শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো বিষয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ব্রিফ করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। রোববার (১১ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করা এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় কিছু বললে পদক্ষেপে নেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের মানুষ যেন ভাবে ভারত আমাদের বন্ধু। এই কাজে দিল্লীও সহযোগিতা করবে ঢাকাকে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য, সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তিনি বলেন, এই সরকার বিশেষ কোনো দিকের নয়, যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ভারত; দেশের স্বার্থ রক্ষায় সবার সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে একটা ‘ফায়ার ফাইটিং জব’ চলছে। স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কিছুটা সময় লাগবে। সরকারের মেয়াদ কতদিন, তা তারপর বলা যাবে বলে জানান তিনি।
সাম্প্রতিক আন্দোলন ও সহিংসতায় নিহতদের তালিকার ব্যাপারে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রাথমিকভাবে ৪৫০ জনের তালিকা হয়েছে, তবে সরকারে থাকা দুই সমন্বয়কের অধীনে নির্ভুলভাবে এটা করা হবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা সীমিত রাখা গেছে। আগামীকাল সোমবার তাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলবেন। হামলার সব ঘটনার বিচার হবে বলে দৃঢ় মত ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভের দায়ে আটক বাংলাদেশিদের মুক্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টা দেশটির সরকারপ্রধানের সঙ্গে দুই-একদিনের মধ্যে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনার পতনের পর গত বৃহস্পতিবার নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। নতুন সরকারের কূটনীতির দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেনকে।
তৌহিদ হোসেন ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০০০ সালে ফেব্রুয়ারি এবং ২০০৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত দুই মেয়াদে ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ২০০৬ সালে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের জুনে তৌহিদ হোসেনকে দক্ষিণ আফ্রিকার হাইকমিশনার করা হয়।