ডিসি নিয়োগে ঘুষের অভিযোগ তদন্তে ৩ উপদেষ্টাকে দায়িত্ব
ডিসি নিয়োগে ঘুষের অভিযোগ তদন্তে ৩ উপদেষ্টাকে দায়িত্ব। ছবি: সংগৃহীত
ডিসি নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তদন্তের জন্য তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুর্গাপূজা উপলক্ষে নেওয়া কার্যক্রম বিষয়ে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
উপদেষ্টার কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান যে, অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে জনপ্রশাসন সচিব তদন্ত করেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা ডিসি নিয়োগে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ সরকার তদন্ত করবে কি না?
জবাবে উপদেষ্টা শারমীন বলেন, অবশ্যই আমরা এটার তদন্ত করব, সরকার (তদন্ত) করবে। কিন্তু এখানে দুটি জিনিস মিডিয়াকে মাথায় নিতে হবে। এটাও কিন্তু আমরা তলিয়ে দেখছি যে ক্লিপটা সোশ্যাল মিডিয়ায় বহুল প্রচারিত হয়ে গেল, সেটা কতখানি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রডিউসড। সেটা কতখানি রিয়েল, কতখানি ফেক আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বলতে পারে না। ইমিডিয়েটলি যে সিদ্ধান্তটা হয়েছে এটার টেকনিক্যাল ইন্টিগ্রিটিটা কী- সেটা জানার জন্য কেবিনেটে (উপদেষ্টা পরিষদে) কথা হয়েছে।
তিনি বলেন, সেটা ইনভেস্টিগেট করে ইমিডিয়েটলি দেখতে হবে। আমরা অবশ্যই তদন্ত করবো। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাংগীর আলম চৌধুরীকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, এই তিনজনের কথা বলা হয়েছে, এর মানে এই নয় যে অন্যরা এতে যুক্ত হতে পারবেন না। মূলকথা একটি কমিটি করে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
এর আগে সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অভিযুক্ত সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘ইটস এ ফেক নিউজ।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে ফাঁস হয়েছে এক ভয়াবহ কেলেঙ্কারির তথ্য। এ নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং বিতর্কিত দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের সরাসরি জড়িত থাকার তথ্য সামনে এসেছে। সেই সিনিয়র সচিবের সঙ্গে এক যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনে সম্প্রতি ডিসি নিয়োগ নিয়ে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেনের তথ্যও উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দেশের একটি দৈনিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের একপর্যায়ে নিজেকে নির্লোভ দাবি করেন সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। টাকা-পয়সার প্রতি কোনো লোভ নেই জানিয়ে ডিসি নিয়োগে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। তাদের এ সংক্রান্ত কথোপথনের কিছু স্ক্রিনশট রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলেও ঘুরপাক খাচ্ছে, যা নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।