ক্ষুব্ধ হয়ে বদিউল সমালোচনা করছেন: নূরুল হুদা
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা এবং নাগরিক সংগঠন সুজন-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের কঠোর সমালোচনা করলেন বর্তমান সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে দুজনের সমালোচনার জবাব দেন সিইসি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ৫ সদস্যের বর্তমান নির্বাচন কমিশন বিদায় নেবে। এ উপলক্ষ্যে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি এটিএম শামসুল হুদা বর্তমান ইসির সমালোচনা করে বলেন, সদিচ্ছা থাকলে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভালো নির্বাচন করতে পারত। তাদের ‘পারফর্মেন্স সন্তোষজনক নয়’। তারা বিভিন্ন বিষয়ে ‘বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন’। এ প্রসঙ্গে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, কয়েকদিন আগে শামসুল হুদা সাহেব সবক দিলেন। তিনি বললেন, আমাদের অনেক কাজ করার কথা ছিল, করতে পারিনি, বিতর্ক সৃষ্টি করেছি। একজন সিইসি হিসেবে তার কথা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি।
২০০৭-০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে সিইসির দায়িত্ব পালন করা এটিএম শামসুল হুদা ‘বিরাজনীতির পরিবেশে সাংবিধানিক ব্যত্যয়’ ঘটিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ‘ইসির দায়িত্ব ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা। তিনি নির্বাচন করেছেন ৬৯০ দিন পরে। এ সাংবিধানিক ব্যত্যয় ঘটানোর অধিকার তাকে কে দিয়েছে? তখন গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না, সেনা সমর্থিত সরকার ছিল; ইমারজেন্সির কারণে এটা করেছে। গণতান্ত্রিক সরকারের সময়ে করা সম্ভব না।’
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিককে (সুজন) প্রার্থীদের হলফনামা প্রচারের কাজ দেওয়ার সমালোচনা করে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘বিরাজনীতির পরিবেশের মধ্যে তিনি (এটিএম শামসুল হুদা) এটা করেছেন। তিনি বদিউল আলম মজুমদারকে কীভাবে নিয়োগ দিয়েছেন? লাখ লাখ টাকা কীভাবে দিলেন? এ রকম অনেক কিছু করা যায়। ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে।’ বর্তমান ইসি সব কিছু স্বচ্ছভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে বলে দাবি করেন সিইসি।
বর্তমান ইসির সময়ে কাজ না পাওয়ায় ‘ক্ষুব্ধ হয়ে’ বদিউল এখন কমিশনের সমালোচনা করছেন বলে মন্তব্য করেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, 'দুই বছর আমার পেছনে ঘুর ঘুর করছেন। একা একা এসেছেন। খবর পেয়েছি প্রায় ১ কোটি টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ও অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ লোকের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করা যায় না, বিশ্বাস করা যায় না। উনি নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো বিশেষজ্ঞ নন। সংবাদ সম্মেলন করার বিশেষজ্ঞ উনি। আমাদের তো তার দরকার নেই।”
নির্বাচন কমিশনের মত ‘জটিল’ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে কারো ‘বাহবা পাওয়ার সুযোগ নেই’ বলে মনে করেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা। ২০১৭-২০২২ সময়ে ইসির দায়িত্ব পালনে কোনো রাজনৈতিক চাপ ছিল না বলেও তিনি দাবি করেন।
আরএফইডি সভাপতি সোমা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী জেবেল উপস্থিত ছিলেন।
এপি/এএস