প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বিপিএসসি
ছবি: সংগৃহীত
গত ১২ বছর ধরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এবং অন্যান্য নন-ক্যাডার পরীক্ষা সম্পর্কে কোনও মহল থেকে কখনোই কোনও ধরনের অভিযোগ বা অনুযোগ ছিল না। তাই ওই সময়ের সব পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মনে করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার ‘উপসহকারী প্রকৌশলী’ পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রতারণা বা অন্য কোনও অবৈধ কার্যক্রমে কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেবে পিএসসি।
সোমবার (৮ জুলাই) পিএসসির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
পিএসসির জনসংযোগ দফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত জুলাই বেসরকারি টেলিভিশনে সন্ধ্যা ৬টা এবং ৭টায় পিএসসির রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে এবং অন্যান্য নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রচার করেছে, সে বিষয়ে বিপিএসসির দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। গত এক যুগে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে টেলিভিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাস্তবতা হলো, গত ১২ বছরে বিপিএসসিতে অনুষ্ঠিত বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষা সম্পর্কে কোনও মহল থেকে কখনোই কোনও ধরনের অভিযোগ বা অনুযোগ ছিল না বিধায় এটি প্রমাণিত যে ওই সব পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময়ে অনুষ্ঠিত বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে নতুন করে কোনোরূপ অভিযোগ উত্থাপনের অবকাশ নেই। প্রতিবেদনে গত ১২ বছরে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত এসব পরীক্ষার বিষয়ে বিরূপ প্রচার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিপিএসসির ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে।
গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার ‘উপসহকারী প্রকৌশলী’ পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ওই দিন পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে প্রতিবেদকের হোয়াটসঅ্যাপে আসে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে প্রতিটি বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬ সেট প্রশ্নপত্র এবং নন-ক্যাডার পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪ সেট প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়। কোন সেটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তা নির্ধারণ করতে পরীক্ষা শুরুর ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট আগে লটারি করা হয়। বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষার ক্ষেত্রে লটারির সময় দেশের প্রথিতযশা দুজন নাগরিক, কমিশনের চেয়ারম্যান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থাকেন। একইভাবে নন-ক্যাডার পরীক্ষার ক্ষেত্রে কমিশনের চেয়ারম্যান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সদস্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থাকেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ৫ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে লটারি করে কোন সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে, সে বিষয়টি সকাল সাড়ে ৯টায় সংশ্লিষ্টদের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ কারণে কোন সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে, তা পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে কারোরই জানার সুযোগ নেই।
কমিশনের আওতাভুক্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রশ্নপত্র সমীক্ষণ ও মুদ্রণ সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে করা হয় এবং তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এসব কারণে পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে।
উল্লেখ্য, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি যেকোনও ব্যক্তির নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ থাকে। কিন্তু পরীক্ষা অনুষ্ঠানের দুই দিন পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিপিএসসির কার্যক্রম ও নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ সমাজসহ জনমনে সুদৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। বিপিএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম সব মহলে প্রশংসিত হচ্ছে। সেই আস্থা ও বিশ্বাস সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে যথাসময়ে অভিযোগ না হওয়া সত্ত্বেও যদি কোনও ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রতারণা বা অন্য কোনও অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত প্রমাণ হয়, তাহলে কমিশন সংশ্লিষ্টের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।