গত বছর ২ হাজার ৯৩৭টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৯৩৭টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মোট ১ হাজার ৩৫১ জন কন্যা এবং ১ হাজার ৫৮৬ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১২টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ২০২৩ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
প্রতিবেদন মতে, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরে মোট ১ হাজার ৩৫১ জন কন্যা এবং ১ হাজার ৫৮৬ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়, যার মধ্যে ৬৩৯ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুই জন ধর্ষণের শিকার হয়। এর মধ্যে ৪৩১ জন কন্যা ও ২০৮ জন নারী। এ সময় ৬৯ জন কন্যাসহ মোট ১৪০ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২৫ জন কন্যা ও আট জন নারীসহ মোট ৩৪ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। একই সময় ৯ জন কন্যাসহ মোট ১৪ জন ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ৬৮ জন কন্যাসহ ৯৮ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। গত বছর যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ১৪৯ জন এর মধ্যে ১০৩ জন কন্যা ও ৪৬ জন নারী। গত এক বছরে উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে ৯৩ জন। এর মধ্যে ৮৪ জন কন্যা ও ৬ জন নারী। এদের মধ্যে উত্ত্যক্তকরণের কারণে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে আট জন কন্যা ও এক জন নারী। এ সময় বিভিন্ন কারণে ৮৭ জন কন্যাসহ মোট ৪৯৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১৯ জন। এর মধ্যে কন্যা ছয় জন ও ১৬ জন নারী। এ সময় ৭৪ জন কন্যাসহ মোট ২৬৬ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।
একই সময় ১০২ জন কন্যাসহ ২৭৯ জন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন কন্যাসহ ৩৮ জন আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছে। এছাড়াও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তিন জন কন্যাসহ ছয় জন। গেল বছর নারী ও কন্যা পাচারের শিকার হয়েছে মোট ১৩ জন। এর মধ্যে কন্যা ১০ জন ও তিন জন নারী। এ সময় অ্যাসিড দগ্ধের ঘটনা ঘটেছে আটটি এতে কন্যা চার জন ও চার জন নারী আহত হয়। একই সময় ৩৪ জনের অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটেছে, এর মধ্যে ২০ জনের অগ্নিদগ্ধের কারণে মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে আট জন কন্যা অগ্নিদগ্ধ হয় এবং এক জন কন্যার অগ্নিদগ্ধের কারণে মৃত্যু হয়েছে। গেল বছর যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১২২ জন। এর মধ্যে ৫২ জনকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে। তার মধ্যে ছয় জন কন্যাসহ ৪৬ জন নারীকে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোট ২৩১ জন। এর মধ্যে ৮৩ জন কন্যা।
গেল এক বছরে পারিবারিক সহিংসতায় শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩২ জন। এ সময় ১৮ জন কন্যাসহ ২৫ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে আট জন গৃহকর্মীর হত্যার ঘটনা ঘটেছে এবং চার জন গৃহকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ১১৫ জন কন্যাসহ ১৩২ জন অপহরণের শিকার হয়েছে।