জাসদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল: ফিরোজ রশীদ
বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) দায়ী করলেন সাবেক যুবলীগ নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, `হেফাজতে ইসলাম, তাদের জঙ্গি বানাইছে ইনু সাহেব। আরে জঙ্গি কারে বলে? আন্দোলন তো মানুষই করে। আন্দোলন করবে, আন্দোলন অনেক সময় সহিংসতায় চলে যায়। কিন্তু তারা জঙ্গি নয়, জঙ্গি হচ্ছে সশস্ত্র বিপ্লব যারা করে সরকারকে হঠানোর জন্য, যেটা ইনু সাহেবরা করেছিলেন। সেদিন জাসদ যদি ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত বঙ্গবন্ধুকে কেউ হত্যা করতে পারত? বঙ্গবন্ধুকে কেউ এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করার দু:সাহস পেত? সমস্ত্র ক্ষেত্র তারা প্রস্তত করেছিল। আজকে বলে আমরা কিছু জানি না।”
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এভাবেই জাসদ সভাপতিকে তুলোধুনো করেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্য। এ সময় তার পাশেই বসে ছিলেন হাসানুল হক ইনু। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পুরো বক্তব্য গভীর মনযোগ দিয়ে শোনেন।
রাশেদ খান মেননকে উদ্দেশ্য করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, যারা গণতন্ত্রের মর্ম বুঝে না, স্বাধীনতার মর্ম বুঝে না তাদের সঙ্গে আবার কিসের কথা।
তিনি বলেন, জাসদ ১৯৭৩ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এই দেশে হাজার হাজার যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ কর্মীদের হত্যা করেছে। অনেক পুলিশ ফাঁড়ি তারা দখল করেছে, পুলিশ ফাঁড়ি লুট করেছে, থানা লুট করেছে, ট্রেজারি লুট করেছে। ঈদের জামায়াতে আমাদের আওয়ামী লীগের এমপিদের তারা হত্যা করেছে দিনের বেলায়। জামায়াতে দাঁড়িয়ে ঈদের জামাতে বসা অবস্থায় হত্যা করেছে। তারা যদি এখন আরেকটি সংগঠনকে জঙ্গি বলে সেটা মানায়?
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, জাসদ যদি ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত তাহলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারত? সেদিন আমি ঢাকা যুবলীগের প্রধান ছিলাম। সেদিন হারুন মোল্লা সভাপতি ছিল। মিরপুর থানার বড় একটা মিছিল নিয়ে এলো খালেক সাহেব। সেদিন যদি জাসদ ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত? তাদের একটা পত্রিকা ছিল গণকণ্ঠ। সেই পত্রিকা পড়ে দেখেন সেদিন কি না বানাইছে আমাদের। চোর-ডাকাত সব কিছু বানাইছে তারা। স্বাধীনতার শত্রু ওই পত্রিকা তারা পড়ত। সমস্ত মানুষকে তারা ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল। এই জাসদ আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে বঙ্গবন্ধুর কথা বলে।
তিনি বলেন, এই দেশে আমরা উন্নয়ন চাই। মানুষের কল্যাণে যদি রাজনীতি করতে না পারি তাহলে ওই রাজনীতির কোনো অর্থ নেই। যতদিন পদ্মা ব্রিজ থাকবে, মেট্রোরেল থাকবে ততদিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না।
এ সময় তিনি র্যাব নিয়ে বলেন, র্যাব যদি একদিন বলে যে রাতে আমরা বের হব না, র্যাব ক্যাম্পে থাকবে, নামাজ-রোজা করবে তাহলে ওই দিন এই দেশ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। কোনো মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে। একটা সুশৃঙ্খল বাহিনী তাকে ধ্বংস করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই দেখতে হবে। এতো দিন তারা লবিস্ট নিয়োগ করল আমরা কেন পাল্টা লবিস্ট নিয়োগ করতে পারলাম না? এই ষড়যন্ত্র মানব না। এতো কষ্ট করে যে স্বাধীনতা এনেছি সেই স্বাধীনতা এইভাবে কেউ নষ্ট করবে এটা আমরা চাই না।
এসএম/এসআইএইচ