বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

৪৪ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসছে ইসি

ফাইল ছবি

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামীকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের কাছে এ-সংক্রান্ত চিঠি পৌঁছে গেছে। তবে সংলাপে অংশ নেওয়ার বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে রয়েছে নানা বিভক্তি।

সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। বর্তমান একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৯ জানুয়ারি। হিসাব অনুযায়ী, ৯০ দিনের গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা এবং আগামী জানুয়ারির শুরুতে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তপশিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাক্ষাৎ চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। তার আগেই ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ডেকেছে কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, ‘দুই ভাগে ইসির সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংলাপের জন্য দলগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কিংবা তাদের নির্ধারণ করা দুজন প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’

এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। তখন বিএনপিসহ ৯টি দল নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি। তারা বলেছিল, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইসির ডাকে সাড়া দিয়ে সংলাপে অংশগ্রহণ করবে। অন্যদিকে, এবারও নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করছে বিএনপি ও তাদের যুগপৎ আন্দোলনের মিত্ররা। সংলাপ নিয়ে বিভক্ত ইসলামী দলগুলো। এ ছাড়া কিছু রাজনৈতিক দল এখনো রয়েছে সিদ্ধান্তহীনতায়। নিবন্ধিত দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সংলাপ নিয়ে তাদের এমন অবস্থানের বিষয়টি জানা গেছে।

জানা গেছে, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইসির সংলাপে অংশগ্রহণ করবে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। তাদের দাবি, নির্বাচনের সময় নির্বাচনকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় শুধু রুটিন কাজ করবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের মূল দায়িত্ব থাকবে ইসির। তাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করার জন্য ইসির ডাকে সাড়া দিয়ে সংলাপে যাবেন তারা।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘চিঠি পেয়েছি। ইসির সংলাপে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল যাবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। তাদের ডাকে সাড়া দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ ইসির ডাকা সংলাপে অংশগ্রহণ করবেন বলে দলটির দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের মতোই সংলাপে যাবে জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ১৪ দলের শরিকরা। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণফোরাম ও বিকল্পধারা।

অন্যদিকে, বিএনপিসহ যুগপতের মিত্ররা সংলাপে যাবে না। তাদের দাবি, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এখানে ইসির কিছু করার নেই। তা ছাড়া বর্তমান ইসি সরকারের একান্ত অনুগত। সুতরাং ইসির এই সংলাপ কোনো সুফল বয়ে আনবে না। দলগুলো এখন সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নতুন ইসি গঠন ও নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনে রয়েছে। দাবি আদায় করেই নির্বাচনে অংশ নিতে চান তারা।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গনমাধ্যমকে বলেন, ‘দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ। সব নেতার নামে মামলা। মিথ্যা মামলায় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এমন অবস্থায় নেতাদের জেলে রেখে কে বসবে সংলাপে?’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। এই সিদ্ধান্তে আমরা অটল রয়েছি। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ও নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। আন্দোলনে দাবি আদায় করেই আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।’

নির্বাচন কমিশনের এই সংলাপের বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থানের কথা জানিয়েছেন বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের মিত্ররাও। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ বলেন, ‘আমরা চিঠি পেয়েছি। সরকারের মনোভাব পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ইসি সংলাপ ডাকলে কোনো সুফল বয়ে আনবে না। সুতরাং এখানে চা-নাশতা খেয়ে জনগণের পয়সা নষ্ট করে কোনো লাভ নেই।’

চিঠি পেয়েছেন জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘ইসির সংলাপে আমরা যাচ্ছি না। কারণ, যাওয়াটা অপ্রয়োজনীয়, অর্থহীন।’

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘বিএনপিকে কারাগারে রেখে, থানার মধ্যে বন্দি রেখে, মামলা দিয়ে দৌড়ের ওপর রেখে অন্য সব রাজনৈতিক দলকে ইসির সঙ্গে সংলাপের জন্য ডাকা হচ্ছে। এর মধ্যে আমাদের একটা সন্দেহ যে, এখন থেকে দুই থেকে আড়াই মাস পর যে নির্বাচন হতেও পারে, সেখানে বিএনপিকে বাদ দিয়ে সব দলকে নিয়ে নির্বাচন করার একটা ছায়া আমরা দেখছি। বিএনপির কার্যালয়ই তো এখন তালাবদ্ধ। ইসির সংলাপের আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করবে কে? তিনি বলেন, দেশের প্রধানতম বিরোধী দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে এই সংলাপে গিয়ে তো লাভ নেই।’

জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘চিঠি পেয়েছি। তবে আমরা সংলাপে যাব না। ইসি আমাদের কোনো এজেন্ডা না। আমাদের এজেন্ডা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার। সুতরাং এদের সঙ্গে আলোচনা করে কোনো লাভ নেই। নির্দলীয় সরকার ছাড়া ইসির পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

কোনো জোটে না থাকলেও সংলাপে অংশগ্রহণ করবে বেশ কয়েকটি নিবন্ধিত দল। তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে চিঠি পেয়েছি, সংলাপেও যাব। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসি কী প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা আমরা দেখব।’

এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ ছালাউদ্দিন ছালু বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে চিঠি পেয়েছি, সংলাপেও যাব। নির্বাচন হলে সেখানেও অংশগ্রহণ করব।’

বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে চিঠি পেয়েছি, সংলাপে যাব। আগামীতে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য বলব।’

নতুন নিবন্ধিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) সংলাপে যাবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

অন্যদিকে, যুগপৎ আন্দোলন কিংবা কোনো জোটে না থাকলেও স্বতন্ত্র অবস্থানে থেকে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বামপন্থি দলগুলো সংলাপে অংশ নিচ্ছে না। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা চিঠি পেয়েছি। কিন্তু সংলাপে যাব না।’

এদিকে সংলাপের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। গনমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘চিঠি পেয়েছি। সংলাপে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শুক্রবার (আজ) চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

জাপার মতো এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি এনডিএম ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)। সংলাপের চিঠি পেয়েছেন জানিয়ে বিএমএলের চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, ‘এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে ইসির সংলাপে যাওয়ার সম্ভাবনা কম।’

এদিকে সংলাপ নিয়ে বিভক্ত ইসলামী দলগুলো। ইসির সংলাপে যাওয়ার পক্ষে ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, জাকের পার্টি ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। তবে ইসির সংলাপে যাবে না চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। আর চিঠি পেয়ে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।

বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের অনেকে। তবে সেখানে কোনো দল অংশ না নিলে ইসির কিছু করার নেই বলে অভিমত তাদের।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ গনমাধ্যমকে বলেন, ‘যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে যা যা করা দরকার, নির্বাচন কমিশন তা-ই করবে। এর অংশ হিসেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। এখানে কে এলো আর কে এলো না—সেজন্য তো ইসি সংলাপ বন্ধ করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো দল না আসে, তাহলে ইসির কিছু করার নেই। বিএনপিকে ছাড়া তো আগে নির্বাচন হয়েছে এবং সে নির্বাচনের বৈধতাও ছিল। গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে হয়তো কথা উঠবে, এটা উঠতেই পারে। সব দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।’

নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নিতে বিএনপিকে চিঠি দিতে গিয়েছিলেন মো. মহসিন নামের ইসির একজন বার্তাবাহক; কিন্তু নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ থাকায় কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দলটির কারও হাতে চিঠি দিতে পারেননি তিনি। শেষে তালাবদ্ধ ওই কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ভেতরে থাকা একটি চেয়ারের ওপর চিঠিটি রেখে এসেছেন তিনি। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল বিকেল ৪টার দিকে নির্বাচন কমিশনের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম বলেন, ‘যতটা জানি, উনি (মহসিন) তালার সঙ্গে (বিএনপি কার্যালয়ে লাগানো তালা) চিঠিটা ঝুলিয়ে রেখেছেন। তবে নিশ্চিত করতে পারছি না।’

পরে নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, তালাবদ্ধ কলাপসিবল গেটের ভেতরে রাখা একটি চেয়ারের ওপর সাদা রঙের খামটি রাখা আছে।

সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের ওই বার্তাবাহক চিঠি নিয়ে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চিঠিটি চেয়ারের ওপর রেখে চলে যান।

গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশ সদস্য ও বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের এক নেতা নিহত হন। ওই সংঘর্ষের কারণে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। ওই ঘটনার পর থেকেই কার্যত পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে বিএনপি কার্যালয়। অবশ্য ওই দিনের পর থেকে বিএনপির কোনো পর্যায়ের নেতাই নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেননি।

Header Ad
Header Ad

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পক্ষে নেই বিএনপি: মাহমুদুর রহমান মান্না

