সাবেক মন্ত্রী রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শ.ম রেজাউল করিম, জান্নাত আরা হেনরী এবং ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জান্নাত আরা হেনরী, তার স্বামী শামীম তালুকদার ও মেয়ে মুনতাহা রিদায়ী লাম এবং সাবেক কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ার অভিযোগে গত ১ সেপ্টেম্বর সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে পিরোজপুর-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম। ২০১৮ সালেও একই আসন থেকে নির্বাচিত হন। তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া, নিজ নামে বরিশালের নাজিরপুর, পিরোজপুর এবং ঢাকার বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পদ রয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন নামক প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং প্রশিক্ষণের নামে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, একটি গাড়ি ও দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২০ আগস্ট অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
২০২০-২১ অর্থবছরে তিনি প্রায় ৩২ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন। সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, পটুয়াখালী ও রাজধানী ঢাকায় তার অঢেল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে গড়ে তুলেছেন হেনরী ভুবন।
এ ছাড়া, গত ১৩ জুন দায়ের হওয়া মামলায় ১৫২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছিল সাবেক কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। ওইদিনই ৬০ দিনের জন্য তার বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। যার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় নিষেধাজ্ঞার সময় বৃদ্ধি করে আদালত।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইন বহির্ভূতভাবে একক নির্বাহী সিদ্ধান্তে ১৬টি নথিতে ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করে সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধন করায় কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ১১ জুন মামলা দায়ের করে দুদক। তিনি গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেল লিমিটেডকে ওই সুবিধা দিয়েছিলেন।