ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তাদের জন্য কোরিয়ার মতো আইন দরকার: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ওভার ইনভয়েসিং (বেশি দাম দেখিয়ে পণ্য আমদানি) ও আন্ডার ইনভয়েসিং (বেশি দামের পণ্যকে কম দাম দেখিয়ে রপ্তানি) করে ব্যবসায়ীসহ সরকারি কর্মকর্তারা কর ফাঁকি দিয়ে বিপুল পরিমান টাকা পাচার করছেন। এই পাচার প্রতিরোধ করতে হলে কাস্টমস বিভাগের বড় ধরনের ভূমিকা পালন করতে হবে। কীভাবে টাকা পাচার কমানো যায়, সে বিষয়ে কাস্টমসকে কাজ করতে হবে। কোরিয়ার মতো বাংলাদেশকেও অর্থ পাচার বন্ধে আইন করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ব্যবসায়ীরা যাতে কোনোক্রমেই বিদেশে টাকা পাচার না করতে পারেন।’
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। এনবিআর এর উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামসহ ২০ কাস্টমস কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের সার্টিফিকেট অফ মেরিট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসায়ী বা সরকারি চাকুরিজীবীরা দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে। এখানে আপনারা (কাস্টমস) অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। ডিজিটালাইজেশন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সিস্টেম ডিজিটাল হলে কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে যায়। আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে ফাঁকির সুযোগ কমাতে হবে।’
কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তাদের তিনি বলেন, আপনাদের শপথ নিতে হবে, কোনো ভাবেই ব্যবসায়ীরা যেন বিদেশে টাকা পাচার না করতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া যে এত উন্নত হলো, কীভাবে সম্ভব হয়েছে? মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে তাদের দেশে বড় ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা ছিল। এর মাধ্যমে তারা বৈদেশিক মুদ্রাকে রক্ষা করে ভারি শিল্পের দিকে গেছে। কাজেই আমাদেরও মানি ল্ডারিংয়ের বিষয়ে কঠোর হতে হবে।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ট্যাক্স-জিডিপির অনুপাত নিয়ে অনেক কথা হয়। গত বছর একটা গবেষণা করা হয়েছে, তাতে দেখা গেছে ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত কিছুতেই ৯ শতাংশের বেশি হয় না। তারপরও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানও করছাড়ের আবেদন করে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের করছাড়ের আবেদনে আমরা বিব্রত হই। কারণ সরকারের এক খাতের টাকা আরেক খাতে যাবে। এই অভ্যাস গড়তে হবে। কর দেওয়ার কালচার বেগবান করতে হবে।
তিনি বলেন, কাস্টমস নিয়ে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে চাই। গত অর্থবছরে কাস্টমসে গ্রোথ (প্রবৃদ্ধি) ছিল ২৭ শতাংশ। এবার তা আরও বেগবান করতে চাই।’
এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের লক্ষ্য হচ্ছে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে যাওয়া। এ জন্য মাথাপিছু আয় বাড়াতে হবে ৫ হাজার ৫০০ ডলার। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে শিল্পায়নের কোনো বিকল্প নাই। আমাদের এক্সপোর্ট বাড়াতে হলে পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। এ জন্য এনবিআর ও প্রাইভেট সেক্টরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
জেডএ/এএস