রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪ | ২১ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

‘তরুণদের ক্ষমতায় যাওয়া উচিত, বুড়োদের কোনো কাজ নেই’- ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নের্তৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এই সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। এর মধ্যে দেশে ঘটে যাওয়া সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকাকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আনিস আহমেদের নেওয়া সাক্ষাৎকারটি সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে।

সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-

সাক্ষাৎকারে সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ড. ইউনূস জানান, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশের ভূমিকা নেওয়ার কথা থাকলেও সার্বিক পরিস্থিতিতে তারা মনোবল হারিয়ে ফেলেছে। সম্প্রতি ছাত্র-জনতা হত্যা করায় ‘কটু কথার’ ভয়ে পুলিশ সাধারণ মানুষ থেকে কিছুটা দূরে থাকতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘পুলিশের সবাইতো আর অন্যায় করেনি। যারা অন্যায় করেছে তাদের চিহ্নিত করব, তাদের শাস্তি হবে। বাকিরা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু এটি একটি লম্বা প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ‘সীমিত সময়ের জন্য’ সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদূর্ধ্ব মর্যাদার কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে প্রজ্ঞাপন দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সারা দেশে ৬০ দিনের জন্য এই ক্ষমতা পান তারা। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর এই প্রজ্ঞাপনে সংশোধন এনে ‘সশস্ত্র বাহিনী’ করা হয়। অর্থাৎ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌ-বাহিনী ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদেরও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়।

সশস্ত্র বাহিনীকে যে সময়ের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যেই পুলিশ ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন ড. ইউনূস।

গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব এবং সরকার পরিচালনায় তরুণদের ভূমিকা বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘তরুণদের হাতেই ক্ষমতা যাওয়া উচিত। এখানে বুড়োদের কোনো কাজ নেই। তারা শুধু ভুল করে গেছে এ পর্যন্ত।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘তাদের (তরুণদের) নেতৃত্বে একটি বড় কাণ্ড হয়ে গেল। কাজেই তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আমি বরাবরই বলে আসছি, তরুণদেরই দেশ চালানো উচিৎ। তারাই তাদের ভবিষ্যৎ রচনা করবে। শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বেই তরুণদের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া ভালো।’

সরকারের মেয়াদ ও নির্বাচনের সম্ভব্য সময় বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্য তুরে ধরে ড. ইউনূসের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এটা কি ধরে নেওয়া যায় যে এই সরকারের মেয়াদ ১৮ মাস?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা সরকারের মতামত না। সরকার কখন মেয়াদ ঠিক করবে সেটা সরকারকে বলতে হবে। আমাদের মুখ থেকে যখন শুনবেন, তখন সেটাই হবে তারিখ। উপদেষ্টা পরিষদে আমরা এটা নিয়ে আলোচনা করেছি, কিন্তু এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।’

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নেও এই সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান। পালিয়ে ভারত চলে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা আইনগত বিষয়। তিনি যেখানেই থাকুন, নিশ্চই আমরা তাকে ফেরত চাইব আইনি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য।’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এই বৈঠক হয়েছে সার্কভূক্ত একটি দেশ হিসেবে। ‘তার মানে এই নয় যে সবকিছু পাল্টে গেছে।’

একাত্তরে গণহত্যার বিষয়ে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা না চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘সেটা পৃথক বিষয়। এটা কীভাবে হবে সেটা পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হবে। কিন্তু সার্ক একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। আমরা চাই এটা শক্তিশালী হোক এবং সেই চেষ্টা আমি করে যাব।’

গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা ও পুলিশ নিহত ও আহতের ঘটনায় সরকারের ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘যে যেখানে অপরাধ করেছে, সে তার শাস্তি পাবে। একটার বিচার হবে, আরেকটার হবে না—এটার বিরুদ্ধেই তো গণঅভ্যুত্থান হলো। কাজেই অপরাধ করলেই তার শাস্তি পেতে হবে।’

পাহাড়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে বর্তমান সরকার বিশেষভাবে চিন্তিত কি না জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় শান্তি চাই। কোনো কোনো জায়গায় হয়তো অপারগ হয়েছি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমরা ইচ্ছা করে এটা করছি না। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছিল, সেটা ঠিকও হয়ে গেছে। এমন ঘটনা ঘটলে সরকারের দায়িত্ব তা সমাধান করা। মানুষের মধ্যে সৌহার্দ নিয়ে আসা।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘এত বছরের একটা সমস্যা এত অল্প সময়ের একটি সরকার সমাধান করে ফেলবে, এটা আশা করা ঠিক হবে না। বহু বছরের চেষ্টায় শান্তি চুক্তি হয়েছে। সেটাও মানছে না। আবার নতুন করে শান্তি চুক্তি করতে হবে কি না, সেটা দেখতে হবে। আমাদের সরকার সেটা পেরে উঠবে না। পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার এসে এটা করবে।’

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা দেওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘তাদেরকে শরণার্থী মর্যাদা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দিয়েছে এবং ইউএনএইচসি সেখানে কাজ করছে।’

নতুন করে রোহিঙ্গা আসতে চাইলে বাংলাদেশ তাদের গ্রহণ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা আন্তর্জাতিক সমস্যা। আন্তর্জাতিক আইন আছে। সেই অনুযায়ী সবাই মিলে এটা দেখা হবে। যখন কারো জীবন শঙ্কা দেখা দেয় তখন সে অন্য দেশে আশ্রয় চায়। তারা আসতে চাইছে আর আমরা দরজা বন্ধ করে দেবো, সেটা হবে না। এটা আইন বিরুদ্ধ কাজ।’

জাতিসংঘের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বৈঠকগুলোতে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগের সরকার সব ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেখান থেকে পুণর্জাগরণ করতে হবে। এর জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা কমিশন গঠন করছি। ছয়টি করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি সংবিধান নিয়ে। আরও কমিশন আসছে।'

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সারাদেশ একমত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কী বিষয়ে বা কীভাবে হবে, সেটা নিয়ে বিতর্ক হবে। কমিশন একটা রূপরেখা দেবে, সেটা নিয়ে সারা দেশে বিতর্ক করার সুযোগ তৈরি করা হবে, যেন রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করে এবং সবাই মিলে ঠিক করে যে এই সংশোধন এখনই করবে নাকি পরবর্তীতে। যে সংবিধান আমাদের আছে, এটা দিয়ে দেশ চলবে না। চললে আবারও একই ঘটনার সৃষ্টি হবে।’

সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আইনি ব্যাপার। আমরা এখন কাজ করছি কী প্রয়োজন সেটা নিয়ে। আইনসঙ্গতভাবে কীভাবে সেটা হবে তা পরবর্তীতে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’

স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা এখন দেশের রাজনীতিতে সামনের দিকে চলে আসছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সংবিধান বলে, প্রত্যেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। সেই অধিকার আমার নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধানের বিধান থেকে আমি বের হয়ে আসতে পারি না। তারা যদি অপরাধ করে তাহলে শাস্তি পাবে। কিন্তু রাগ করে তাকে দুশমন ভাবতে পারি না, তার অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। এটা কোনো রাষ্ট্র করতে পারে না, করলে সেটা অচল রাষ্ট্র হবে।’

বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য সংস্কারের পর নির্বাচন দেওয়া এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

Header Ad

মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে কারাগারে বিডিআরের ৭ শতাধিক সদস্য

ছবি: সংগৃহীত

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে করুন এবং জঘন্য ঘটনা পিলখানা হত্যাকান্ড বা বিডিয়ার বিদ্রোহ। ২০০৯ সালে সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের নামে চৌকষ ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন এ বিদ্রোহ এবং হত্যাযজ্ঞের পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক মামলা করা হয়েছিল।

সংবাদমাধ্যম আজকের পত্রিকার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর মধ্যে হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে রায়ের পর হাইকোর্ট হয়ে তা চার বছর ধরে আপিল বিভাগে বিচারাধীন। তবে নিম্ন আদালতেই ঝুলে রয়েছে বিস্ফোরক মামলা। এই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন বিডিআরের ৭ শতাধিক সদস্য।

তাদের মধ্যে হত্যা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ২৪৮ জন। মামলার প্রক্রিয়া শেষ না হলেও হত্যা মামলায় দণ্ডিত ২৫৬ জনের সাজার মেয়াদও শেষ। অনেক আসামির জামিন আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে বিচারিক আদালতে।

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও আসামি হয়ে কারাগারে থাকা অনেকে মুক্তি পেয়েছেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাই মুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন অনেক বিডিআর সদস্য এবং তাদের স্বজনেরা। তবে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী না থাকায় তাদের জামিন আবেদনের শুনানি করা যাচ্ছে না।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারিক আদালত থেকে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ২৭৮ জনের মধ্যে বর্তমানে খালাস অবস্থায় আছেন ২৪৮ জন। আর সাজার মেয়াদই শেষ হয়ে গেছে ২৫৬ জনের। শুধু বিস্ফোরক মামলার কারণে কারাগারে রয়েছেন ৫০৪ আসামি। হাইকোর্টে অন্তত ৪০টি জামিন আবেদন করা হয়েছিল; কিন্তু আমরা বিভিন্ন বেঞ্চে ঘুরছি।

কোনো বেঞ্চেই শুনানি করতে পারিনি। একবার হাইকোর্ট এক আসামিকে জামিন দিলেও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগে তা স্থগিত হয়ে যায়।’

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, বিস্ফোরক মামলায় আসামি ছিলেন ৮৩৪ জন। এর মধ্যে পলাতক ২০ জন। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর পর বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন ৭৮৭ জন। এখনো সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে মামলাটি। বিস্ফোরক মামলার বিচার শেষ না হওয়ায় অনেকে হত্যা মামলায় খালাস পেয়ে; কিংবা সাজার মেয়াদ শেষেও কারাগার থেকে মুক্তি পাননি। অনেকের অপরাধের ধরন এমন যে, দোষী সাব্যস্ত হলেও আইন অনুযায়ী ১৫ বছর সাজাও হবে না।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নতুন করে তদন্ত ও বিচার এবং নির্দোষ সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি উঠেছে। চাকরিচ্যুত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের বাহিনীতে পুনর্বহালের দাবিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ৬৪ জেলার ‘ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর ঐক্য ২০০৯’।

সংবাদ সম্মেলনে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া এবং দ্রুত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নিয়োগ করে বিস্ফোরক মামলায় ১৫ বছর ধরে কারাগারে থাকা আসামিদের জামিনের দাবি জানানো হয়। এর কয়েকদিন আগে আরেক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ৫০ বিডিআরের সদস্য মামলার পুনঃ তদন্তের দাবি জানান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আসামিরা প্রায় ১৬ বছর কারাগারে আছেন। তাদের অনেকেই খালাস পাওয়ার উপযুক্ত। আমরা এরই মধ্যে জামিনের আবেদন করেছি। পিপি নিয়োগ হলেই সেগুলো শুনানি হবে। যেহেতু বিচার বিলম্বিত হচ্ছে, তাই জামিন না দেওয়াটা অবিচার।’

নতুন করে তদন্তের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অধিকতর তদন্ত হতে পারে। এ জন্য পুলিশকে আদালতে আবেদন করতে হবে। অধিকতর তদন্তে নতুন করে কারও সম্পৃক্ততা পেলে তার বিচার করতে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনারও অধিকতর তদন্ত হতে পারে। তাতে কেউ নির্দোষ হলে তার মুক্তি ও নতুন কারও জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে।’

তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদও নতুন তদন্তের পক্ষে। সম্প্রতি প্রচারিত এক আলোচিত ইউটিউব ভিডিওতে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে ১৫ বছরে শুধু বিগত সরকারের কথা শুনতে হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার অনেক কিছুই জানা নেই। মইন ইউ আহমেদ আশা প্রকাশ করেন, তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে ঘটনায় প্রকৃত জড়িত ব্যক্তিদের বের করা যাবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বলেন, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে মামলার বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে থাকা কাম্য নয়। এতে নানা কারণে ন্যায়বিচার লঙ্ঘন হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মামলা নিষ্পত্তি হলে হয়তো এত দিনে অনেকে খালাসও পেতে পারতেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী না থাকার ফলে জামিন শুনানি করতে না পারার বিষয়টিও দুঃখজনক। বিনা অপরাধে দীর্ঘদিন আটক থাকা ব্যক্তি রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেন শিহাব উদ্দিন খান।

পিলখানা হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেন আদালত। তাতে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। সর্বোচ্চ ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয় ২৫৬ জনকে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন।

বিদ্রোহের ঘটনায় বিচার করা হয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিজস্ব আইনেও। এতে ১০ হাজার ৯৭৩ জনের বিভিন্ন ধরনের সাজা হয়। এর মধ্যে ৮ হাজার ৭৫৯ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ ছাড়া সারা দেশে বিশেষ আদালত গঠন করে বিচার করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে। আর সাজার বিরুদ্ধে দণ্ডিত ব্যক্তিরা আপিল করেন। ৬৯ জনের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে ২০১৭ সালের নভেম্বরে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ১৮৫ জনের। এ ছাড়া ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আর বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডিত ২৮৩ জন খালাস পান।

হাইকোর্টের রায়ের পর সাজার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন আসামিরা। অন্যদিকে হাইকোর্টে খালাস পাওয়া এবং সাজা কমা ৮৩ আসামির বিষয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। উভয় পক্ষের আবেদন এখন শুনানির অপেক্ষায়।

এমন প্রেক্ষাপটে ঘটনার পর গঠিত সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির দায়িত্বে থাকা বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পূর্ণ তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করা হবে।’

Header Ad

রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এবার অর্থ জালিয়াতির অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

বিতর্ক ভুলে নতুন করে আবারও কাজে ফিরতে শুরু করেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। তারমধ্যেই আবারও নিজেকে বিতর্কে জড়ালেন। এবার তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন দিল্লি পুলিশ। একটি অ্যাপ নিয়ে মূলত সমস্যার সূত্রপাত, গ্রাহকেরা এই অ্যাপ ব্যবহার করে মোট ৫০০ কোটি টাকা হারিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগীরা।

উল্লিখিত অ্যাপের স্পন্সর ছিলেন রিয়া চক্রবর্তী। এই অ্যাপের হয়ে প্রচারনাও করেছেন তিনি। অর্থ বিনিয়োগ সংক্রান্ত এই অ্যাপের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হারিয়েছেন অ্যাপ ব্যবহারকারীরা, এমনই অভিযোগ। এই ঘটনাতেই রিয়াকে তলব করেছে দিল্লি পুলিশ।

মূলত এই অ্যাপ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, অর্থ বিনিয়োগ করলে তা পরিমাণে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার পর ফেরত পাবেন ব্যবহারকারীরা। কিন্তু এমনটা হয়নি। বরং কোটি কোটি টাকা হারিয়েছেন ব্যবহারকারীরা।

তবে শুধু একা রিয়াই নন। এই অ্যাপের হয়ে প্রচার করে বিপাকে পড়েছেন কৌতুকশিল্পী ভারতী সিংহ, নেটপ্রভাবী এলভিশ যাদবও। তাদেরও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। অসংখ্য ব্যবহারকারীর পক্ষ থেকে অভিযোগের পর পুলিশ এ পদক্ষেপ গ্রহন করেছে।

উল্লেখ্য, সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর পরে থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রিয়া। সুশান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ করা হয় রিয়ার বিরুদ্ধে। এরপর,মাদক থাকায় সাথে গ্রেফতার হয়েছিলেন রিয়া। তাছাড়া,এসব মামলায় বেশ কয়েক দিন কারাবাসেও থাকেন তিনি। তারপরেও বিনোদন জগৎ থেকে বেশ কিছু দিন দূরে ছিলেন। সম্প্রতি নিজের পডকাস্ট এর মধ্য দিয়ে আবার সামনে আসেন তিনি।

