ডিবি কার্যালয়ে কোনো আয়না ঘর-ভাতের হোটেল থাকবে না: মল্লিক
বক্তব্য রাখছেন রেজাউল করিম মল্লিক। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে থাকবে না আর কোনো আয়না ঘর। ডিবি অফিসের কলঙ্কিত অধ্যায় শেষ করে পূর্ণপবিত্র-পরিষ্কার করা হবে, যেখানে মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। থাকবে না কোনো ভাতের হোটেল।
শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের অত্যন্ত সংকটকালে আমি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এজন্য আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি এবং ডিএমপি কমিশনারকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি আরও বলেন, বিগত সময়ে উচ্চাভিলাসী কিছু পুলিশ কর্মকর্তা সমগ্র পুলিশ বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। এর ফলে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান ও বিগত সরকারের পতনকে ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতায় পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ে। এই ধরনের ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখে পুলিশ বাহিনী কখনো দাঁড়ায়নি। এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে আইজিপি ও পুলিশর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কর্মতৎপরতায় ডিএমপির সব থানা ও ডিবির কার্যক্রম পুরোদমে সচল হয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা আফিসে আর কোনো আয়নাঘর থাকবে না। ডিবির কলঙ্কিত অধ্যায় শেষ করে সেটিকে পবিত্র করা হবে, যেখানে মানুষ ন্যায় বিচার পাবে। সেখানে কোনো নায়ক-নায়িকা বা সেলিব্রেটিদের সময় কাটানোর জায়গা হবে না। থাকবে না কোনো ভাতের হোটেল। আসামি যেই হোক না কেন, সে বিচার পাবে। গ্রেফতারকৃত আসামিদেরও নির্যাতন করা হবে না। ডিবি অফিসের নাম শুনে আর যেনো কেউ আতঙ্কিত না হয়, শুধু আসামিরাই যেনো ভয় পায়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, আমি যতদিন ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করবো, ততদিন ন্যায়-নীতি, পেশাদারিত্ব ও সত্যতার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবো। যারা ভুক্তভোগী ও অসহায় তাদের কথা শুনবো। তাদের কিভাবে আইনগত সহযোগিতা করা যায় সেটি দেখবো। ডিবিকে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার স্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে ডিবি অফিস অফিস হবে ভুক্তভোগীদের ভরসাস্থল।
আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ডিবির কোনো সদস্য যদি কোন ধরনের অনৈতিক ও অপেশাদার কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হয় তাদেরও বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
রাজধানীবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, কয়েকদিন পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। ৮ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত। পূজা উপলক্ষে সবাইকে শারদীয় অগ্রীম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশের মতো ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায়ও নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রতিটি পূজা মন্ডপে নিরাপত্তা ও পূজার উৎসবে পুলিশের পাশাপাশি ডিবির টিম সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। আপনাদের (নগরবাসী) প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজে কেউ যেনো অংশগ্রহণ না করেন। সবাই আইন ও বিধি মেনে চলবেন। ডিবি সব সময় আপনাদের পাশে আছে। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন।