রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর এপিএস বাশারের সম্পদের পাহাড়

সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আ ন ম আহমাদুল বাশার। ছবি: সংগৃহীত

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পাড়ি জমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই একে একে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে থলের বিড়াল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তার অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং আমলাই আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মতোই রাতারাতি বনে গিয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক। এমনই একজন হচ্ছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আ ন ম আহমাদুল বাশার।

গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর এপিএস হয়েই মাত্র পাঁচ থেকে ছয় বছরেই বাশার হয়ে গেছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। দিনাজপুর জেলা ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর প্রভাবে নিয়োগ-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, দলীয় পদ দেওয়ার নামে কামিয়েছেন হাজার কোটি টাকা। এসব টাকা পাচারে নিজেই নিয়েছেন এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার মালিকানা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং তার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আ ন ম আহমাদুল বাশার। ছবি: সংগৃহীত

খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর নাম পরিচয় কাজে লাগিয়ে যে শুধু নিজের স্বার্থ হাসিল করেছেন ব্যাপারটি এমন নয়। শতকোটি টাকার মালিক বানিয়েছেন নিজের মোটরসাইকেল চালককেও! একসময় মাদক কারবার ও নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার হলেও খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর প্রভাবে সীমাহীন দুর্নীতি চালিয়ে গেছেন এপিএস বাশার।

এপিএস হওয়ার আগের সময়টা খুব একটা ভালো ছিল না বাশারের। দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের টেনা এলাকার দরিদ্র কৃষক তাইজুল ইসলামের তিন ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। স্থানীয়রা জানান, একসময় বাশারের পরিবারের সম্পদ ছিল তিন থেকে চার বিঘা জমি। সেই জমিতে কোনো রকম আবাদ করে কষ্টে দিন কাটত এ পরিবারের। ছেলেদের পড়াশোনার খরচ চালাতে একসময় জমি বন্ধকও রেখেছিলেন কৃষক তাইজুল। তবে বাশারের অবৈধ টাকার কেরামতিতে সেই পরিবার এখন ফুলেফেঁপে কলাগাছ।

স্থানীয় মুদি দোকানদার রহমান আলীর ভাষ্যে, কেউ আলাদীনের চেরাগ পেলেও হয়তো এত দ্রুত কোটি কোটি টাকা, জায়গা-জমি, পুকুর, বাড়ি-গাড়ির মালিক হতে পারে না, যতটা এপিএস বাশার মাত্র ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে করেছেন।

জানা গেছে, খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সংসদীয় আসন বোচাগঞ্জের বাসিন্দা। এই সুবাদে তার আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন বাশার। এক পর্যায়ে এলাকার পাশাপাশি ঢাকার রাজনীতিতেও বেশ প্রভাব খাটানো শুরু করেন তিনি। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় ২০১১ সালে খালিদ মাহমুদের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হন বাশার। তবে সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু করেন নিয়োগ-বাণিজ্য। শিক্ষক নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজের টেন্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে শেরেবাংলা নগর এলাকায় মাদকের রমরমা কারবার শুরু করেন তিনি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে কলেজ গেট এলাকায় একটি বাসায় গড়ে তৈরি করেছিলেন নিজস্ব টর্চার সেল। ছাত্রলীগের অন্য গ্রুপের নেতাকর্মীদের এবং টেন্ডার ও মাদক কারবারে কেউ বাধা দিলে সাঙ্গোপাঙ্গদের দিয়ে তাদের তুলে নিয়ে সেই টর্চার সেলে নির্যাতন করতেন। এসব অপকর্মের কারণে কমিটির এক বছরের মাথায় সভাপতির পদ ও ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার হন।

এ বিষয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, বাশারের অত্যাচারে ক্যাম্পাসে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তো বটেই, ছাত্রলীগের যারা রাজনীতি করত, তাদেরও নির্যাতন করত বাশার। তার কথার বাইরে কোনো নিয়োগ হতো না। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকের কারখানা বানিয়ে ফেলেছিলেন।

