স্বৈরাচার পতন দিবস আজ
স্বৈরাচারের অবসান ঘটানোর দিন ৬ ডিসেম্বর। এ দিন স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে মুক্তি পায় গণতন্ত্র।
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশের গণতন্ত্রকামী জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে এরশাদ ক্ষমতা ছাড়াতে বাধ্য হন। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি। এর মাধ্যমে অবসান ঘটে এরশাদের ৯ বছরের স্বৈরশাসনের।
আওয়ামী লীগ এ দিন গণতন্ত্র মুক্তি দিবস হিসেবে উদযাপন করে। আর বিএনপি দিনটি উদযাপন করে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস হিসেবে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেন এরশাদ। এরপর সরকার দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে সংস্কৃতি, সবক্ষেত্রে গণবিরোধী ধারা প্রবর্তন করে। রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ব্যাপক নিপীড়নের শিকার হন। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর হরতালের সময় নূর হোসেনকে স্বৈরাচার সরকারের বাহিনী গুলি করে। যার বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা ছিল। একই দিন আমিনুল হুদা টিটোকে মেরে গুম করে সেনা ও পুলিশবাহিনী। এ ঘটনায় সব মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এরশাদ সরকারের পতন ঘটানোর আন্দোলনে নেমে পড়ে।
১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের সূচনা হয়। ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোটসহ বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এ আন্দোলনে ডা. মিলন, নূর হোসেন, সেলিম, দেলোয়ার, তাজুল, নূরুল হুদা, বাবুল, ফাত্তাহ অনেকেই প্রাণ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী সংগ্রামী দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি গণতন্ত্রবিরোধী সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে গণতন্ত্রের ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করতে এবং দেশের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এসএন