মাহমুদুর রহমান মান্না। ছবি: সংগৃহীত

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘আমরা শুধু ক্ষমতার জন্য লড়াই করছি না, দেশের সামগ্রিকভাবে একটি পরিবর্তন চাই। সেই পরিবর্তনের জন্যই আমরা সংস্কার চেয়ে আসছি। ড. ইউনূস সরকারকে অন্তত কেউ তুলতে পারছে না। যে বিএনপি এক সময় আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে, এখন তারা বলছে এ দলকে নিষিদ্ধের পক্ষে না। পরিবর্তনের জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করতে হয়।’

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কে. আলী ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ: যেভাবে বাংলাদেশ আগাচ্ছে এবং নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি যখন ভঙ্গুর অবস্থা। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো সহায়তা দিতে সাহস পাচ্ছে না তখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহায়তা চলে আসছে।’

তিনি বলেন, কেউ বলছে আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন, কেউ বলছে আগে নির্বাচন। সংস্কার শেষ করে ভোট এ কথার ভিত্তি নেই। ভোট হবে সংস্কারও হবে। ভোটও একটি সংস্কার। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে তাদের (সরকারকে) মিনিমাম কিছু সংস্কার করতে হবে। পুলিশ বাহিনীতে সংস্কার জরুরি রলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘অনেকে ধরেই নিয়েছে এ সরকারের সময় সব কিছু করা যাবে। সব দাবি নিয়ে আসছে। তারা তো সবকিছু করতে পারবে না। সক্ষমতা বিবেচনা করতে হবে। দেশ একটা স্বৈরাচারের অধীনে ছিল, সেখান থেকে গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন চলছে। আওয়ামী লীগের আবার ফিরে আসা সম্ভাবনা খুবই কম। তারা যা করেছে, তিনি ( সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিজেই বলেছিলেন তার পিয়নও ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি কোনো কিছুরই বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। সুতরাং জুলাই অভ্যুত্থানকে বিপ্লব বলা যায় না। এখন অনেকে বলছে, এখানে কিছু ভুল ছিল। কেউ বলছে একটা বিপ্লবী সরকার গঠনের উচিত ছিল। এতে সন্দেহ নেই যে, মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটা কঠিন লড়াই করেছে, সেখানে বিপ্লবী চেতনা ছিল বলেই সম্ভব হয়েছিল।’

Header Ad
Header Ad

সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমবার সংসদে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, নিলেন শপথ

হাতে সংবিধানের একটি সংস্করণ নিয়ে শপথ নেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সবচেয়ে পুরোনো রাজনৈতিক দল কংগ্রেসে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের ঐতিহ্য প্রায় ১০০ বছরের। সেই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে অবশেষে পার্লামেন্টে প্রবেশ করলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্ট লোকসভার এমপি হিসেবে শপথ নিয়েছেন কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কেরালার ওয়ানাড় আসনের উপনির্বাচনে জয়ের সুবাদে জীবনে প্রথমবারের মতো আইনপ্রণেতা হলেন তিনি।

এদিন ভাই রাহুল গান্ধীর মতো হাতে সংবিধানের একটি সংস্করণ নিয়ে শপথ নিতে দেখা যায় ৫২ বছর বয়সি প্রিয়াঙ্কাকে। প্রিয়াঙ্কার শপথের মধ্যদিয়ে গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য সংসদের সদস্য হলেন।

স্পিকার ওম বিড়লা এবং অন্যান্য সাংসদদের উপস্থিতিতে লোকসভায় শপথবাক্য পাঠ করেন প্রিয়াঙ্কা। এমনকি, এই বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে লোকসভার গ্যালারিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্ট ভডরা।

চলতি বছরের শুরুর দিকে হওয়া লোকসভা নির্বাচনে রাহুল প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর ভাই গান্ধি দুটি আসনে লড়াই করে দুটিতেই জয় পান। তার একটি ওয়েনাড়। অপরটি উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি। তবে ওয়েনাড় আসনটি ছেড়ে দেন তিনি। এরপর এখানে উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়।

ওয়েনাড় উপনির্বাচনে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, সিপিআইয়ের সত্যান মোকেরি ও বিজেপির নভ্যা হরিদাস প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দ্বী।

রাজনীতিতে প্রিয়াঙ্কার অভিষেক ঘটেছিল অনেক আগেই। বহু নির্বাচনী প্রচারে তাকে দেখা গেছে। তবে আগে কখনও নির্বাচনে লড়েননি তিনি। গত ১৩ নভেম্বর একাধিক রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিধানসভার পাশাপাশি লোকসভার ওয়েনাড় আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, ১০ দিন পর শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ৮টায় ভোট গণনা শুরু হয়। দুপুরের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়, বড় ব্যবধানে জয় পেতে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা।

