বিশ্বসেরা স্থাপনার পুরস্কার জিতলেন দুই বাংলাদেশি স্থপতি
রিয়াজ লফটের অন্দরের একাংশ এবং স্থপতি মাহমুদুল আনোয়ার ও বায়েজিদ মাহবুব খন্দকার। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের জে কে সিমেন্ট লিমিটেড আয়োজিত ‘আর্কিটেক্ট অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতার এবারের আসরে বিদেশি বিভাগে বর্ষসেরা স্থপতি হয়েছেন বাংলাদেশের স্থপতি মাহমুদুল আনোয়ার। এ ছাড়া এই বিভাগের কমেন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন স্থপতি বায়েজিদ মাহবুব খন্দকার।
নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অবস্থিত রিয়াজ লফট এবং রাজধানীর শুক্রাবাদে অবস্থিত হোটেল নন্দিনীর জন্য তারা এই পুরষ্কার পান।
রিয়াজ লফটের মালিক রিয়াজের শৈশবের বড় একটা অংশ কেটেছে নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অবস্থিত শিশুদের খেলার মাঠে খেলাধুলা করে। আর তাই মাঠের পাশেই তার নানিবাড়ি, এবং নানিবাড়ির সাথেই রয়েছে তার আড়াই কাঠার একটি প্লট। জায়গাটিতে এমন একটি বাড়ি বানাতে চেয়েছিলেন রিয়াজ যেখান থেকে চাইলেই খেলার মাঠটির দিকে তাকানো যাবে। রিয়াজের এই পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন স্থপতি মাহমুদুল আনোয়ার। ১৬ ফুট বাই ৬৫ ফুটের বাড়িটির ছাদে এমনভাবে একটি মাচা রাখা হয়েছে যেখানে বসে সহজেই খেলার মাঠটিতে শিশুদের আনাগোনায় চোখ রাখা যায়।
এ বিষয়ে স্থপতি মাহমুদুল বলেন, বাড়িটি পুরোপুরি রাজউকের নিয়ম মেনে বানানো হয়েছে। বাড়িটি মূলত অবকাশ যাপনের জন্য ব্যবহৃত হবে বিধায় এখান থেকে খেলার মাঠটির দিকে একটি ইনফিনিটি ভিউ দেয়ার চেষ্টা করেছি আমি।
এদিকে, রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক মিরপুর রোডের শুক্রাবাদ এলাকায় পুরোনো একটি ভবন কখনো হোটেল আবার কখনো বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিলো। পুরোনো ভবনটিকে একইসাথে হোটেল ও বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে নতুন করে সাজানোর দায়িত্ব দেয়া হয় স্থপতি বায়েজিদ মাহবুব খন্দকারকে। অতঃপর হোটেল নন্দিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে পুরোনো ভবনটি। ভবনটি সাজানোর সময় মৃৎশিল্প ও হস্তশিল্পের নানা উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে। একদিকে এখানে যেমন আছে সবুজের সমারোহ, তেমনি আছে আগুন লাগলে বের হওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। পুরোনোকে ঢেলে সাজানোর অপূর্ব এক নজির শুক্রাবাদের এই হোটেল নন্দিনী।
স্থপতি বায়েজিদ মাহবুব খন্দকার বলেন, ভবনের একেকটি ফ্লোর একেক রকম। ভেতরে খুব বেশি পরিবর্তন না করে অধিকাংশ সংযোজন ভবনটির বাইরের দিকেই করা হয়েছে। সাধারণ কাচ ব্যবহার না করে আমরা এই ভবনে লুভর ব্যবহার করেছি, যা একইসাথে ভবনটিকে প্রচন্ড গরমে শীতল রাখবে, রোদে ছায়া দেবে আবার ভবনটিকে দৃষ্টিনন্দন একটি স্থাপনাতেও পরিণত করেছে।
জে কে সিমেন্ট লিমিটেড গত ৩৪ বছর ধরে ‘আর্কিটেক্ট অব দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে। এ বছর বাংলাদেশ ছাড়াও বিদেশি ক্যাটাগরিতে ভুটান, কেনিয়া, মালদ্বীপ, মরিশাস, নেপাল, সেশেলেস, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া ও উগান্ডার স্থপতিরা অংশ নিয়েছিলেন।