আ ন ম আহমাদুল বাশার। ছবি: সংগৃহীত

তবে এত কিছুর পরও খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ হতো বাশারের মাধ্যমেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার পরপরই ২০১৩ সালে তৎকালীন দিনাজপুর-২ আসনের এমপি খালিদ মাহমুদ তাকে এপিএস হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদের অধীনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে খালিদ মাহমুদ দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাশারকে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন এবং প্রতিমন্ত্রীর ক্ষমতার কারণে বাশার হয়ে ওঠেন মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। রাজধানীসহ দিনাজপুর জেলায় শুরু হয় বাশারের তাণ্ডব।

বিআইডব্লিউটিএ ভবনে খালিদের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান ছিলেন বাশার: জানা যায়, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মন্ত্রী হওয়ার পরপরই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) প্রধান কার্যালয় দখলে নেন এপিএস বাশার। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন বিকেল ৪টার পর তার নিজস্ব ঠিকাদার ও ব্যক্তিগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে প্রবেশ করে বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের কক্ষে গিয়ে তার পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতেন তিনি। অপছন্দের ঠিকাদারকে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে প্রবেশ করতে দিতেন না। কেউ গেলেই ক্যাডার বাহিনী নিয়ে হামলা করতেন তিনি।

বিআইডব্লিউটিএ ভবনের কয়েকজন তালিকাভুক্ত ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০ লাখ টাকার ওপরে যে কোনো কাজে এপিএস বাশারকে কাজের বিপরীতে কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া যায় না। ওই ভবনে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আক্ষেপ করে বলেন, বিগত পাঁচ বছর থেকে টেন্ডার কাজে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে এপিএস বাশার হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েকশ কোটি টাকার ওপরে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাশারের বড় সহযোগী ছিলেন সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর চাচাতো ভাইয়ের বউয়ের ছোট বোনের স্বামী মো. আরশাদ। এই দুজন মিলে নিয়ন্ত্রণ করতেন মন্ত্রণালয়ের সবকিছু। তাদের মাধ্যমেই কাজের পার্সেন্টেজ নিতেন প্রতিমন্ত্রী। কাকে কাজ দেওয়া যাবে, তা ঠিক করতেন আরশাদ আর বাশার। বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, চট্টগ্রাম বন্দর, পায়রা পোর্টের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিজেদের সিন্ডিকেটের লোক বসাতেন এই দুজন। তাদের মধ্যে আরশাদ নৌপ্রতিমন্ত্রীর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন সবার কাছে। মূলত এই আরশাদই প্রতিমন্ত্রীর হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে দিনাজপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যক্তিগত সহকারী হলেও বাশার এলাকায় কখনো কখনো খোদ খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর চেয়েও বেশি ক্ষমতা দেখাতেন। দিনাজপুরে তার হয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন বাশার।

দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম রবি জানান, জেলার ডিসি, এসপি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা তটস্থ থাকতেন বাশারের ভয়ে। বাশার চাইলেই যে কাউকে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কাছে নায়ক বা ভিলেন বানাতে পারতেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এমন কোনো অপকর্ম নেই, যা বাশার করেননি। নিজের অযোগ্য আত্মীয়স্বজনের দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। যে যত বেশি তার আত্মীয়দের খুশি করতে পারতেন, সেই পদ ক্ষমতাসহ অর্থের মালিক হতেন।

বাশারের যত সম্পদ: স্থানীয় নেতাকর্মী ও বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজ গ্রাম টেনাসহ আশপাশের গ্রামে নামে-বেনামে ৩০০ বিঘা জমি রয়েছে বাশারের। এছাড়া কালুপীর বাজারের পাশে মসলাবাটি নামক স্থানে ১৫০ বিঘার ওপর পুকুরের সঙ্গে রয়েছে খামারবাড়ি। কালুপীর বাজারে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি, দোকান ও গোডাউন করেছেন বাশার। পার্শ্ববর্তী উপজেলা পীরগঞ্জের ৫ নম্বর সৈয়দপুর ইউনিয়নে ৯০ বিঘা জমির ওপর আমবাগান, পীরগঞ্জ উপজেলায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ৫৮ শতাংশ জমি, সেতাবগঞ্জ বাজারে নিজের নামে এবং আত্মীয়স্বজনের নামে কয়েক কোটি টাকার ১ হাজার ৭৪১ শতাংশ জমি, বিরল স্থলবন্দরের পাশেই ৩৮৬ শতাংশ জমি, দিনাজপুর শহরে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়স্বজনের নামে ৫টি প্লট রয়েছে বাশারের। এ ছাড়া ঢাকার লালমাটিয়া, আদাবর, শেখেরটেক, মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি, বাবর রোড়, হুমায়ুন রোডে রয়েছে ১৩টি ফ্ল্যাট এবং বছিলা ও ঢাকা উদ্যানে ৫ শতাংশ করে অসংখ্য প্লট রয়েছে বাশারের নামে।