ডেকান হেরাল্ডের এক প্রতিবেদন মতে, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়েনাড় উপনির্বাচনে ৪ লাখ ১০ হাজার ৯৩১ ভোটের ব্যবধানে বিশাল জয় অর্জন করেছেন। গত সাধারণ নির্বাচনের তুলনায় ভোটার উপস্থিতি ৯ শতাংশ কম হওয়া সত্ত্বেও প্রিয়াঙ্কার ভোটের হার ৬৫ শতাংশ।

Header Ad
Header Ad

ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে ১৮৮ মিসাইল-ড্রোন ছুড়ল রাশিয়া

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোগুলোতে লক্ষ লক্ষ্য করে ১৮৮টি মিসাইল ও ড্রোন আক্রমণ চালায় রুশ বাহিনী, এতে দেশটির প্রায় ১০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও অন্তত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় ইউক্রেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালায় রুশ বাহিনী বলে জানায় ইউক্রেন।

ইউক্রেন জানিয়েছে, নতুন এ হামলায় রাশিয়া ১৮৮টি মিসাইল ও ড্রোন ব্যবহার করেছে। এরমধ্যে তারা ৭৬টি কালিবার ক্রুজ মিসাইল, তিনটি কেএইচ-৫৯/কেএইচ-৬৯ মিসাইল এবং ৩৫টি ড্রোন ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া রাজধানী কিয়েভকে লক্ষ্য করে যেসব মিসাইল ছোড়া হয়েছে তার সবগুলোই ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি।

ইউক্রেনীয় জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার পর বিদ্যুৎ অবকাঠামোগুলো ঠিক করতে প্রকৌশলীরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন। হামলায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হলো এখন তারা সেটি নিরূপণের চেষ্টা করছেন।

কিয়েভের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হামলার বিকট শব্দ শুনে সকালে তাদের ঘুম ভাঙে। কিয়েভ থেকে বিবিসির সাংবাদিক জাহান্না বেজপিয়াতচুক জানিয়েছেন, তিনিও মিসাইলের শব্দ শুনে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। হামলার পর কিয়েভে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে যেহেতু সেখানকার প্রায় সব বাড়িতে এখন জেনারেটর আছে। তাই তারা আপাতত রান্নাবান্না ও নিজেদের উষ্ণ রাখার কাজটি করতে পারবেন।

ইউক্রেন জানিয়েছে, শুধুমাত্র এ বছর তাদের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে রাশিয়া ১১ বার হামলা চালিয়েছে।

যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। তাদের ধারণা বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে ইউক্রেন শক্ত অবস্থান থেকে সরে আসবে এবং রাশিয়াকে লক্ষ্য করে হামলা চালাতে ভয় পাবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পক্ষে নেই বিএনপি: মাহমুদুর রহমান মান্না
সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমবার সংসদে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, নিলেন শপথ
ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে ১৮৮ মিসাইল-ড্রোন ছুড়ল রাশিয়া
৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ক্যাডার পদ ৩ হাজার ৪৮৭
রাষ্ট্র সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ইসকন নিষিদ্ধের বিষয়টি দেখছে
৯ দফা দাবিতে সচিবালয়ে মহাসমাবেশের ডাক
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দায় নিতে অস্বীকার ইসকনের
ঝাঁটাপেটা খেয়ে পালিয়ে দেশ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে: সোহেল তাজ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে
বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ
রাজধানীতে হাসনাতকে আবারও ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা
থমকে গেছে অর্থ পাচারের অনুসন্ধান, তদন্তে এস আলমের প্রভাব
ভারতে পালানোর সময় চট্টগ্রামের পুরোহিত আশীষ আটক
নাটকীয় হারে গ্লোবাল সুপার লিগ শুরু রংপুরের
বাংলাদেশের নেতৃত্বকে বিভক্তি এড়িয়ে ঐকমত্যে কাজ করার আহ্বান মাহাথিরের
ট্রাম্পের ক্যাবিনেট সদস্যদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করবে সরকার
গাজায় একদিনে আরও ৩৩ জন নিহত
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি জেলেকে গুলি করল মিয়ানমার নৌবাহিনী
সম্পত্তির জন্য বাবাকে তালাবদ্ধ করে রাখলো মেয়েরা