কর্মকর্তাই টেলিফোনে টিকিট সংগ্রহ করেন। তবে রেল কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি জনগণের সম্পদ। সাধারণ যাত্রীদের জন্য রেলপথকে আরও বেশি সহজলভ্য ও সুষম করার লক্ষ্যে টিকিটের সমস্ত বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রেলের কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ কোনো সুবিধা থাকবে না এবং এই সিদ্ধান্ত এখন থেকে কার্যকর হবে।
টিকিটের কালোবাজারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, রেলওয়ের কর্মীদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত এক মাসে রেলওয়ের টিকিট সমস্যার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা চলছে এবং শিগগিরই এসব সমস্যার সমাধান করা হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা জানান, রেলপথে যাত্রী পরিবহনের স্বচ্ছতা ও সেবার মান উন্নয়নে আরও লোকোমোটিভ ও কোচ সংযোজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও যেসব রুটে যাত্রী নেই, সেসব রুটের পুনর্বিন্যাস এবং জনপ্রিয় রুটগুলোতে অতিরিক্ত ট্রেন ব্যবস্থার পরিকল্পনা চলছে। প্রবাসীদের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা যেমন ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটেও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে।
রেলওয়ের চলমান প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার জন্য রিভিউ করা হচ্ছে। আগের তুলনায় এখন দরপত্র প্রক্রিয়া আরও উন্মুক্ত হচ্ছে যাতে সকল যোগ্য প্রতিষ্ঠান কাজের সুযোগ পায়।