Header Ad

এসএসসির ৭৫ ও জেএসসির ২৫ নম্বরের সমন্বয়ে হবে এইচএসসির ফল প্রকাশ

ছবি: সংগৃহীত

গত জুলাইয়ে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে বাতিল হওয়া এইচএসসি ও সমমানের ছয়টি পরীক্ষার ফল তৈরি হবে সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে। সেখানে জেএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ৭৫ শতাংশ যোগ করে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়া হবে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর এমন প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।‌ ফলে যেকোনো সময় এ পদ্ধতিতে এইচএসসির ফল প্রকাশ করবে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।

অক্টোবরের মধ্যে এ ফল প্রকাশের জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

তিনি বলেন, ফল প্রকাশের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবার যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলোর খাতা মূল্যায়ন করার পাশাপাশি বাকি বিষয়গুলোতে এসএসসির নম্বর ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করা হবে। তবে ফল প্রকাশের দিন-তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, যে ছয়টি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে যেসব বিষয়ের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হবে। অর্থাৎ জেএসসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় করে ফল তৈরি হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জেএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ৭৫ শতাংশ যোগ করে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়া হবে। যেমন- কোনো একটি বিষয়ে জেএসসিতে ১০০ নম্বর পেয়ে থাকলে সেখান থেকে ২৫ এবং একই বিষয়ে এসএসসিতে ১০০ নম্বর পেয়ে থাকলে ৭৫ নম্বর নেওয়া হবে। এ দুটি নম্বর যোগ করলে এইচএসসিতে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর হবে ১০০।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনা ভাইরাসের সময় পরীক্ষা বাতিল করা হয়। পরে পূর্বের পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং প্রক্রিয়ায় ফল প্রকাশ করা হয়। এবার সেই পদ্ধতিতে ফল তৈরি করা হবে। সেই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত এলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।

চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩০ জুন। ১৬ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা ঠিকভাবেই হয়েছে। কোটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা এবং পরে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়। মাঝে সরকার পরিবর্তনের মতো বড় ঘটনা ঘটে গেছে।

বিভিন্ন থানায় হামলার কারণে সেখানকার প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে বাকি পরীক্ষাগুলোর তারিখ বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। সম্প্রতি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে একদল শিক্ষার্থী স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ আগস্ট সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেন। পরে এসব পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় সাড়ে ১৫ বছর ধরে কারাগারে বিডিআরের ৭ শতাধিক সদস্য
রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এবার অর্থ জালিয়াতির অভিযোগ
এসএসসির ৭৫ ও জেএসসির ২৫ নম্বরের সমন্বয়ে হবে এইচএসসির ফল প্রকাশ
ফিরে আসার বার্তা আ.লীগের, করতে চায় উন্নয়ন
৬ দিনে ৪৪০ জন হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
নিজেকে ‘ছাগল’ বললেন মাহি
দুপুরের মধ্যে ১৩ অঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস
কেমন হবে আজ গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টির পিচ ?
আন্দোলনে অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করা সেই যুবলীগ নেতা মুছা গ্রেপ্তার
৩৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কবলে শেরপুর
গাজার কেন্দ্রীয় মসজিদে ইসরায়েলের হামলায় নিহত ১৮
কলকাতায় পিকে হালদারের ভাইসহ ৩ সহযোগীর জামিন
কেরানীগঞ্জে রেস্টুরেন্টে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনজনের মৃত্যু, আহত ৪
বিরামপুরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বিএনপি'র শারদীয় শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু; আক্রান্ত ৯২৭
ভারতে ১৩ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ নিজের ১৬ বছরের ভাইয়ের বিরুদ্ধে
সিরাত মাহফিল থেকে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন আবু জাফর কাশেমী
টাঙ্গাইলে কলেজছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী
পিটিআই-পুলিশ সংঘর্ষে উত্তপ্ত পাকিস্তান, সেনা মোতায়েন
গোয়ালিয়রে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে ২৫০০ পুলিশ মোতায়েন