অস্ত্র নয় শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়তে সম্পদ ব্যবহার করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্ত্র প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সার্বজনীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সকলকে তাদের সম্পদ ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়ে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) ‘বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১’ এর সমাপনী ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুই দিনব্যাপী শান্তি সম্মেলন শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের এই চরম সংকটময় সময়ে আমি অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ ব্যয় না করে তা সার্বজনীন টেকসই উন্নয়ন অর্জনে ব্যবহার করার আহ্বান জানাই। আসুন, আমরা সার্বজনীন শান্তির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কর্মযজ্ঞে নেমে পড়ি।’
গত দু’বছর ধরে করোনাভাইরাস মহামারী পুরো বিশ্বব্যবস্থাকে এক নতুন সংকটের মুখোমুখি করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই সংকট প্রমাণ করেছে আমরা কেউই আলাদা নই। কাজেই, শান্তিপূর্ণভাবে এই পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি জবাবদিহিমূলক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির আদর্শকে পুরোপুরি ধারণ করে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমঝোতার ভিত্তিতে সকলের সঙ্গে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ সদা প্রস্তুত রয়েছে।
স্বাধীনতার জন্য জাতির সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মধ্য দিয়ে শান্তির মূল্য এবং সমগ্র মানব জাতির গভীরতম আকাঙ্ক্ষা অনুধাবন করেছি।
ফিলিস্তিনের ভ্রাতৃপ্রতীম জনগণের প্রতি সমর্থন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বরাবরের মত ফিলিস্তিনের জনগণের ন্যায্য দাবির পক্ষে আমাদের অবিচল সমর্থন রয়েছে।’
সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ১১ লাখের অধিক মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছি উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এর ফলে এই অঞ্চলে একটি বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে। নিজ মাতৃভূমিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনের জন্য তার সরকার শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জেমস গর্ডন ব্রাউনের একটি ভিডিও বার্তা অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়। সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গোহ চোক টং, ইউনেস্কোর সাবেক মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, এবং হাডসন ইনস্টিটিউট’র এর দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পরিচালক হোসেন হাক্কানি সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন।
বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১-এর আয়োজক কমিটির সভাপতি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম মূল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এর আগে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন-২০২১-এর থিম সং পরিবেশিত হয় এবং একটি অডিও-ভিডিও প্রেজেন্টেশন প্রদর্শন করা হয়।
আরইউ/এমএমএ/