আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে উৎসব করার মতো সমাজ চাই না: ড. ইউনূস
ছবি: সংগৃহীত
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে উৎসব পালন করাটা প্রত্যাশিত নয় জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্রসমাজ আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন একটি সমাজ গঠনের চেষ্টা করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে পূজা বা যেকোনো উৎসব পালন করতে যেন না হয় সেই উদ্যোগ নিতে হবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্গাপূজার আনন্দ এবার বিশেষ আনন্দে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, চারদিনের ছুটি পেয়ে সবাই খুশি। সব জায়গায় নির্বিঘ্নে পূজা করতে পারছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সবাই চেষ্টা করেছেন, কোনো দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, বিশৃঙ্খলা যেন না হয়। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সবাই মিলে কাজ করলে যে সফল হওয়া যায় তা প্রমাণ হয়েছে।
তবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবারের মতো আমরা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু আমরা এমন সমাজ চাই না, যেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ দিয়ে আনন্দ উৎসব করতে হবে। এজন্য ছাত্রসমাজ আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন একটি সমাজ গঠনের চেষ্টা করছে। আগামী দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে পূজা বা যেকোনো উৎসব পালন করতে যেন না হয় সেই উদ্যোগ নিতে হবে সবাইকে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘শুধু সংখ্যালঘু নয়, মুসলমানদের ছেলেমেয়েরাও ঘর থেকে বের হলে বাসায় ফিরবে কিনা সে নিরাপত্তা ছিল না। এমন সমাজ আমরা চাই না। আমরা একটি কাল্পনিক সমাজের কথা বলছি, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে এমন সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ছোটখাটো বিষয়ে আমরা যেন আটকে না থাকি। আপনাদের ছেলেমেয়েরা যেন স্বাভাবিক নাগরিক অধিকার পায়। সত্যিকার অর্থে নতুন বাংলাদেশের পক্ষে থাকুন। আমরা স্বপ্নের রাষ্ট্র গঠন করবো, যেন দুনিয়ার বুকে গর্ব করতে পারি। আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন আকাশে উড়তে পারে সেই ব্যবস্থা করবো। বন্দি হয়ে থাকার জন্য আমাদের ছেলেমেয়েরা জন্মগ্রহণ করেনি।’
তিনি বলেন, আমরা অধিকারবঞ্চিত মানুষ ছিলাম। সব অধিকার একটি গোষ্ঠির কাছে ছিল। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এখন সময় এসেছে সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করার। যে অধিকার কেড়ে নিতে চাইবে তাদের শাস্তি হবে। সবার অধিকার রক্ষায় সংস্কার কমিটিগুলো রূপরেখা দেবে। কিন্তু কমিশনের মাধ্যমে দেশ পাল্টে দেয়া সম্ভব নয়, তবে একটি রূপরেখা তারা দিতে পারবেন। দেশটাকে পাল্টে ফেলার এই সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়
এ সময় সমমর্যাদা ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দাবি জানান সনাতন ধর্মের নেতারা।