সারে ২৮ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি লাগবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সারের ভর্তুকিতে ২৮ হাজার কোটি টাকা লাগবে। এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত আরও ৯ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ও পরিবহণ ব্যয় বাড়ার ফলেই এ বিশাল অংকের ভর্তুকি লাগবে। এমনিতে আমাদের প্রতিবছর ৮-৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি লাগে।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর এফডিসিতে ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে’ ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
বিতর্কে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এতো বিশাল অংকের ভর্তুকি কোথা থেকে আসবে এ বিষয়ে সরকার দু:শ্চিন্তায় রয়েছে। এতো ভর্তুকি দিলে অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যাবে। কিন্তু কৃষকবান্ধব ও কৃষকদরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কৃষকের কল্যাণে ও কৃষির উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে এ মুহূর্তে সারের দাম বাড়াবেন না। অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি শ্লথ হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারে ভর্তুকি দিয়ে যাবেন।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমান সরকার সবার জন্য নিরাপদ খাবারের নিশ্চয়তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করছে। সেজন্য, নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণয়ন করেছে, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। এছাড়া, ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মানের অনেকগুলো ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, আরও অনেকগুলো স্থাপনের উদ্যোগ চলছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে রপ্তানি করার ক্ষেত্রেও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে হবে। নিরাপদ ফসলের উৎপাদনের প্রচেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে উত্তম কৃষি চর্চা মেনে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটি মেনে ফসল উৎপাদিত হলে খাবার যেমন নিরাপদ ও পুষ্টিকর হবে, তেমনই রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের প্যাকিং হাউস ও ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা সক্ষম হবো।
ড. রাজ্জাক বলেন, ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হলে সাধারণ মানুষের আয়ও বাড়াতে হবে। আয় বাড়াতে না পারলে, জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে ভেজাল ও অনিরাপদ খাবারের প্রকোপ আরও বাড়বে। সেজন্য, মানুষের আয় বৃদ্ধি ও গ্রামীণ কৃষিজীবী বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত করতে সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। কৃষিপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি ও উচ্চ মূল্যের অর্থকরী ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে।’
এনএইচবি/
