লিফট-এসি কিনতে বিদেশ যাচ্ছেন ১০ কর্মকর্তা
সচিবালয়। ফাইল ছবি
সচিবালয়ে নতুন ২০ তলা ভবনের জন্য ৯টি লিফট ও ২৪০০ টন ক্ষমতার চিলার এসি কেনা হচ্ছে। আর এসব লিফট ও এসির কেনার নামে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিন আমলা ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাত প্রকৌশলী।
সম্প্রতি গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা অফিস আদেশে ১০ কর্মকর্তার বিদেশ সফরের তথ্য জানা যায়। জানা গেছে, পৃথক তিনটি দলে সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স ও মালয়েশিয়া ভ্রমণ করবেন তারা।
আদেশে অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় শীতাতপ ব্যবস্থাপনার জন্য ২৪০০ টন চিলার এসি কিনতে চলতি মাসের ১৬ থেকে ২০ মে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ নূর মোহাম্মদ, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তার ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বখতিয়ার আহমেদের ফ্রান্সে যাওয়ার কথা ছিল। একই সময়ে মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নায়লা আহমেদ, অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মুশফিক আহমেদ ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল।
এ ছাড়া পৃথক আরেকটি অফিস আদেশে লিফট কেনার কাজে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাকিলা জেরিন আহমেদ, গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়রা বিনতে রেজা, প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার (নির্বাহী প্রকৌশলী) মাহফুজুল আলম, স্থাপত্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনাজ মাসুদের ১০ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত ছয় দিন সুইজারল্যান্ড সফরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সচিবালয়ের ২০ তলা ভবনে ৯টি লিফটের জন্য ২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি লিফট ১৬০০ কেজি ক্ষমতার। বাকি তিনটির দুটি ১ হাজার কেজি এবং একটি ৬৩০ কেজি ক্ষমতার। এ ছাড়া ২৪০০ টন চিলার এসি কিনতে ব্যয় ধরা হচ্ছে ৫১ কোটি ৮৪ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে লিফট কেনার জন্য ১৭ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছিল। সেখানে কমবেশি ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে এখন ২২ কোটির মতো করা হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রকল্পে ফার্নিচার কেনার নামেও ১০ কোটি টাকা খরচ দেখানো হচ্ছে। অথচ একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে ফার্নিচার না কিনে যদি প্রতিযোগিতায় কেনা হতো, তাহলে সেখানে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা কম ব্যয় হতো।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. নবীরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, যেকোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে পিএসআই বিষয়টি প্রকল্পের প্রাক্কলনে উল্লেখ থাকে। সেখান থেকে ভ্রমণের খরচ সরবরাহ করা হয়। এখন আমরা একটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি। নতুন যত প্রাক্কলন হবে, সেখানে ভ্রমণের খরচ আলাদা করা হবে। সরকার চাইলে যেন তা বাতিল করতে পারে।