অক্টোবর মাসে সড়কে মৃত্যু ৪৩৭, এক-তৃতীয়াংশ বাইক আরোহী
ছবি সংগৃহিত
অক্টোবর মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে; এর এক-তৃতীয়াংশ মোটরসাইকেল আরোহী। এসব দুর্ঘটনায় আরও ৬৮১ জন আহত হয়েছেন। নতুন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। তাদের হিসাবে রেল ও নৌপথ মিলিয়ে মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬৪টি। এতে ৫০২ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ৮৩৮ জন।
গত অক্টোবর মাসে সারা দেশে ৪২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৬৮১ জন। এ সময়ে রেলপথে ২৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত ও ১৫৫ জন আহত; নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও দুজন আহত এবং দুজন নিখোঁজ হয়েছে। সব মিলিয়ে অক্টোবরে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৪৬৪টি দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত এবং ৮৩৮ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ সেলের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল শুক্রবার সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অক্টোবর মাসে ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৪ জন নিহত ও ৭৬ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহতের ৩৩.৫৬ শতাংশ ও আহতের ১৭.৭১ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। ১৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪১ জন নিহত ও ১৩২ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে। ২৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ৮৪ জন আহত হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১২০ জন চালক, ৩৬ জন পথচারী, ২৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫২ জন শিক্ষার্থী, ৩ জন শিক্ষক, ৬৮ জন নারী, ৩০ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, একজন প্রকৌশলী এবং ১০ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এ সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত ৫৬৪টি যানবাহনের ধরন শনাক্ত করা গেছে। এর মধ্যে ২৪ দশমিক ৮২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ২১ দশমিক ৮০ শতাংশ বাস, ১৮ দশমিক ৬১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩ দশমিক ১ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ নসিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫০ দশমিক ৮১ শতাংশ গাড়িচাপার ঘটনা, ১৭ দশমিক ১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৫ দশমিক ১৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং শূন্য দশমিক ৪৬ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩৬.১৩ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২২.১৪ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং ৩০.৭৬ শতাংশ ফিডার রোডে হয়েছে। এ ছাড়াও সারা দেশে ঘটা মোট দুর্ঘটনার ৯.০৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৩৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং ০.৪৬ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে হয়েছে।