বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫ | ৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

যেভাবে পাঁচ ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করেছে বেক্সিমকো

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। ছবি: সংগৃহীত

সরকার পতনের পর থেকেই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। বেরিয়ে আসছে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট ও পাচারের সব তথ্য। এবার বেক্সিমকো গ্রুপের দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে একাধিক লেনদেনের মাধ্যমে ৫ ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ কোম্পানি দুটি হলো, বেক্সিমকো লিমিটেড এবং বেক্সটেক্স গার্মেন্টস। এই দুই প্রতিষ্ঠান ২০১১ সালে রাষ্ট্রীয় খাতের সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকে ৬০০ কোটি টাকার ঋণপত্র খোলে। পরে সুদাসলে তা হাজার কোটি ছাড়িয়ে যায়। ফলে এ ব্যাংকগুলো তখনই বিপদে পড়ে যায়।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানায়, সেই সময়ে অনিয়মের তথ্য দুদক সংগ্রহ করে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ক্ষমতার প্রভাবে তখন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি সংস্থাটি। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় এলসি (ঋণপত্র) খুলে বেক্সিমকো গ্রুপের ওই দুই কোম্পানির মধ্যে বাণিজ্য হয়। সুতা বিক্রেতা বেক্সটেক্সের হয়ে সোনালী ব্যাংক, আর বেক্সিমকো লিমিটেডের হয়ে জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও এক্সিম ব্যাংক ক্রয়মূল্য পরিশোধের স্বীকৃতি (এলসি এক্সসেপটেন্স) দেয়। এই স্বীকৃতি ধরেই সোনালী ব্যাংক থেকে এসব টাকা বের করে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ হয় প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা। পরে আরও বেশ কয়েকটি স্থানীয় এলসির অর্থও পরিশোধ করেনি বেক্সিমকো লিমিটেড। সব মিলিয়ে হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ হাতিয়ে নেয় কোম্পানি দুটি।

এদিকে গতকাল সালমান এফ রহমান এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানাধীন ১৭ প্রতিষ্ঠানের ঋণসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তলব করে চিঠি দিয়েছে দুদক। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণপূর্বক আত্মসাৎসহ হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, কাগজপত্রে বেক্সিমকো গ্রুপের দুই কোম্পানির লেনদেনের তথ্য-উপাত্ত ছিল ব্যাংকগুলোতে। কিন্তু বেক্সিমকো লিমিটেড বেক্সটেক্সের কাছ থেকে সুতা কিনেছে কি না, তার তথ্য ছিল না। ব্যাংকগুলোর ওই অর্থের একটা বড় অংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা হয়।

অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, বেক্সিমকো লিমিটেড স্থানীয় মুদ্রায় আমদানি এলসি (ঋণপত্র) খুলেছে জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও এক্সিম ব্যাংকে। তার বিপরীতে বেক্সটেক্স সোনালী ব্যাংক থেকে বিক্রয় এলসি পাঠিয়েছে (অর্থের নিশ্চয়তা চেয়ে) উল্লিখিত চার ব্যাংকের কাছে। চার ব্যাংক বেক্সিমকো লিমিটেডের পক্ষে এই অর্থপ্রাপ্তিতে স্বীকৃতি অনুসারে বেক্সটেক্সকে অর্থ পরিশোধও করে দিয়েছে। কিন্তু এই চার ব্যাংক আর সোনালী ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করেনি। স্থানীয় এসব এলসির মেয়াদ ১৮০ দিনের। তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়-একটি ব্যাংকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারির বিভিন্ন সময়ে এই এলসিগুলো খোলা হয়েছিল। অর্থাৎ আগস্ট মাসের বিভিন্ন সময় এই এলসিগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়।

জানা গেছে, ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিরোধ নিষ্পত্তি চেয়ে সোনালী ব্যাংক একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে তারা জানিয়েছিল- ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ পাওনার পরিমাণ হচ্ছে ৬৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের কাছে ১৪টি এলসির স্বীকৃতির বিপরীতে তাদের পাওনা প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের কাছে সাতটি এলসিতে তাদের পাওনা ১০৯ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংকের নয়টি এলসির স্বীকৃতির বিপরীতে তাদের পাওনা ৭৫ কোটি টাকা এবং এক্সিম ব্যাংকের স্বীকৃতি দেওয়া পাঁচটি এলসির বিপরীতে তাদের পাওনা তখন দাঁড়িয়েছিল ১১১ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সোনালী ব্যাংকের লিখিত ৬৪৫ কোটি টাকার দাবি নিষ্পত্তির চেয়েও বেশি অঙ্কের মেয়াদোত্তীর্ণ অর্থ আটকা পড়ার তথ্যও তখন পাওয়া যায়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা (৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান এফ রহমানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি অনুযায়ী পরিচালিত সিআইডির অনুসন্ধানে বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, তার ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ও বেনামে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার এবং অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি।

Header Ad
Header Ad

গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ৫৯০ গ্রাম হিরোইন উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ৩ যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আতিকুর রহমান এই দণ্ডাদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে সোহেল রানা (৪১), একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৩৭) ও আসাদুল ইসলাম (৩২)।

দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনেই গ্রেফতারের পর থেকে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে ছিলেন। রায়ের আগে দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

এছাড়া খালাস পাওয়া দুই আসামি হলেন, শ্রীমন্তপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪৫) ও আনারুল ইসলাম (৪০)। তারা দুইজন জামিনে ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম প্রামাণিক জানান, ৫৯০ গ্রাম হিরোইন উদ্ধারের মামলায় আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামিদের উপস্থিতিতে বিচারক আজ এ রায় দেন।

মামলার বরাত দিয়ে জেলা জজ আদালতের স্টোনে মো. সাইদুর রহমান জানান, ২০২১ সালে ১৬ই জুলাই গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে মাদক বেচাকেনার উদ্দেশে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের ট্রাক চালক সোহেল রানা, আবুল কালাম আজাদ, আসাদুল ইসলাম, শফিকুল ও আনারুল একটি ট্রাকসহ অবস্থান করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পেট্রোল পাম্পের সামনে থাকা ট্রাকটি তল্লাশি করে তাদের আটক করে গাইবান্ধা র‍্যাব-৩ এর সদস্যরা।

এসময় ট্রাকের ক্যাবিনে থাকা পলিথিনে মোড়ানো দুটি প্যাকেটে থাকা ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ৫৯০ গ্রাম হিরোইন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তদন্ত শেষে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুইজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ রাষ্ট্রীয় অতিথি যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: সংগৃহীত

পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচের সঙ্গে সাক্ষাতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘কিছু বাধা আছে। আমাদের সেগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

অতীতের কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বালুচ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব অধিকারে বিশাল আন্ত আঞ্চলিক বাজার রয়েছে। আমাদের এটি ব্যবহার করা উচিত। আমরা প্রতিবার বাস মিস করতে পারি না। দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত বিটুবি (ব্যবসা থেকে ব্যবসা) মিথস্ক্রিয়া এবং সব স্তরে সফর বিনিময়ের প্রয়োজন।’

২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ব্যাবসায়িক চেম্বার এফপিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করে এবং এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আশা করেন, ‘এপ্রিলের শেষে দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার করবে।’

তিনি সর্বদা সার্কের কাঠামোর মধ্যে পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পছন্দ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক স্থবির হয়ে পড়ায় আমরা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে মিস করে চলেছি। আমাদের বাধাগুলো অতিক্রম করতে হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের পাশাপাশি নিউইয়র্কে এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতিতে এই সাক্ষাতের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সার্ক, ওআইসি এবং ডি-৮-এর মতো বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরামে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাবে।

এ সময় এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম পাকিস্তানি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে বাংলাদেশ সফর করছেন আমনা বেলুচ।

Header Ad
Header Ad

তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করা সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন কার্যকরে আপাত বিরতি দিল দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আইনটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারার কার্যকারিতা স্থগিত রাখার আদেশ দেয়।

এই আদেশের ফলে আপাতত নতুন করে কোনো সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ ঘোষণা করা, বোর্ডে সদস্য নিয়োগ এবং ওয়াক্ফ সম্পত্তির মালিকানায় পরিবর্তন আনা যাবে না। একই সঙ্গে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, পূর্বে ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসা জমির মালিকানা সম্পর্কিত অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে না।

