শিক্ষক মুরাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ
ছবি: সংগৃহীত
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর দিবা শাখার সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যে অভিযোগে শিক্ষক মুরাদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, পুলিশ হেফাজতে দুইদিন জিজ্ঞাসাবাদ তার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। সেগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হবে।
মহিদ উদ্দিন বলেন, বাদীর মেয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় মুরাদের কোচিংয়ে পড়ত। প্রায় সময় মুরাদ তার মেয়েসহ তার সহপাঠীদের কুরুচিপূর্ণ কৌতুক শোনাত। বাদীর মেয়ে স্কুলে নাচ করত। ওই নাচের ভিডিও মুরাদ ঘুমানোর আগে দেখত বলে ওই শিক্ষার্থীকে প্রায়ই বলত।
তিনি বলেন, গত বছরের নভেম্বরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনা জানাজানি হলে মা-বাবার সম্মানহানি হবে এবং স্কুল থেকে তাকে বের করে দেবে- এই ভয়ে মেয়েটি এতদিন কিছু জানায়নি।
এক প্রশ্নের জবাবে মহিদ উদ্দিন বলেন, ফৌজদারি অপরাধ কখন তামাদি হয়ে যায় না। আর এই ঘটনা প্রমাণে মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও আরো কিছু বিষয় তদন্ত করে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ বের করতে হয়। পুলিশ সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক অভিভাবক। এ বিষয়টি নিয়ে একটি সংবাদপত্র অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে শোরগোল পড়ে যায়। এরপর মুরাদ হোসেন সরকারকে আজিমপুরের ক্যাম্পাসের দিবা শাখা থেকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। কলেজের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
কিন্তু এতে সন্তুষ্ট না হয়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে ভিকারুননিসার ছাত্রীরা। অভিভাবকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান। পরে সোমবার রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির সভায় মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় এক শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কলাবাগানের বাসা থেকে মুরাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।