অনেক দিন পর এমপিরা পানি খাইয়ে দিয়েছেন: আইনমন্ত্রী
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন নিয়ে সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে রশিকতার ছলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমাকে একটু পানি খেতে হবে।
স্পিকারের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার অনেক দিন পর এমপিরা আমাকে পানি খাইয়ে দিয়েছেন।’
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকালে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে তার তুমুল বিরোধিতা করেন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা। তাদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টার অধিক আলোচনা করেন আইনমন্ত্রী। সেখানে যুক্তি-তর্ক তুলে ধরতে গিয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, “সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সংসদ পাস কাটিয়ে এই আইন করার কথা বলেছিল। আমি বলে দিয়েছিলাম সংসদকে পাস কাটিয়ে এই আইন আমরা করব না। আমি তড়িঘড়ি করে করি নাই। আসলে আন্দোলন সৃষ্টি করার যে টুলস বা মসল্লা সেটা কিন্তু আর থাকে নাই। সেই জন্যই উঠেপড়ে লেগেছেন যে এটা তড়িঘড়ি কেন করেছি। এটা ইলেকশন কমিশন করার আইন হয় নাই এটা হয়েছে সার্চ কমিটির আইন এসব বলছেন।”
সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদের ব্যাখায় বলেন, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে আইন করতে হবে। রাষ্ট্রপতিকে এই ক্ষমতা সংবিধান দিয়েছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮ (৩) এটা সংবিধানেরই অংশ। এই অনুচ্ছেদ প্রসিড করে ১১৮ অনুচ্ছেদকে। সংসদ নেতা যিনি তিনি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হলে সংবিধান তাকে মাথায় তুলে রাখে। রাষ্ট্রপতি আমাদের দ্বারা নির্বাচিত কিন্তু আমরা জনগণ দ্বারা নির্বাচিত। সেই জন্য এই সংবিধানের মধ্যে লিখে দেওয়া হয়েছে সকল পরামর্শ তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করবেন। তার কারণ জনকল্যাণে যে ঘটনা ঘটবে তার দায়বদ্ধতা প্রধানমন্ত্রীর, এটা অন্য কারও না। জবাবদিহি করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর। তাই ৪৮ (ক) কোনভাবেই সংঘর্ষিক করে না।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করলে আইনমন্ত্রী বলেন, কথা নাই বার্তা নাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই জন্যই বলি উনারা তো তালগাছটা চান। ওনারা যতই বলুক আসল কথা তালগাছ এইটা আমার (ওনাদের)। ওনারা কিছুই মানেন না যতক্ষণ পর্যন্ত তাল গাছটা ওনাদের না হয়। কেয়ারটেকার গভমেন্ট যখন তৈরি করা হলো এই সংসদ বলে দিল এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিনবার। তারপর এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে মামলা হলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের দুইটি বিভাগই এটাকে অবৈধ ঘোষনা করল। তারপরও বলবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আদালতের রায়ও তারা মানেন না।
তিনি বলেন, বিএনপির কথা হচ্ছে যেটা কায়েদে আজম জিন্নাহ করেছিল সেটা ভালো। আর যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেটা করে দিয়েছিলেন সেটা ভালো না। ওনারা ঐক্যমত হতে বলেন। ঐক্যমত হতে হলে সত্যকে স্বীকার করতে হবে। সত্য কি? সত্য হচ্ছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্য কি? সত্য হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ওনারা (বিএনপি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছেন। সত্য হচ্ছে বিএনপি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করতে দেন নাই। সত্য হচ্ছে যারা খুনি তাদের পুনর্বাসিত করেছে বিএনপি। এই সত্য মেনে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে এলে তারপর আমরা ঐক্যমতে আসব। হ্যাঁ এটা অফার। এটা গ্রহণ করেন আমরা ঐক্যমত করব। ইনডেমনিটি আওয়ামী লীগ দেয় না, বিএনপি ইনডেমনিটি দিয়ে আমাদের বুকের রক্তক্ষরণ করিয়েছে।
এসএম/এসআইএইচ/এএস