বুধবার থেকে সংশোধিত ওয়াক্ফ আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দাখিল হওয়া ৭৩টি আবেদনের শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। এর মধ্যে পাঁচটি আবেদন প্রাথমিকভাবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে, বাকি আবেদনগুলোর নিষ্পত্তি এই শুনানির মাধ্যমে ধরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “শত বছর আগে গড়ে ওঠা ওয়াক্ফ সম্পত্তির মালিকানা প্রমাণে লিখিত কাগজপত্র না থাকাও বাস্তবতা। কিন্তু তাই বলে পূর্ববর্তী আদালতের স্বীকৃতি কি নতুন আইনে বাতিল হয়ে যাবে?”

সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সরকারি জমি বা বিরোধপূর্ণ জমিকে ওয়াক্ফ হিসেবে ঘোষণার সুযোগ থাকছে না। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য ওয়াক্ফ বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখার বিধান যুক্ত হওয়ায় ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে মুসলিম সমাজে।

প্রধান বিচারপতি সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, “আপনারা কি হিন্দু দেবোত্তর বোর্ডে মুসলিম সদস্য নিয়োগ করবেন?”—এই প্রশ্ন আদালতের উদ্বেগের গভীরতাকে স্পষ্ট করে তোলে।

আদালতে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবাল ও অভিষেক মনু সিংভি জানান, ভারতে অন্তত আট লাখ ওয়াক্ফ সম্পত্তির অর্ধেকই ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ আওতায় পড়ে। নতুন আইনে এই সম্পত্তিগুলো হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

সরকারের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতের কাছে সময় চেয়ে জানান, ওয়াক্ফ বোর্ড ও কাউন্সিলের সদস্য নিয়োগ সংক্রান্ত ধারা আপাতত স্থগিত রাখা হবে। আদালত তার আবেদনে সাড়া দিয়ে সরকারের লিখিত ব্যাখ্যার জন্য এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে।

এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হন। ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যে আইন কার্যকর না করার ঘোষণা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি এই অবস্থানকে ‘ধর্মীয় তোষণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, ডিএমকে, সিপিআইসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংগঠন যেমন জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দ ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এই আইন বাতিলের দাবি তুলেছে। কেউ কেউ আইনটির সম্পূর্ণ রদ চাইলেও অনেকে বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

সবশেষে, আদালত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে কেন্দ্র করে সিদ্ধান্ত নেবে— আদালতের রায়ে স্বীকৃত ওয়াক্ফ বাতিল হবে কিনা, বোর্ডে অমুসলিম সদস্য রাখার বৈধতা এবং বিতর্কিত জমিকে ওয়াক্ফ হিসেবে গণ্য করার সুযোগ থাকবে কি না।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
নিজেকে বরিশাল সিটির মেয়র ঘোষণার দাবিতে মামলা করলেন ফয়জুল করীম
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের আহ্বান বাংলাদেশের
টাঙ্গাইলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে কেন্দ্র সচিব ও পরীক্ষার্থীসহ আটক ৬
৭১ এর গণহত‍্যার জন‍্য ক্ষমা ও সম্পদ ফেরত দেয়া নিয়ে আলোচনায় সম্মত পাকিস্তান
এবার স্ত্রী রিয়া মনিকে তালাকের ঘোষণা দিলেন হিরো আলম
সাবেক এমপি বাহারের জমি-বাড়ি জব্দ, ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত
বিজ্ঞানীদের সফলতা: ইমপ্লান্ট নয়, নতুন করে গজাবে ক্ষয়ে যাওয়া দাঁত!
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে তরুণকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব
অবশেষে আসছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন-৫’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ‘বি’ ইউনিটের ফল প্রকাশ
ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ? জেনে নিন ১০টি কার্যকর সমাধান
সংস্কারের নাম উচ্চারণের আগেই খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি
১ মে থেকে ডিম-মুরগি উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা, ১০ দফা দাবি পোল্ট্রি খামারিদের
গাজায় এক মাসে গৃহহীন প্রায় ৫ লাখ মানুষ: জাতিসংঘ
বাংলাদেশি জন্মসনদ পাচ্ছেন কানাডিয়ান তারকা সামিত সোম, মাঠে অভিষেক জুনে!