টাকা পাচারে খালাতো ভাইয়ের নামে ‘খালাতো এন্টারপ্রাইজ’: মন্ত্রণালয় এবং বাশারের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব, নিয়োগ-বাণিজ্য আর মাদকের কারবারের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশেও পাচার করেছেন বাশার। পাচারের দিকটা দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন তার অন্যতম সহযোগী খালাতো ভাই রনি। এই রনিকে সবাই ‘খালাতো এন্টারপ্রাইজ’ নামে চেনে। রনিকে দিয়ে ‘খালাতো এন্টারপ্রাইজ’ নামে প্রতিষ্ঠান খুলে বোচাগঞ্জ উপজেলা নিয়ন্ত্রণ করতেন বাশার। তাকে দিয়েই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা নিয়েছিলেন তিনি। এই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আড়ালে প্রতি সপ্তাহে বিদেশে টাকা পাচার করতেন তিনি। এ ছাড়া খালাতো এন্টারপ্রাইজ দিয়ে এলাকার সব ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন রনি। চাকরি-বাণিজ্য, বদলি, থানায় প্রভাব বিস্তার, মাদক-বাণিজ্য, সরকারি জমি গ্রাস—এমন কোনো কাজ নেই, যা রনি করতেন না। সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর কাছে যারা বিভিন্ন চাকরির লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরির জন্য যেতেন, বাশার তাদের রনির কাছে পাঠাতেন। রনি প্রতিজনের কাজ থেকে ৫ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত টাকা নিতেন।

স্থানীয়রা জানান, কারও যদি কপালে চাকরি লেখা থাকত তাহলে হতো, আর না হলে ওই টাকা আর কখনো ফেরত পাওয়া যেত না। টাকা ফেরত চাইলেই মিথ্যা মামলা আর নির্যাতনের ভয় দেখানো হতো।

এদিকে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে বিদেশে গেলে তার মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তার সঙ্গে আত্মগোপনে গেছেন এপিএস বাশার ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরাও। ফলে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়ম ও লুটপাটের বিষয়ে তাদের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Header Ad
Header Ad

একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। রোববার (২০ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১৬ হাজার ৭১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪ হাজার ৪২৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

এ সময় উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে সঠিকভাবে অগ্রগতি না থাকায় এটি “সমুদ্র বন্দরও হবে না, খালের বন্দরও হবে না” - এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, নৌ ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Header Ad
Header Ad

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের এবং যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল, তাদের তদন্ত করে বিচার করতে হবে।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় নিয়ে গেছে এবং মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে, যার দায় নির্বাচন কমিশনেরও রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান প্রবর্তন, প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিরূপণ, নির্বাচনে সহিংসতা রোধে আচরণবিধি সংস্কার, ঋণখেলাপিদের প্রার্থিতা বাতিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মনিটরিং করা।

এছাড়া একই নামে একাধিক দলের নিবন্ধন, অফিসবিহীন দলকে বৈধতা দেওয়া এবং এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এনসিপি মনে করে, এসব বাস্তবায়ন না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনুভা জাবীন।

Header Ad
Header Ad

এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ছবি: সংগৃহীত

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৯৬৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

রেমিট্যান্সের বড় একটি অংশ এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে—৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো দিয়ে ৯ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে এক মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে—৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও যথাক্রমে ২১৯ কোটি ও ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা, ডলারের ভালো বিনিময় হার এবং রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের বাড়তি পাঠানোর প্রবণতা—এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এপ্রিল শেষে এই প্রবাহ ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে, যা নতুন একটি রেকর্ড হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক